স্নাতক স্তরের বেশ কয়েকটি পাঠ্যক্রমে অত্যধিক হারে ভর্তি ফি বাড়ানোর প্রতিবাদ করে উপাচার্যের কাছে স্মারকলিপি দিল টিএমসিপি। তাদের দাবি, অল্প বাড়ালে একরকম ছিল, কিন্তু এত টাকা দিয়ে অনেক ছাত্রছাত্রীর পক্ষেই পড়োশোনা চালানো সম্ভব নয়। বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করার আশ্বাস দিয়েছেন উপাচার্য স্মৃতিকুমার সরকার।
বিশ্ববিদ্যালয়ের তৃণমূল ছাত্র পরিষদের সভাপতি দীপক পাত্র এবং ছাত্র সংসদের ক্রীড়া সম্পাদক সাদ্দাম হোসেনের অভিযোগ, “এবিএ, এলএলএম, মাস কমিউনিকেশন, বিএড, এমএড মাইক্রোবায়োলজি ইত্যাদি নিজে টাকা দিয়ে পড়তে হয়, এমন পাঠ্যক্রমের ভর্তি ফি ও ফর্মের দাম অত্যধিক হারে বাড়ানো হয়েছে। এই মোটা অঙ্কের বাৎসরিক ফি দিয়ে অনেক ছাত্রছাত্রীর পক্ষে ভর্তি হওয়া অসম্ভব। তাই আমাদের দাবি, সামান্য হারে ফি বাড়ানো হোক।”
ওই দুই ছাত্রনেতার দাবি, আগে এলএলএম বা আইনের স্নাতকোত্তর বিভাগে ভর্তি হতে গেলে বছরে ১৫০০ টাকা দিতে হত। এখন তা বাড়িয়ে দ্বিগুণ করা হয়েছে। এমবিএ (মাস্টার অফ বিজনেস অ্যাডমিনস্ট্রেশন)-তে ভর্তি হতে লাগতো ১৭,৫০০ টাকা। এ বার তা বাড়িয়ে করা হয়েছে ৩২,৫০০ টাকা। টিএমসিপির দাবি, ২০ হাজার করা হলে আমাদের আপত্তি ছিল না। কিন্তু এতখানি বাড়ানো মেনে নেওয়া অসম্ভব। এছাড়া মাস কমিউনিকেশনে ভর্তি হতে বছরে লাগতো পাঁচ হাজার টাকা। এখন তা ২৫০০০ টাকা করে দেওয়া হয়েছে বলেও তাঁদের দাবি। ওই ফি সাত হাজার টাকা করার দাবি জানিয়েছে টিএমসিপি ইউনিট। বিএড-এর পাঠ্যক্রমে নতুন ও ডেপুটেডদের এতদিন দিতে হত ১২০০ ও ৩০০০ টাকা। এ বার তা যথাক্রমে ৬০০০ ও ১৫,০০০ টাকা করা হয়েছে। ছাত্র সংসদের দাবি, ওই দুই ক্ষেত্রে ফি যথাক্রমে দুই ও পাঁচ হাজার করা হোক। এছাড়া এমএড ডেপুটেড ও মাইক্রোবায়লোজি পাঠ্যক্রমে ভর্তি হতে বছরে দিতে হত ২৫ হাজার টাকা। দুটি ক্ষেত্রেই তা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৪০,০০০ টাকা। ভর্তির ফর্মের দামও অত্যধিক বাড়ানো হয়েছে বলে টিএমসিপির দাবি। বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র সংসদের দাবি, ভর্তির ফর্মের দাম স্নাতকোত্তর স্তরে ছিল ১০০ টাকা। এ বার তা বাড়িয়ে করা হয়েছে ৪৫০ টাকা। রেজিস্ট্রেশন ফর্মের দাম আগে নেওয়া হতো আগে ২০০ টাকা। এ বার তা বাড়িয়ে করা হয়েছে ৪০০ টাকা। রেজিস্ট্রেশন ফিও দ্বিগুণ বাড়ানো হয়েছে বলে তাদের দাবি।
মঙ্গলবার সন্ধ্যায় উপাচার্যের কাছে পেশ করা ওই স্মারকলিপিতে প্রতিটি পাঠ্যক্রমের আগের ফি ,বর্ধিত ফি ও টিএমসিপির প্রস্তাবিত ফি তিনটি কলামে স্পষ্ট করে জানিয়েছেন তারা। টিএমসিপি নেতাদের দাবি, বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ে ফি বৃদ্ধির নামে ছাত্রছাত্রীদের উপর অহেতুক আর্থিক বোঝা চাপিয়ে দেওয়া হচ্ছে। এত বেশি ফি রাজ্যের কোনও বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ নেন না। ওই স্মারকলিপির প্রতিলিপি শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়, ওই দফতরের প্রতিমন্ত্রী আশিস বন্দ্যোপাধ্যায় ও টিএমসিপির রাজ্য সভাপতি শঙ্কুদেব পন্ডাকেও পাঠিয়েছেন তারা।
উপাচার্য স্মৃতিকুমার সরকার বলেন, “এই ফি বৃদ্ধির বিষয়টি বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মসমিতির বৈঠকে আলোচনা করা হবে।” তবে বর্ধিত ফি কমানোর কোনও আশ্বাস তিনি দেননি বলে ছাত্রছাত্রীদের দাবি। বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র সংসদের সভাপতি আমিরুল ইসলাম বলেন, “আমাদের কাছে অনেকেই এসে বলছেন, অত বেশি ফি দিয়ে লেখাপড়া করা তাঁদের পক্ষে সম্ভব নয়। কর্মসমিতিতে এই বর্ধিত ফি কমিয়ে যদি সাধারণ ছাত্রছাত্রীদের দেওয়ার মতো করা না হয় তাহলে আমরা বৃহত্তর আন্দোলনে নামব।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy