এখান থেকেই উধাও হচ্ছে বিমানের জিনিসপত্র। শুক্রবার, কলকাতা বিমানবন্দরে। —নিজস্ব চিত্র
বন্ধ হয়ে যাওয়া বিমান সংস্থার জিনিস কলকাতা বিমানবন্দর থেকে উধাও হয়ে যাচ্ছে। এমনই অভিযোগ পেয়ে ঘুম ছুটেছে কর্তৃপক্ষের।
গত মাসের শেষে সেই চুরির অভিযোগ পেয়ে বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষের ভিজিল্যান্স দফতরের কর্তারা দিল্লি থেকে কলকাতা ঘুরে গিয়েছেন। কিন্তু সত্যি চুরি হয়েছে কি না, তা নিয়েই ধন্দে কর্তৃপক্ষ।
কলকাতা বিমানবন্দরের দ্বিতীয় রানওয়ে রাজারহাটের (দক্ষিণ) দিকে পুরনো হ্যাঙারের (যে বিশাল ছাউনির ভিতরে বিমান রেখে রক্ষণাবেক্ষণ করা হয়) পিছনে কিংফিশারের বেশ কিছু সরঞ্জাম পাওয়া গিয়েছে। কলকাতা বিমানবন্দর সূত্রের খবর, সরঞ্জাম বলতে দু’টি যাত্রিবাহী বাস, জিপ এবং তিনটি পুশ-ব্যাক ট্র্যাক্টর ও টো-বার (বিমানকে পিছনে নিয়ে যায়)। ভিজিল্যান্সের কর্তারা সে সবের তালিকা বানিয়ে ফিরে গিয়েছেন। জানা গিয়েছে, কেউ বা কারা আরটিআই (তথ্য জানার অধিকার) করে কর্তৃপক্ষের কাছে কলকাতা বিমানবন্দরে ওই বিমান সংস্থার কত সরঞ্জাম রয়েছে তার হিসেব চেয়েছিলেন। তখনই অভিযোগ ওঠে, ওই বিমান সংস্থার ফেলে যাওয়া বহু সরঞ্জাম এখন নেই।
২০১২ সালের শেষে বন্ধ হয়ে যায় ঋণে জর্জরিত বিমান সংস্থাটি। দেশ ছেড়ে পালান সংস্থার মালিক। কলকাতা বিমানবন্দর সূত্রের খবর, কলকাতায় সংস্থার যে কর্মীরা ছিলেন, তাঁরা অনেক আগে থেকেই বেতন পাচ্ছিলেন না। বন্ধ হওয়ার পরে আরও কিছু দিন অপেক্ষা করে তাঁরা অন্য বিমান সংস্থায় চাকরি নিয়ে চলে যান। অভিযোগ, তখনই যাত্রিবাহী বাস-সহ কিছু সরঞ্জাম রং বদলে অন্য বিমান সংস্থাকে কম দামে বিক্রি করে দেওয়া হয়। ফলে বিমানবন্দরের ভিতরে থাকা সরঞ্জাম, সেখানেই থেকে যায়। শুধু রং বদলে তা অন্য সংস্থা ব্যবহার করতে শুরু করে।
বিমানবন্দরের এক কর্তার কথায়, ‘‘শুধু ওই বিমান সংস্থাই নয়, এমন অনেক সংস্থা নিয়মিত বিমান চালাতে না পেরে পরিষেবা গুটিয়ে কলকাতা ছেড়ে চলে গিয়েছে। তাদের সরঞ্জাম পড়ে রয়েছে দীর্ঘদিন। পড়ে থাকা সরঞ্জামের তালিকায় বিমানও রয়েছে।’’ এমনই একটি বিমান গত ২০ বছর ধরে পড়ে রয়েছে রানওয়ের পূর্ব দিকে, প্রধান রানওয়ে থেকে প্রায় কিছু দূরে। জানা গিয়েছে, বাম জমানায় কোনও এক সময়ে বেঙ্গল এয়ার নামে একটি সংস্থা তৈরি হয়ে বন্ধ হয়ে যায়। সেই সংস্থা যাত্রী পরিষেবা দেবে বলে ছোট ডাকোটা বিমান নিয়ে এলেও, তা বার দুয়েক উড়ে বসে যায়।
কুড়ি বছর ধরে মাটিতে আটকে থাকা ওই বিমানের পাশেই রয়েছে এনইপিসি নামে বন্ধ হয়ে যাওয়া এক বিমান সংস্থার ন’আসনের বিমান। সেটিও পড়ে রয়েছে ১০ বছরের বেশি সময় ধরে। রানওয়ের পশ্চিমে, যে দিকে দমকলের ইউনিট রয়েছে, তারই পাশে গত দু’বছরের বেশি পড়ে রয়েছে নর্থ ইস্ট এয়ারলাইন্সেরও দু’টি ছোট বিমান। আর কিংফিশারের সরঞ্জাম যেখানে রয়েছে তার পাশে পড়ে, ডেকান ৩৬০ সংস্থার একটি বিমান। রয়েছে বন্ধ হয়ে যাওয়া ইস্ট-ওয়েস্ট এয়ারলাইন্সের একটি ছোট বিমানও। যদিও বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষের দাবি, এই সব বিমানের অনেকগুলি সম্প্রতি নিলাম করে ছাঁটের দরে বিক্রি করে দেওয়া হচ্ছে। যারা কিনেছে, তারা এখনও এসে নিয়ে যায়নি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy