Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪

ক্যান্টিন কাজিয়ায় প্রেসিডেন্সি ইউনিয়নের ঘরে তালা

বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে ছাত্র সংসদের ঘরে তালা দিয়ে দেওয়ার অভিযোগ উঠল।

ফাইল চিত্র।

ফাইল চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
শেষ আপডেট: ১১ অক্টোবর ২০১৭ ০১:২৬
Share: Save:

প্রেসিডেন্সি বিশ্ববিদ্যালয়ে পুরনো ক্যান্টিন সরানো নিয়ে কর্তৃপক্ষ এবং পড়ুয়াদের বিবাদ নয়া মোড় নিল।

বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে ছাত্র সংসদের ঘরে তালা দিয়ে দেওয়ার অভিযোগ উঠল। পড়ুয়াদের অভিযোগ, মঙ্গলবার তাঁরা কর্তৃপক্ষের কাছে তালা খুলে দেওয়ার অনুরোধ করলেও তা খুলে দেওয়া হয়নি। তাঁদের আর্জি মঞ্জুর না হওয়ায় পড়ুয়ারা নিজেরাই ওই ঘরের তালা ভেঙে ভিতরে ঢুকেছেন।

পড়ুয়াদের অভিযোগ, পুজোর ছুটি পড়ার আগে পুরনো ক্যান্টিন অর্থাৎ প্রমোদদার ক্যান্টিনে তাঁরা তালা দিয়ে দিয়েছিলেন বলেই
কর্তৃপক্ষ এই কাজ করেছেন। এ দিন ইতিহাসের স্নাতকোত্তরের প্রথম বর্ষের ছাত্র শুভজিৎ সরকার জানান, সোমবার ক্যাম্পাসে এসেও তাঁরা দেখেছিলেন সংসদের ঘরে দেওয়া রয়েছে। তাঁরা মনে করেছিলেন, বৃষ্টিতে অনেক পড়ুয়া না আসাতেই কর্তৃপক্ষ সেখানে তালা দিয়েছেন। কিন্তু মঙ্গলবারও ঘরটি একই ভাবে তালা বন্ধ দেখে পড়ুয়ারা ডিন অব
স্টুডেন্টস অরুণ মাইতির কাছে যান। অভিযোগ, তখন অরুণবাবু জানান, পুজোর আগে ছাত্র সংসদের ঘরে এক জন পড়ুয়াকে আপত্তিকর অবস্থায় পাওয়া গিয়েছিল। তাই ২৩ সেপ্টেম্বর থেকে সংসদের ঘর বন্ধ করে
দেওয়া হয়েছে।

পড়ুয়াদের দাবি, অরুণবাবু তাঁদের জানান, ঘরটি বিশ্ববিদ্যালয়ের সম্পত্তি। তাই কর্তৃপক্ষ সেখানে তালা লাগাতেই পারেন। শুভজিৎ জানান, বহু বার বলার পরেও কর্তৃপক্ষ তালা খুলতে রাজি না হওয়ায় তাঁরা নিজেরাই তালা ভেঙে ভিতরে ঢোকেন। এ বিষয়ে উপাচার্য এবং রেজিস্ট্রারকে ফোন করলেও তাঁরা ধরেননি। ডিন অব স্টুডেন্টস জানান, তিনি বৈঠকে ব্যস্ত।

সম্প্রতি প্রেসিডেন্সি কর্তৃপক্ষ প্রমোদ সোয়াইনের ক্যান্টিনের জায়গায় নতুন ক্যান্টিন তৈরির জন্য টেন্ডারের ডাক দিয়েছিলেন। তা নিয়ে তীব্র আপত্তি জানিয়েছিলেন বর্তমান পড়ুয়া ও প্রাক্তনী— সকলেই। তাঁদের বক্তব্য ছিল, টেন্ডারের শর্ত প্রমোদদার পক্ষে পূরণ করা সম্ভব
নয়। একই সঙ্গে তাঁদের দাবি, প্রেসিডেন্সির ঐতিহ্যের সঙ্গে জড়িয়ে রয়েছে প্রমোদদার ক্যান্টিন। এই ক্যান্টিন বন্ধ করে দেওয়ার অর্থ প্রেসিডেন্সির সংস্কৃতি এবং ঐতিহ্যে আঘাত করা। ৪৭ বছর ধরে এই ক্যান্টিনই ছিল আদতে ওড়িশার বাসিন্দা প্রমোদ সোয়াইনের
ঘর-বাড়ি।

তবে এ সব যুক্তি মানতে চাননি প্রেসিডেন্সি কর্তৃপক্ষ। ২২ সেপ্টেম্বর প্রমোদবাবুকে জিনিসপত্র-সহ চলে যেতে বলেন বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। প্রমোদবাবু তখন জানান, কর্তৃপক্ষের সিদ্ধান্ত মেনে তিনি চলে যাচ্ছেন। পুজোর ছুটির পরে, ৯ অক্টোবর বিশ্ববিদ্যালয়ে ফিরে এসে জিনিসপত্র সরিয়ে নিয়ে যাবেন।

বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের সিদ্ধান্ত শোনার পরে সে দিনই পড়ুয়ারা ডিন অব স্টুডেন্টস-এর ঘরের সামনে অবস্থানে বসে যান। পরে অবস্থান তুলে নিলেও ছাত্র সংসদের সাধারণ সম্পাদক অরিন্দম ডলই জানান, প্রমোদদা বেরিয়ে গেলে তাঁরা রাতে ক্যান্টিনে তালা দিয়ে দেবেন।

পড়ুয়াদের অভিযোগ, এই ঘটনার জেরেই কর্তৃপক্ষ ছুটির পরে ছাত্র সংসদের ঘরে তালা দিয়েছেন।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE