Advertisement
২৭ এপ্রিল ২০২৪

দলে দ্বন্দ্ব, বিজেপিতে যোগ তৃণমূল নেতার

জেলা পরিষদের সদস্য দিয়ে শুরু হয়েছিল, এ বার কালনার তৃণমূলের বেশ কিছু নেতা-কর্মীকে নিজেদের দলে টেনে নিল বিজেপি। বৃহস্পতিবার কালনার অঘোরনাথ পার্ক স্টেডিয়ামে বিজেপির রাজ্য সম্পাদক রাহুল সিংহের জনসভায় তৃণমূলের একটা বড় অংশ বিজেপিতে যোগ দেয়। তার মধ্যে বহু সংখ্যালঘু মানুষও ছিলেন। সংখ্যালঘু সেলের নেতা খন্দেকার মোশারফ হোসেনের দাবি, “কালনা, পূর্বস্থলী, মন্তেশ্বর থেকে প্রায় দেড় হাজার সংখ্যালঘু মানুষ বিজেপিতে যোগ দিয়েছেন।”

অঘোরনাথ পার্কের সভায় ভিড়। —নিজস্ব চিত্র।

অঘোরনাথ পার্কের সভায় ভিড়। —নিজস্ব চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কালনা শেষ আপডেট: ২৬ ডিসেম্বর ২০১৪ ০১:৪৪
Share: Save:

জেলা পরিষদের সদস্য দিয়ে শুরু হয়েছিল, এ বার কালনার তৃণমূলের বেশ কিছু নেতা-কর্মীকে নিজেদের দলে টেনে নিল বিজেপি। বৃহস্পতিবার কালনার অঘোরনাথ পার্ক স্টেডিয়ামে বিজেপির রাজ্য সম্পাদক রাহুল সিংহের জনসভায় তৃণমূলের একটা বড় অংশ বিজেপিতে যোগ দেয়। তার মধ্যে বহু সংখ্যালঘু মানুষও ছিলেন। সংখ্যালঘু সেলের নেতা খন্দেকার মোশারফ হোসেনের দাবি, “কালনা, পূর্বস্থলী, মন্তেশ্বর থেকে প্রায় দেড় হাজার সংখ্যালঘু মানুষ বিজেপিতে যোগ দিয়েছেন।”

দিন দশেক আগেই এ সভার ঘোষণা হতেই বিজেপি অঘোরনাথ পার্ক স্টেডিয়ামের বড় মাঠ ভরাতে পারবে কি না তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিল তৃণমূল। তৃণমূলের ঘর ভাঙলে, কোন এলাকার কত সমর্থক বিজেপিতে যোগ দেবেন তা নিয়েও জোর জল্পনা চলছিল। এরমধ্যেই দিন চারেক আগে বেগপুর পঞ্চায়েতের তৃণমূল উপপ্রধান তথা ওই ব্লকের যুব তৃণমূল সভাপতি হারান শেখ বিজেপি নেতৃত্বকে চিঠি দিয়ে তৃণমূল ছাড়তে চাওয়ার কথা জানান। তাঁর সঙ্গে যে বহু সংখ্যালঘু মানুষও দল ছাড়বেন তারও ইঙ্গিত দেন তিনি। এ কথা জানতে পেরে তৃণমূলের কয়েকজন নেতা হারান শেখকে ফেরাতে চান বলেও দলের একাংশের দাবি। এমনকী এ দিনের সভা বানচাল করতে দলীয় পতাকায় শহর মুড়ে ফেলা, কর্মীদের উপর সভাস্থলে যাওয়া গাড়ি এবং গাড়িতে কারা রয়েছে তৃণমূল সে দিকে নজর রাখার নির্দেশও দেয় বলে বিজেপির অভিযোগ। তবে এ ক্ষেত্রে পাল্টা কৌশল নেয় বিজেপিও। বিজেপির জেলা সভাপতি রাজীব ভৌমিক বলেন, “বিভিন্ন এলাকা থেকে দু’শোর বেশি গাড়িতে বহু মানুষ সভায় এসেছেন। তৃণমূলের কোপে পড়তে না চেয়ে বাজার করার নাম করেও বহু লোক সভায় যোগ দিয়েছেন।”একই কথা শোনা গিয়েছে হারান শেখের মুখেও। তাঁর দাবি, “আমার নিজের পঞ্চায়েত এলাকা থেকে পাঁচটি গাড়িতে করে লোক এসেছে। তবে সুলতানপুর, আটঘোরিয়া পঞ্চায়েত এলাকা থেকে বহু লোক এলাকার তৃণমূল নেতাদের কাছ থেকে লুকিয়ে জনসভায় যোগ দিয়েছে।” তাঁর দাবি, “আমার অনুগামীদের মধ্যেই শ’পাঁচেক সংখ্যালঘু মানুষ আছেন।”

কিন্তু তাঁর দল ছাড়ার কারণ কী? তৃণমূল সূত্রে খবর, এলাকার আর এক তৃণমূল নেতা ইনসান মল্লিকের সঙ্গে মতপার্থক্য চরমে পৌঁছে গিয়েছিল হারান শেখের। ইনসান শেখ সম্প্রতি দলের শীর্ষ নেতাদের কাছের লোক হয়ে যাওয়ায় সমস্যা আরও বাড়ে। হারান শেখের দাবি, “ব্লকের যুব সভাপতির পদ দেওয়া হলেও কাজ বলে কিছু ছিল না। অথচ দলের দুর্দিনে বুক চিতিয়ে লড়েছি। সম্মান না পেয়ে অনুগামীদের নিয়ে দলত্যাগ করলাম।” এ দিন শহরের ১৫ নম্বর ওয়ার্ডের তৃণমূল নেতা সুখদেব মণ্ডল, সপ্তর্ষি ভট্টাচার্যের নেতৃত্বেও দেড়শো কর্মী-সমর্থক বিজেপিতে যোগ দেয়। সিপিএম ছেড়ে বিজেপিতে যোগ দেন পূর্বসাতগাছিয়া এলাকার এক সময়ের দাপুটে নেতা গোপেশ্বর দলুই। যোগ দেন বেশ কিছু শিক্ষকও।

এ দিন সভায় রাজ্য সম্পাদক ছাড়াও বিজেপির রাজ্য কমিটির সদস্য স্বপন ভট্টাচার্য, সাক্ষীগোপাল ঘোষ সহ জেলা এবং ব্লক স্তরের বহু নেতা হাজির চিলেন। সভার শুরু থেকেই সারদা-সহ নানা প্রসঙ্গে তৃণমূল নেত্রীকে আক্রমণ করেন রাহুল সিংহ। তিনি বলেন, “সারদা কাণ্ডে দিদি-সহ গোটা দলটাই বিপাকে। দলকে বাঁচাতে দিল্লির সভাতেও যাচ্ছেন উনি। তবে সব জায়গা থেকেই ব্যর্থ মনোরথ হয়ে ফিরতে হচ্ছে।”

তবে বিজেপির সভাকে পাত্তা দিতে নারাজ কালনার তৃণমূল বিধায়ক বিশ্বজিত্‌ কুণ্ডু। তিনি বলেন, “যা খবর পেয়েছি তাতে এলাকার লোকজন তেমন একটা সভায় হাজির হননি। ফলে খামোকা বিজেপিকে নিয়ে ভাবতে যাব কেন?”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

kalna bjp tmc
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE