Advertisement
০৮ মে ২০২৪

খড়্গপুরে নিখোঁজ বাংলাদেশি প্রৌঢ়

ট্রেনে চেন্নাই থেকে ফেরার পথে নিখোঁজ হয়েছেন প্রৌঢ় শ্বশুর— বুধবার রাতে খড়্গপুর রেল পুলিশে এমনই একটি অভিযোগ দায়ের করেছেন জামাই। উভয়েরই বাড়ি বাংলাদেশে রাজশাহীতে। এমন ঘটনা ঘুম কেড়েছে রেল পুলিশের।

নিজস্ব সংবাদদাতা
খড়্গপুর শেষ আপডেট: ২৫ জুলাই ২০১৪ ০০:১৫
Share: Save:

ট্রেনে চেন্নাই থেকে ফেরার পথে নিখোঁজ হয়েছেন প্রৌঢ় শ্বশুর— বুধবার রাতে খড়্গপুর রেল পুলিশে এমনই একটি অভিযোগ দায়ের করেছেন জামাই। উভয়েরই বাড়ি বাংলাদেশে রাজশাহীতে। এমন ঘটনা ঘুম কেড়েছে রেল পুলিশের।

রাজশাহী জেলার পোবা থানা এলাকার বাসিন্দা মহম্মদ রবিয়াল ইসলাম লিখিত অভিযোগে জানিয়েছেন, গত ৬ জুলাই রাত থেকে বছর তাঁর পঞ্চান্নর শ্বশুর আব্দুল নূর নিখোঁজ। তাঁর বাড়ি রাজশাহিরই গোহালহাণ্ডিয়ায়। তা হলে, এত দিন পরে অভিযোগ দায়ের করলেন কেন?

এর জবাবে রবিয়াল জানিয়েছেন, গত ৪ জুলাই তাঁরা চেন্নাইয়ে পৌঁছন। সে দিনই চিকিৎসা করিয়ে ফেরার ট্রেন, চেন্নাই মেল ধরেন। সংরক্ষিত কামরার ওয়েটিং লিস্টে নাম ছিল তাঁদের। পাশাপাশি বসেছিলেন। ৬ জুলাই রাত দু’টো নাগাদ খড়্গপুর পৌঁছন। খড়্গপুর অবধি তাঁর শ্বশুর ট্রেনেই ছিলেন। এরপরে তিনি কিছুটা তন্দ্রাচ্ছন্ন হয়ে যান। সম্বিৎ ফিরলে দেখেন ট্রেন খড়্গপুর ছেড়েছে। পাশে শ্বশুর নেই। এরপর থেকেই খোঁজ শুরু। সবক’টি কামরা খুঁজতে খুঁজতে হাওড়ার সাঁতরাগাছি পর্যন্ত এসেও না পেয়ে ফের খড়্গপুরে ফেরেন রবিয়াল। তাঁর দাবি, খড়্গপুর ফিরে স্টেশনে হন্যে হয়ে খুঁজেও সন্ধান পাননি শ্বশুরের।

তিনি বলেন, “তখন উপস্থিত পুলিশদের বিষয়টি জানাই। তখন তাঁরা আত্মীয়দের বাড়ি খোঁজ নিতে বলেন। সেই মতো খোঁজ চালিয়েও শ্বশুরকে না পেয়ে বাংলাদেশে ফিরে যাই। কিন্তু সেখানেও না-পাওয়ায় ফের খড়্গপুরে ফিরে এসেছি।”

প্রৌঢ়-অন্তর্ধানের এত দিন পরে অভিযোগ পেয়ে আতান্তরে রেল পুলিশ। ট্রেন থেকে নেমে আব্দুল নূর কোথায় গেলেন, জামাই-শ্বশুরের সম্পর্ক কেমন, জামাই কেন পুলিশে আগেই অভিযোগ দায়ের করলেন না— এমনই নানা প্রশ্ন ভাবাচ্ছে রেল পুলিশকে। যদিও রবিয়ালের দাবি, অস্ত্রোপচারের খরচ প্রায় তিন লক্ষ টাকা জেনে মানসিক ভাবে বিপর্যস্ত ছিলেন শ্বশুর। শারীরিক ধকলও ছিল। তিনি বলেন, “আমার ধারণা, তিনি খড়্গপুরে নেমে হারিয়ে গিয়েছেন।”

রেল পুলিশ ও পারিবারিক সূত্রে জানা গিয়েছে, দীর্ঘ দিন ধরেই কোমরের ব্যথায় ভুগছিলেন পেশায় কৃষিজীবী প্রৌঢ় আব্দুল নূর। বাংলাদেশের চিকিৎসকদের সন্দেহ ছিল, তিনি কোনও জটিল রোগের শিকার। তাঁরা ভারতে এসে চিকিৎসার পরামর্শ দেন। এরপরে ঠিক হয় জামাই তাঁর শ্বশুরকে নিয়ে চেন্নাইয়ের অ্যাপোলো হাসপাতালে চিকিৎসা করাতে যাবেন। গত ৪ জুলাই চেন্নাই পৌঁছন তাঁরা। চিকিৎসকেরা নিদান দেন অস্ত্রোপচার করতে হবে, এবং তা বাংলাদেশেই করা সম্ভব। এরপরে ছিল ফেরার পালা। সেখানেই বিপত্তি!

খড়্গপুরে রেল পুলিশের আইসি বিধান ভট্টাচার্য বলেন, “নিখোঁজ ব্যক্তি বাংলাদেশি হওয়ায় সমস্ত দিক খতিয়ে দেখছি।” রেল পুলিশ সূত্রে খবর, সব রেল স্টেশনের থানাকে নিখোঁজ প্রৌঢ়ের ছবি-সহ বিবরণ প্রকাশ করতে বলা হয়েছে। এ দিকে হন্যে হয়ে ঘুরেও না-পেয়ে জামাই রবিয়াল বলছেন, “শ্বশুরমশাইকে খুঁজে না পেলে আমি আর বাড়িতে মুখ দেখাতে পারব না!”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

bangladeshi citizen kharagpur
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE