গেটের এক দিকে সার বেঁধে দাঁড়িয়ে তৃণমূলের কাউন্সিলররা। খানিক দূরে জটলা বিক্ষোভকারীদের। তাঁদের সামনেই হেঁটে নির্বিঘ্নে কারখানায় ঢুকছেন শ্রমিক-কর্মীরা। বৃহস্পতিবার সকালে কুলটির ওয়াগন কারখানার গেটে দেখা গেল এই ছবি। তৃণমূল নেতারা আগের দিনই আশ্বাস দিয়েছিলেন, দলের কাউন্সিলররা দাঁড়িয়ে থেকে কাজ শুরু করাবেন কারখানায়। সেই অনুযায়ীই এ দিন সমস্যা মেটে। স্বাভাবিক উৎপাদনও হয়। হাঁফ ছেড়ে বেঁচেছেন শ্রমিক-কর্মী থেকে কারখানার কর্তা, সকলেই।
স্থানীয় লোক নিয়োগের দাবিতে মঙ্গল ও বুধবার ওই কারখানার শ্রমিক-কর্মীদের কাজে যোগ দিতে বাধা দেয় কিছু লোকজন। অভিযুক্তেরা এলাকায় তৃণমূল কর্মী-সমর্থক বলে পরিচিত। কারখানা কর্তৃপক্ষ পুলিশের পাশাপাশি সমস্যা মেটাতে শাসকদলের নেতাদেরও বিষয়টি জানান। স্থানীয় তৃণমূল বিধায়ক উজ্জ্বল চট্টোপাধ্যায় বুধবার দলের নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করে যে কোনও ভাবে বৃহস্পতিবার থেকে কাজ চালু করানোর নির্দেশ দেন।
এ দিন সকাল ৭টায় কর্মী-সমর্থকদের সঙ্গে কারখানার গেটে পৌঁছে যান কুলটির আট তৃণমূল কাউন্সিলর। তবে তাঁদের আগেই কারখানার অদূরে জটলা পাকিয়ে দাঁড়িয়েছিলেন বিক্ষোভকারীরা। কিন্তু তৃণমূল কাউন্সিলর ও কর্মীদের ঘোরাফেরা করতে দেখে তাঁরা গেটের ধারে আসেননি। ঘণ্টাখানের পর থেকে এক এক করে শ্রমিক-কর্মীরা কারখানায় আসতে থাকেন। কিন্তু বিক্ষোভকারীদের দাঁড়িয়ে থাকতে দেখে তাঁরা থমকে যান। তখন ১০ নম্বর বরো চেয়ারম্যান কৃষ্ণাপ্রসাদ দাস ও কাউন্সিলর আখতার হুসেন তাঁদের অভয় দেন। গেটে এসে দাঁড়ান কারখানার মুখ্য কার্যনির্বাহী আধিকারিক সুশান্ত ভট্টাচার্যও। তাঁদের দেখে সাহস পেয়ে কারখানায় ঢুকতে শুরু করেন কর্মীরা।
বিক্ষোভকারীরা তা দেখে দু’এক বার চেঁচামেচি করলেও পরে ফিরে যান। শ্রমিক-কর্মীরা কারখানায় ঢুকে যাওয়ার পরেও ঘণ্টাখানেক গেটে দাঁড়িয়ে থাকেন কাউন্সিলররা। আখতার হুসেন বলেন, ‘‘আমরা এখন কয়েক দিন পালা করে এসে সকালে গেটে দাঁড়িয়ে থাকব।’’ বিধায়ক উজ্জ্বলবাবু বলেন, ‘‘কাজ বন্ধ করে বিক্ষোভ কোনও ভাবে বরদাস্ত করা হবে না। দাবি থাকলে তা আলোচনায় মেটাতে হবে।’’
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় রেলমন্ত্রী থাকাকালীন মূলত তাঁর উদ্যোগে ২০১০ সালে সেল-রেলের এই যৌথ প্রকল্পের শিলান্যাস হয়। বছরে ১২০০ ওয়াগন তৈরির লক্ষে বিনিয়োগ হয় প্রায় ১৫০ কোটি টাকা। আপাতত পুরনো ওয়াগনের রেক সংস্কার হচ্ছে। ১ জানুয়ারি থেকে এখনও পর্যন্ত ৩২টি রেক সরবরাহ করা হয়েছে। সংস্থার মুখ্য কার্যনির্বাহী আধিকারিক সুশান্ত ভট্টাচার্য বলেন, ‘‘দু’দিনে সংস্থার প্রায় তিরিশ লক্ষ টাকা ক্ষতি হয়েছে।’’ এ দিন কাজ শুরু হওয়ার পরে তিনি এলাকার বিধায়ক ও কাউন্সিলরদের অভিনন্দন জানিয়েছেন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy