বেহাল: পানাগড়-সিলামপুর রাস্তা। নিজস্ব চিত্র
বহন ক্ষমতার কয়েকগুণ বেশি ওজনের বালি নিয়ে বেআইনি ভাবে ট্রাক যাতায়াত করছে। ফলে, এক দিকে সরকার যেমন রাজস্ব হারাচ্ছে, তেমনই প্রায় তিন কোটি টাকায় সম্প্রসারিত রাস্তা যাতায়াতের অযোগ্য হয়ে পড়েছে। পানাগড়-সিলামপুর রাস্তায় এই রকম বেআইনি বালির গাড়ি যাতায়াতের অভিযোগ জানিয়ে প্রশাসনের কাছে চিঠি পাঠালেন স্থানীয় বাসিন্দারা।
পূর্ত দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, পানাগড় বাজার থেকে সিলামপুর পর্যন্ত সাড়ে চার কিলোমিটার রাস্তাটি ২০১৩ সালে প্রায় ২ কোটি ৯০ লক্ষ টাকা ব্যয়ে সংস্কার ও সম্প্রসারণ করা হয়। তখনই সরকারি নিয়ম মেনে ঠিকাদারের বিরুদ্ধে রাস্তা তৈরি না করার অভিযোগ এনেছিলেন স্থানীয়েরা। শেষ পর্যন্ত প্রশাসনের হস্তক্ষেপে সমস্যা মেটে। কাঁকসা ও গলসি ১ ব্লকের বিস্তীর্ণ এলাকার কয়েক হাজার মানুষ বিভিন্ন প্রয়োজনে রাস্তাটি ব্যবহার করেন। রণডিহা, সিলামপুর, ভরতপুর প্রভৃতি গ্রামে হাইস্কুল, ব্যাঙ্ক-সহ বিভিন্ন সরকারি অফিস রয়েছে। অন্য দিকে, পানাগড়ে আছে ব্লক অফিস, থানা, দমকল দফতর, স্কুল, ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ ও হাসপাতাল। এলাকার সবচেয়ে বড় বাজারও পানাগড়ে। ফলে নানা প্রয়োজনে দু’দিকের মানুষজনকেই এই রাস্তাটি ব্যবহার করতে হয়।
পানাগড় রেলপাড়, চাকতেঁতুল, আমলাজোড়়া, চরমানা-সহ আশপাশের বাসিন্দারা সম্প্রতি ব্লক প্রশাসনের কাছে লিখিত অভিযোগে জানান, এখন রাস্তাটি ফের বেহাল হয়ে পড়েছে। বেআইনি ভাবে দামোদর থেকে প্রতিদিনই শয়ে শয়ে ট্রাক ও লরি লুকিয়ে বালি তুলছে। ১০ টন বহন ক্ষমতা সম্পন্ন রাস্তা দিয়ে কয়েকগুণ বেশি ওজনের বালি-ভর্তি ট্রাক যাতায়াত করছে। তা ছাড়া লরি ও ট্রাক থেকে বালি চুঁইয়ে জল পড়ছে রাস্তায়। তার ফলে রাস্তাটি বেশ কয়েক জায়গায় বেহাল হয়ে গিয়েছে। কোথাও বসে গিয়েছে। কোথাও ফাটল ধরেছে। আবার কোথাও তৈরি হয়েছে খানাখন্দ।
স্থানীয় বাসিন্দা প্রকাশ রায়, বাবু গড়াই, বিজয়কুমার ভট্টাচার্যেরা বলেন, ‘‘বালির ট্রাকের দরুণ যানজটে নাকাল হচ্ছেন এলাকার বাসিন্দারা। দুর্গাপুর, রাজবাঁধ প্রভৃতি জায়গা থেকে আসা স্কুলবাস সময়ে স্কুলে ঢুকতে পারছে না। রাস্তার ধুলো ও লরি-ট্রাকের ইঞ্জিনের ধোঁয়ার কটূ গন্ধে দূষিত হচ্ছে পরিবেশ।’’ পানাগড় রেলপাড়ের বাসিন্দা শ্যামসুন্দর সিংহ অভিযোগ করেন, লরি ও ট্রাকের চাপে নিকাশি নালার জল উঠে আসছে রাস্তায়। তা মাড়িয়েই যাতায়াত করতে হচ্ছে। কাঁকসা পঞ্চায়েতের সদস্য রামজি মণ্ডলও মানছেন, কেউ অসুস্থ হলে এলাকায় অ্যাম্বুল্যান্স ঢুকতে সমস্যায় পড়ছে। এই পরিস্থিতিতে বেআইনি বালির কারবার ও ওভারলোডিং বন্ধ করা এবং সকাল ছ’টা থেকে রাত ন’টা পর্যন্ত বালির গাড়ি যাতায়াত বন্ধ করার দাবি উঠেঠে।
মহকুমাশাসক শঙ্খ সাঁতরা জানান, মাঝে-মাঝেই বেআইনি বালির বিরুদ্ধে অভিযান চলছে। ওই রাস্তায় অভিযানে গতি আনার আশ্বাসও দিয়েছেন তিনি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy