—ফাইল চিত্র।
বারবার দুর্ঘটনা ঘটছে। পথচলতি মানুষ জখম হচ্ছেন। প্রাণহানিও হচ্ছে। তবু লরির গতিতে লাগাম পড়ানো যাচ্ছে না। আর তাতেই ক্ষুব্ধ মেদিনীপুর গ্রামীণের জামশোল ও আশপাশের এলাকা।
বুধবার রাতে জামশোলে পথ দুর্ঘটনায় বাইক আরোহী দুই যুবকের মৃত্যু হয়েছে। মৃতেরা হলেন রবি মান্ডি (২৮) এবং আখতার খান (৩১)। জানা গিয়েছে, দ্রুতগতিতে ধেয়ে আসা একটি লরি ওই মোটরবাইকে ধাক্কা মারে। ঘটনাস্থলেই দু’জনের মৃত্যু হয়। দু’জনের মৃত্যুর পরে এলাকায় অসন্তোষ দেখা দেয়। বেশ কিছুক্ষণের জন্য মেদিনীপুর-ধেড়ুয়া সড়কে যান চলাচলও ব্যাহত হয়। মাস কয়েক আগেই দুর্ঘটনায় এক যুবকের মৃত্যু ঘিরে উত্তপ্ত হয়ে উঠেছিল মেদিনীপুর গ্রামীণের গুড়গুড়িপাল। বুধবার রাতে যেখানে দুর্ঘটনা ঘটে সেখান থেকে গুড়গুড়িপালের ঘটনাস্থলের দূরত্বও বেশি নয়। সেবার ঘাতক লরি ধরা পড়ে গিয়েছিল। লরিতে ভাঙুচর চালিয়ে আগুন ধরিয়ে দিয়েছিল উত্তেজিত জনতা। পিছনে থাকা আরও ১২টি লরিতে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়েছিল। এ বার অবশ্য জল তত দূর গড়ায়নি। পুলিশ এসে পরিস্থিতি সামাল দেয়।
স্থানীয় সূত্রে খবর, রবি ও আখতারের বাড়ি খড়্গপুরে। আখতারকে সঙ্গে নিয়ে রবি মণিদহে শ্বশুরবাড়িতে এসেছিলেন। বুধবার রাতে খড়্গপুর ফেরার পথেই দুর্ঘটনা ঘটে। এলাকাবাসীর বক্তব্য, এই রাস্তা দিয়ে দিনে কয়েকশো বালি বোঝাই লরি যাতায়াত করে। তাদের বেপরোয়া যাতায়াতে বারবার দুর্ঘটনাও ঘটে। এলাকায় গাড়ির গতি নিয়ন্ত্রণের কোনও ব্যবস্থা নেই বলেও অভিযোগ স্থানীয়দের। এলাকার বাসিন্দা জয়দেব বিশুই, রুদ্র ভুঁইয়াদের কথায়, “মাঝেমধ্যেই দুর্ঘটনা ঘটে। বেশিরভাগ ক্ষেত্রে বালি বোঝাই লরি পথচারীদের ধাক্কা মারে। প্রাণ হাতে চলাফেরা করতে হয় আমাদের।” তবে বুধবার রাতের দুর্ঘটনা বালি বোঝাই লরির ধাক্কায় হয়েছে কি না, তা স্পষ্ট নয়।
এই দুর্ঘটনার সঙ্গে জড়িয়ে গিয়েছে সচেতনতার বিষয়টিও। কারণ, বাইক আরোহী দুই যুবকের কারও হেলমেট ছিল না বলে পুলিশ সূত্রের খবর। তাই প্রশ্ন উঠছে ‘সেফ ড্রাইভ, সেভ লাইফ’ নিয়ে এত প্রচারের পরেও কেন ছবিটা পাল্টাচ্ছে না। স্থানীয়দের মতে, সকলে যেমন সমান সচেতন নন, তেমনই এই রাস্তায় নজরদারি বা গাড়ির গতি নিয়ন্ত্রণেরও কোনও ব্যবস্থা নেই। ফলে, একের পর এক দুর্ঘটনা ঘটছে। একটা দুর্ঘটনা ঘটলে দিন কয়েক পুলিশি তত্পরতা দেখা দেয়। তার পরে যে কে সেই! মণিদহের উপপ্রধান অঞ্জন বেরাও মানছেন, “এলাকায় বারবার দুর্ঘটনা ঘটছে। গাড়ির গতি আরও নিয়ন্ত্রণ করা উচিত।”
জেলা প্রশাসনের এক আধিকারিকের আশ্বাস, “পথ দুর্ঘটনার সংখ্যা কমানোর চেষ্টা চলছে। এ ক্ষেত্রে পরিস্থিতি খতিয়ে দেখে উপযুক্ত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy