প্রতীকী ছবি।
সবে দাপট কিছুটা কমতে শুরু করেছিল। এমনটাই ছিল প্রশাসনের দাবি। কিন্তু কয়েক দিনের বৃষ্টিতে ফের কিছু এলাকা থেকে জ্বর-সংক্রমণের খবর আসছে বিধাননগর পুরসভায়।
এর মধ্যে জ্যাংড়া-হাতিয়াড়া রোড এলাকায় নতুন করে মেডিক্যাল ক্যাম্প চালু করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে পুর প্রশাসন। ইতিমধ্যেই ৪১টি ওয়ার্ড মিলিয়ে প্রায় ৬টি মেডিক্যাল ক্যাম্প করেছে তারা। পুরসভার একটি সূত্রের খবর, এখনও পর্যন্ত কম-বেশি ৫০০ জন ডেঙ্গিতে আক্রান্ত। তার মধ্যে ৮ জনের মৃত্যু হয়েছে। পুরকর্তারা বলছেন, যে ভাবে জ্বরের সংক্রমণ ছড়াচ্ছিল, তা ক্রমশ কমছে। একই দাবি দক্ষিণ দমদমের পুরকর্তাদেরও
যদিও পুর প্রশাসনেরই একাংশের বক্তব্য, এই সময়ে অন্য কারণেও জ্বর হয়। এখনও ডেঙ্গিতে আক্রান্তের সংখ্যা ৮০০। মৃত চার। বাসিন্দারা অবশ্য পুরসভার তথ্য মানতে নারাজ। তাঁদের দাবি, কমপক্ষে ১৭ জন মারা গিয়েছেন দক্ষিণ দমদম পুর এলাকায়। অক্টোবর থেকে বিধাননগর বা দক্ষিণ দমদমে জ্বরের দাপট বাড়ছে।
বাসিন্দাদের অভিযোগ, প্রশাসন মরিয়া হয়ে মশাবাহিত রোগের প্রকোপ কমেছে বলে দাবি করছে। কিন্তু সরকারি-বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তির সংখ্যা এবং রক্ত পরীক্ষাগারে ভিড় তার উল্টো কথা বলছে।
চলতি বছরের জুন-জুলাই থেকেই ডেঙ্গির প্রকোপ দেখা গিয়েছিল বিধাননগর ও দক্ষিণ দমদমে। দু’টি পুরসভার কর্তৃপক্ষেরই একাংশ বলছেন, শুধু নির্দিষ্ট কিছু মাস নয়। বছরভর মশা নিয়ন্ত্রণ, বিশেষত সচেতনতার কাজে আরও জোর দিতে হবে। ইতিমধ্যেই বিধাননগর পুরসভা জানিয়েছে, পুজোর মরসুম শেষ হলেই বাসিন্দা থেকে শুরু করে স্থানীয় ক্লাব এবং স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনগুলিকে নিয়ে পথে নামা হবে।
কিন্তু কিছু ক্ষেত্রে পুরসভার উদ্বেগ রয়েছে। প্রথমত, পর্যাপ্ত পরিকাঠামো থাকা এলাকাতেও মশাবাহিত রোগের প্রকোপ বেশি। সেখানে বছরভর জনমত গঠনের ক্ষেত্রে উদ্যোগের অভাব। দ্বিতীয়ত, কলকাতা পুরসভার ধাঁচে মশা নিয়ন্ত্রণের পরিকাঠামো তৈরি নেই দুই পুরসভার কোথাওই। আপৎকালীন হিসেবে এক জন পতঙ্গবিদ দিয়েই কাজ চালাতে হয়েছে।
পাশাপাশি পুর এলাকার বহু জায়গায় নির্মীয়মাণ বাড়ি, পরিত্যক্ত বাড়ি, ফাঁকা জমি, গুদাম রয়েছে। একই ভাবে ভেড়ি বা জলাশয় সমৃদ্ধ এলাকায় নিকাশি পরিকাঠামো ততটা আধুনিক হয়নি। ওই সব এলাকায় জল জমে থাকছে। বাড়ছে মশাবাহিত রোগের প্রকোপ।
ফলে শুধু মশা নিয়ন্ত্রণের পরিকাঠামোই নয়, একই সঙ্গে নিকাশি এবং জঞ্জাল অপসারণের পরিকাঠামো সংস্কার নিয়েও চিন্তা-ভাবনা করছে দুই পুরসভা।
দক্ষিণ দমদম পুরসভার চেয়ারম্যান জানান, আগামী দু’বছরের মধ্যে ভ্যাটমুক্ত শহর তৈরি, খোলা নর্দমা ঢাকা দেওয়া এবং পাকা রাস্তা তৈরির ক্ষেত্রে বাড়তি গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে। বিধাননগর পুরসভার মেয়র পারিষদ (স্বাস্থ্য) প্রণয় রায়ও জানিয়েছেন, মশা নিয়ন্ত্রণের পরিকাঠামোর আমূল সংস্কারে গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে। একই সঙ্গে পিছিয়ে পড়া এলাকার পরিকাঠামো সংস্কারেরও চিন্তাভাবনা চলছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy