প্রতীকী ছবি।
রাস্তায় পড়ে মৃত্যু হল এক ব্যক্তির। আর তারপর চলল তাঁর দেহ উদ্ধার নিয়ে টালবাহানা। পুলিশ জানিয়েছে, মৃত মদনগোপাল দাস (৫৮) খড়্গপুর ডিআরএম অফিসের চিফ সুপারিন্টেন্ডেন্ট। আদতে উত্তর ২৪ পরগনার মধ্যমগ্রামের বাসিন্দা মদনগোপালবাবু বাড়ি ভাড়া করে একাই থাকতেন পাঁশকুড়ার কনকপুরে।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, সোমবার সন্ধ্যায় পাঁশকুড়া স্টেশনের পাশের রাস্তা দিয়ে বাড়ি ফিরছিলেন তিনি। সারাদিনের বৃষ্টিতে পিছল রাস্তায় একটি গাড়ি আসছে দেখে পাশ কাটাতে যান তিনি। তখনই পড়ে গিয়ে মাথায় আঘাত পান। কয়েকজন পথচারী উদ্ধার করে তাঁকে স্থানীয় এক চিকিৎসকের কাছে নিয়ে গেলে জানা যায় মদনবাবুর মৃত্যু হয়েছে। সন্ধ্যা সাড়ে ৭টা নাগাদ মৃতদেহ ফের রাস্তার ওই জায়গাতেই ফেলে রেখে যান উদ্ধারকারীরা। তখন থেকে দেহ রাস্তাতেই পড়ে ছিল বলে জানিয়েছেন স্থানীয়রা। ততক্ষণে পরিচয় জানা গিয়েছে মদনবাবুর। মধ্যমগ্রাম থেকে পরিবারের লোকজন পাঁশকুড়া পৌঁছনোর পর রাত প্রায় সাড়ে ১১টা নাগাদ পাঁশকুড়া থানার পুলিশ দেহ উদ্ধার করে।
স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, সন্ধেবেলাই পরিচয় জানার পর তাঁরা পাঁশকুড়ার স্টেশন ম্যানেজার ও রেল পুলিশকে খবর দেন। রেল পুলিশ ও অন্য আধিকারিকরাও ঘটনাস্থলে আসেন। রেলের চিকিৎসকও ওই রাস্তার ধারে বসেই পরীক্ষা করে জানান, মৃত্যু হয়েছে মদনগোপালবাবুর। অথচ, রেল পুলিশ দেহ উদ্ধার করে নিয়ে যেতে অস্বীকার করে। তাদের দাবি, রেল লাইন থেকে ৪০০মিটার দূরে পড়েছিল মৃতদেহ, অতএব দেহ উদ্ধারের এক্তিয়ার নেই। আসেনি পাঁশকুড়া থানার পুলিশও। পরে মধ্যমগ্রাম পরিবারের লোকজন এলে পুলিশ গিয়ে দেহ উদ্ধার করে।
এ বিষয়ে পুলিশের দাবি, রেল এলাকায় দেহ উদ্ধার নিয়ে কিছু নিয়ম রয়েছে। তবে রেল পুলিশের কাছে খবর পেয়েই থানা থেকে লোক গিয়েছিল। পরিবারের জন্য অপেক্ষা করতে গিয়েই দেরি হয়ে গিয়েছে।
পাঁশকুড়ার স্টেশনের ম্যানেজার মেঘরাই হাঁসদা বলেন, ‘‘মদনগোপালবাবুর দুর্ঘটনার ঘটনার খবর পেয়েই চিকিৎসককে পাঠানো হয়েছিল। এলাকাটি পাঁশকুড়া থানার অধীনে তাই, তারাই দেহ উদ্ধার করেছে।’’
ঘটনাকে দুর্ভাগ্যজনক বলে মন্তব্য করেছেন জেলা পুলিশ সুপার অলোক রাজোরিয়া। তিনি বলেন, ‘‘দীর্ঘক্ষণ মৃতদেহ পড়ে থাকাটা কাম্য নয়। এ ক্ষেত্রে গাফিলতির অভিযোগ খতিয়ে দেখা হবে।’’
তবে অবেলার অভিযোগ উঠছে আরও। প্রথমত যাঁরা মদনবাবুর মৃত্যু হয়েছে জেনে দেহ রাস্তায় ফেলে রেখে গেলেন, তাঁদের অবহেলাও কম নয়। দ্বিতীয়ত, বাসিন্দাদের অভিযোগ, বেহাল রাস্তার কারণেই এমন দুর্ঘটনার শিকার হলেন এক প্রৌঢ়। অবহেলা রয়েছে প্রশাসনেরও।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy