Advertisement
১৯ মার্চ ২০২৪

এক মিছিলে রবীন্দ্রনাথ ও বেচারাম

রামনবমীর আগের দুপুরে তৃণমূলের এই মিছিলে কয়েক হাজার কর্মী-সমর্থক পা মেলান। টুপি, জ্যাকেট পরে, হাতে প্ল্যাকার্ড নিয়ে মিছিলের সামনে হেঁটেছেন বেচারাম।

ভিড়: মিছিলে স্লোগান তুলছেন বেচারাম মান্না। নিজস্ব চিত্র

ভিড়: মিছিলে স্লোগান তুলছেন বেচারাম মান্না। নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
সিঙ্গুর শেষ আপডেট: ২৫ মার্চ ২০১৮ ০২:৪৩
Share: Save:

সামনে পঞ্চায়েত ভোট। কিছুদিন আগেই তৃণমূলের হুগলি জেলা পর্যবেক্ষক অরূপ বিশ্বাস সিঙ্গুরে দলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব বরদাস্ত করা হবে না বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছিলেন। শনিবার দেখা গেল, বিবাদ ভুলে দলীয় মিছিলে সামিল সিঙ্গুরের যুযধান দুই তৃণমূল নেতা— বিধায়ক রবীন্দ্রনাথ ভট্টাচার্য এবং হরিপালের বিধায়ক বেচারাম মান্না।

রামনবমীর আগের দুপুরে তৃণমূলের এই মিছিলে কয়েক হাজার কর্মী-সমর্থক পা মেলান। টুপি, জ্যাকেট পরে, হাতে প্ল্যাকার্ড নিয়ে মিছিলের সামনে হেঁটেছেন বেচারাম। মোটরবাইকে ছিলেন রবীন্দ্রনাথবাবু। পরে দু’জন একসঙ্গে সভাও করেন। এতদিন তাঁদের আকচা-আকচিই দেখে এসেছেন সিঙ্গুরবাসী। আগে চেষ্টা করেও যে বিবাদ মেটাতে পারেননি দলের শীর্ষ নেতৃত্বকেও।

কিন্তু পঞ্চায়েত নির্বাচনের আগে তাঁরাই ‘ঐক্য’ তুলে ধরার চেষ্টা করলেন। যা দেখে কার্যত ঘাম দিয়ে জ্বর ছাড়ল জেলা তৃণমূল নেতৃত্বের। এই ‘ঐক্য মিছিল’ দিয়েই কার্যত জেলায় পঞ্চায়েত ভোটের বাদ্যি বাজালেন তাঁরা। দলের জেলা সভাপতি তপন দাশগুপ্ত অবশ্য বলেন, ‘‘সামনে পঞ্চায়েত ভোট। সিঙ্গুর কেন? জেলার কোনও অংশেই দল কোনও বিবাদ বরদাস্ত
করবে না।’’

রবীন্দ্রনাথ এবং বেচারামের বিবাদ মেটানোর জন্য দলের শীর্ষ নেতৃত্বও কঠোর অবস্থান নিয়েছিল। দলের জেলা পর্যবেক্ষক অরূপবাবু দুই নেতাকেই স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছিলেন, দলের স্বার্থে পঞ্চায়েত নির্বাচনকে ‘পাখির চোখ’ করে বিজেপি-র বাড়বাড়ন্ত রুখতে হবে। বস্তুত, বিজেপি ইতিমধ্যেই সিঙ্গুরের কিছু এলাকায় নিজেদের সংগঠন বাড়িয়ে ফেলেছে। মাসকয়েক আগে এখানে বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষের একটি জনসভাতে ভাল ভিড় হয়েছিল।

পঞ্চায়েত নির্বাচনকে সামনে রেখে আপাতত সেই বিবাদে জল ঢালার চেষ্ট হচ্ছে দলে। এ নিয়ে রবীন্দ্রনাথবাবু কোনও কথা বলতে চাননি। গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের কথা এড়িয়ে গিয়ে বেচারাম বলেন, ‘‘মিছিলের জন্য দশ হাজার টুপি, আড়াই হাজার জ্যাকেট এবং আড়াই হাজার প্ল্যাকার্ড তৈরি করেছিলাম।’’

তবে দলের স্থানীয় কর্মী-সমর্থকদের একাংশের আশঙ্কা, ভোটের দিন ঘোষণার পর টিকিট বিলিকে কেন্দ্র করে ফের দুই নেতার বিবাদ মাথা চাড়া দিতে পারে। এই আশঙ্কা উড়িয়ে দিচ্ছেন না জলের জেলা নেতারাও। তাঁদেরই এক জন বলেন, ‘‘এখন দেখার, এই ঐক্য কতদিনের? টিকিট বিলিই কিন্তু ঐক্যের অগ্নিপরীক্ষা।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE