প্রতীকী ছবি।
ক্লাস চলার সময়ে শিক্ষক-শিক্ষিকাদের মোবাইল ব্যবহার সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ করেছে বর্ধমান জেলার প্রাথমিক শিক্ষা সংসদ। এ বার সেই পথে এগোতে উদ্যোগী হচ্ছে কলকাতাও।
ক্লাস চলার সময়ে মোবাইল ব্যবহার উচিত কি না তা নিয়ে বিতর্কে রয়েছে। শিক্ষকদের মৌখিক ভাবে সতর্ক করলেও পুরোপুরি মোবাইল ব্যবহার নিষিদ্ধ করতে পারেননি কলকাতার শিক্ষা দফতরের কর্তারা। স্কুলশিক্ষা দফতর সূত্রের খবর, সম্প্রতি বর্ধমান প্রাথমিক শিক্ষা সংসদের এক বিজ্ঞপ্তি পুরনো জল্পনা উস্কে দিয়েছে। ওই বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে, সমস্ত প্রাথমিক স্কুলের ক্লাসে মোবাইল ব্যবহার নিষিদ্ধ করা হল। কলকাতার স্কুলেও এই নিয়ম চালু করা যায় কিনা, তা নিয়ে স্কুলশিক্ষা দফতরের কর্তাদের সঙ্গে আলোচনা করে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে বলে জানান কলকাতার শিক্ষাভবনের এক কর্তা।
বর্তমানে দৈনন্দিন জীবনে মোবাইলের ভূমিকা অপরিসীম। শুধুই ফোন নয়, নানা ধরনের অ্যাপস-এর ব্যবহারে ক্রমশ জড়িয়ে পড়েছেন বেশির ভাগ মানুষ। নানা সোশ্যাল মিডিয়ায় ব্যস্ত থাকেন অনেকেই। আর ঠিক এই প্রবণতা নিয়েই আপত্তি শিক্ষা দফতরের কর্তাদের। তাঁরা জানান, শ্রেণিকক্ষের ভিতরে শিক্ষক-শিক্ষিকারা মোবাইল ব্যবহার করলে তাঁরা অন্যমনস্ক হয়ে পড়ছেন। তাই ক্লাসে মোবাইল ব্যবহার নিষিদ্ধ হওয়াই প্রয়োজন।
কলকাতার শিক্ষা ভবনের এক কর্তা জানান, শহরে মোট দু’হাজারের মতো প্রাথমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক স্কুল রয়েছে। ক্লাস চলাকালীন সময়ে ওই সব স্কুলে পড়ুয়াদের মোবাইল ব্যবহার নিষিদ্ধ হয়েছে। কিন্তু বারবার বলার পরেও শিক্ষকদের এই প্রবণতা থেকে বিরত করা যায়নি। তাই এ বার শক্ত হাতে হাল ধরতে চাইছেন কর্তারা।
তিনি জানান, শহরের এসআই-রা (স্কুলপরিদর্শক) বিভিন্ন স্কুলে গিয়ে দেখেছেন পড়ুয়াদের লিখতে দিয়ে মোবাইল ঘেঁটে চলেছেন শিক্ষক-শিক্ষিকারা। কখনও হাসি মুখে, কখনও খানিক রেগে গিয়ে মোবাইল চ্যাটে উত্তর দিচ্ছেন অনবরত। এ দিকে পড়ুয়ারা নিজের খেয়ালে রয়েছে। তিনি জানান, সমস্ত শিক্ষকরা যে এরকম করছেন তা নয়। তবে বহু স্কুলে এই দৃশ্য দেখা গিয়েছে। সম্প্রতি শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় শহরের পড়ুয়াদের মাত্রাতিরিক্ত সোশ্যাল মিডিয়া ব্যবহার নিয়েও অসন্তোষ প্রকাশ করেছিলেন। সেখানে খোদ শিক্ষকদের এই হাল হওয়ায় দফতরের কর্তাদের কপালে ভাঁজ পড়েছে।
শিক্ষকদের একাংশ এই উদ্যোগের বিরোধিতা করেছেন। তাঁদের মতে, পড়ানোর সময়ে মোবাইলে ইন্টারনেট ব্যবহার করে অনেক তথ্য পাওয়া যায়। তা ছাড়া মোবাইল বন্ধ থাকলে প্রয়োজনে কেউ যোগাযোগও করতে পারবেন না। ফলে অসুবিধা হবে।
বঙ্গীয় শিক্ষক ও শিক্ষকর্মী সমিতির নেতা স্বপন মণ্ডল বলেন, ‘‘ক্লাসে মোবাইল ব্যবহার না করাই উচিত। তবে তার জন্য বিজ্ঞপ্তি দেওয়ার প্রয়োজন আছে বলে মনে করি না।’’ নিখিলবঙ্গ শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক কৃষ্ণপ্রসন্ন ভট্টাচার্য বলেন, ‘‘শিক্ষকদের মধ্যে ব্যতিক্রম থাকতেই পারে। তবে অধিকাংশ শিক্ষকই ক্লাসে মোবাইল ব্যবহার করেন না। তাই আগবাড়িয়ে নিষিদ্ধ করতে হলে মনে হতে পারে শিক্ষকদের পড়ানোতে খামতি রয়ে গিয়েছে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy