ঐতিহ্য: পুরনো বাড়ি, টানা রিকশা আর আড্ডা। ছবি: দেবস্মিতা ভট্টাচার্য
বাগবাজার অঞ্চলের বর্ধিষ্ণু পাড়া গোপীমোহন দত্ত লেন। এক দিকে বিটি রোড। অন্য দিকে, বাগবাজার স্ট্রিট। ছোটবেলায় এ পাড়ার দিনগুলি কাটিয়েছি খেলাধুলো আর আনন্দে।
এই পাড়াতেই প্রথম সব কিছু। পাড়ার চেহারা কিছুটা বদলালেও, অনেকটাই অপরিবর্তিত। পাড়ার মুখেই রয়েছে সাবেক লোহার কল। এ পাড়ায় আজও বেশির ভাগ পড়শিই পুরনো। আশপাশের বাড়ি থেকে এখনও আসে মোচার ঘণ্ট কিংবা পাঁচমেশালি চচ্চড়ি। পুরনো বাড়িগুলির পাশেই মাথা তুলেছে দু’-একটি বহুতল। তবে সেখানেও এলাকার পুরনো বাসিন্দারাই বেশি বসবাস।
এখন আগের চেয়ে উন্নত হয়েছে নাগরিক পরিষেবা। পাড়াটা পরিচ্ছন্ন আর আলোও পর্যাপ্ত।
আড্ডাটা আজও আছে। চায়ের দোকানে কিংবা বাঁধানো জায়গায় আড্ডা দেন অনেকেই। রাজনীতি, সিনেমা, ঘটি-বাঙালের খুনসুটি আড্ডার মেজাজটা এখনও ধরে রেখেছে। প্রবীণদের আড্ডা বসে বিকেল থেকে সন্ধ্যা।
কমেছে খেলাধুলোর অভ্যাস। ছুটির দিনে বিকেলে বিক্ষিপ্ত ভাবে আশপাশের গলিতে ছোটদের খেলতে দেখা যায়। এক সময়ে ক্রিকেট, হকি, ক্যারম খেলার চল থাকলেও এখন খুব একটা চোখে পড়ে না। ছোটবেলায় পাড়ায় খেলতে গিয়ে কারও বাড়ি বল পড়লে সে কী রে রে কাণ্ড!
পাড়ার দুর্গাপুজোয় মিশে রয়েছে আটপৌরে মধ্যবিত্ত মেজাজ। পুরনো প্রতিবেশীরাও ফিরে আসেন পুজোর দিনগুলিতে। এ পাড়ার কালীপুজো একে বারেই ঘরোয়া। রবিবারের গ্যালিফ স্ট্রিট যেন এক উৎসব। রকমারি ফুলের গাছ, পাখি, রঙিন মাছ— কত কী!
এলাকার যোগাযোগ ব্যবস্থাও ভাল। কয়েক মিনিট হাঁটলেই শ্যামবাজার পাঁচ মাথার মোড়, মেট্রো বা লঞ্চঘাট। কয়েকটা দিন যখন বাইরে থাকি, কেন জানি না পাড়ার কথা বারবার মনে পড়ে। মনটা খারাপ হয়ে যায়। হয়তো একেই বলে টান। হাজার হোক পাড়ার টান তো!
লেখক চিকিৎসক
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy