Advertisement
১০ মে ২০২৪

ভীমরুলের হুলে জখম ছাত্রের মৃত্যু, গাফিলতির অভিযোগে বিক্ষোভ

ভীমরুলের হুলে জখম ষষ্ঠ শ্রেণির এক ছাত্রের মৃত্যুতে কর্তব্যরত নার্স এবং আয়ার বিরুদ্ধে উদাসীনতার অভিযোগে মঙ্গলবার তারকেশ্বর গ্রামীণ হাসপাতালে দফায় দফায় বিক্ষোভ দেখালেন গ্রামবাসী। প্রথমে পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি সামাল দেয়।

কার্তিক রুইদাস।—নিজস্ব চিত্র।

কার্তিক রুইদাস।—নিজস্ব চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
তারকেশ্বর শেষ আপডেট: ০৫ অগস্ট ২০১৫ ০১:১৫
Share: Save:

ভীমরুলের হুলে জখম ষষ্ঠ শ্রেণির এক ছাত্রের মৃত্যুতে কর্তব্যরত নার্স এবং আয়ার বিরুদ্ধে উদাসীনতার অভিযোগে মঙ্গলবার তারকেশ্বর গ্রামীণ হাসপাতালে দফায় দফায় বিক্ষোভ দেখালেন গ্রামবাসী। প্রথমে পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি সামাল দেয়। অভিযুক্ত নার্স এবং আয়াকে আটক করে থানায় নিয়ে যায়। কিন্তু সন্ধ্যায় ছেড়ে দেয়। এতে ক্ষিপ্ত গ্রামবাসীরা রাতে ফের হাসপাতালে বিক্ষোভ দেখান। অভিযুক্তদের গ্রেফতারের দাবি জানান।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, তারকেশ্বরের বালিগোড়ির বাসিন্দা কার্তিক রুইদাস (১২) নামে ওই ছাত্রটি সোমবার সকালে কাছেই বাগবাড়ি এলাকা থেকে টিউশন পড়ে সাইকেলে ফিরছিল। বৃষ্টির জন্য রাস্তা কাদায় পিচ্ছিল হয়ে থাকায় সে সাইকেল উল্টে একটি বাঁশঝাড়ের সামনে পড়ে যায়। বাঁশগাছের গোড়ায় ভীমরুলের চাক ছিল। সেই ভীমরুল তার সারা গায়ে হুল ফোটায়। বাঁচতে ছাত্রটি পাশের জলাশয়ে ঝাঁপ দেয়। স্থানীয় লোকজন তাকে উদ্ধার করে নিয়ে যায় তারকেশ্বর গ্রামীণ হাসপাতালে।

ছাত্রটির পরিবারের অভিযোগ, সোমবার সারাদিন হাসপাতালে ভালই ছিল কার্তিক। তার মা-ও সঙ্গে ছিলেন। রাত ১১টা নাগাদ স্যালাইন শেষ হয়ে যায়। কিন্তু ডাকাডাকিতেও নার্স বা আয়া প্রথমে আসেননি। কার্তিকের হাতের স্যালাইনের ‘চ্যানেল’ থেকে রক্ত বেরোতে থাকে। অনেক পরে তাঁরা এসে তা খুলে দেন। এর পরে ছেলেটির অবস্থার অবনতি হওয়ায় তাঁরা ফের চিকিৎসকের জন্য নার্স এবং আয়াকে খবর দেন। কিন্তু তাঁরা চিকিৎসককে ডাকেনি। নিজেরাও আসেননি। মঙ্গলবার সকালে চিকিৎসক দেখবেন বলে তাঁরা জানিয়ে দেন। ভোরেই ছেলেটি মারা যায়।

কার্তিকের মৃত্যুর কথা গ্রামে চাউর হতেই গ্রামবাসী হাসপাতালে এসে বিক্ষোভ শুরু করেন। তাঁরা মারমুখীও হয়ে ওঠেন। উপস্থিত হন বালিগোড়ি পঞ্চায়েতের উপপ্রধান রবি চট্টোপাধ্যায় এবং পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি সুমনা ঘোষও। আসে পুলিশও। পুলিশ দেহটি ময়না-তদন্তের জন্য শ্রীরামপুর ওয়ালশ হাসপাতালে পাঠায়। মৃতের বাবা বেচারামবাবু তারকেশ্বর থানায় এক নার্স এবং এক আয়ার বিরুদ্ধে চিকিৎসায় উদাসীনতার অভিযোগ দায়ের করেন।

ছেলেটির মামা বিশ্বনাথ দাস বলেন, ‘‘সামান্য ঘটনায় আয়া এবং নার্সদের দায়িত্বজ্ঞানহীনতার জন্য এ ভাবে ছেলেটাকে মরতে হল। প্রশাসন যেন সঠিক পদক্ষেপ করে। যাতে এমন আর কারও না হয়।’’ উপপ্রধান বলেন, ‘‘পুলিশকে সব জানানো হয়েছে। পুলিশ নিশ্চয়ই সঠিক ব্যবস্থা নেবে।’’ পুলিশ জানায়, তদন্ত শুরু হয়েছে।

হুগলির মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক শুভ্রাংশু চক্রবর্তী বলেন, ‘‘সন্ধ্যা পর্যন্ত আমাদের কাছে কেউ কোনও অভিযোগ জানাননি। অভিযোগ পেলে সেই অনুযায়ী বিভাগীয় তদন্ত নিশ্চয়ই করা হবে।’’ ময়না-তদন্তের রিপোর্ট দেখে প্রয়োজনে স্বতঃপ্রণোদিত ভাবে তদন্ত করা হবে বলেও তিনি জানান।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE