বেহাল: উঠে গিয়েছে সেতুর রাস্তার পিচের আস্তরণ। যে কোনও সময় ঘটতে পারে দুর্ঘটনা। নিজস্ব চিত্র
বয়স মাত্র নয়। আর এই ক’বছরেই ধুঁকতে শুরু করেছে ধেড়ুয়া সেতু। সেতুর মাঝে পিচ-কংক্রিট উঠে গিয়ে মরচে ধরা লোহার রড বেরিয়ে গিয়েছে। প্রায়ই দুর্ঘটনা ঘটছে। বিশেষত অ্যাম্বুল্যান্সে রোগী নিয়ে যাওয়ার সময় খুব সমস্যা হচ্ছে। ঝাঁকুনিতে আরও অসুস্থ হয়ে পড়ছেন রোগী। ঝাড়গ্রাম ও মেদিনীপুরের মধ্যে যোগাযোগের গুরুত্বপূর্ণ মাধ্যম এই সেতুর হাল নিয়ে শাসক-বিরোধী তরজাও শুরু হয়ে গিয়েছে।
মেদিনীপুর সদর ব্লকের ধেড়ুয়া ঘাট এবং লালগড় ব্লকের বৈতা ঘাটের মাঝে বয়ে গিয়েছে কংসাবতী। আগে ছিল ‘ফেয়ার ওয়েদার’ সাঁকো। বর্ষায় নৌকায় পারাপার হতো। অথচ এই পথে মেদিনীপুর থেকে ঝাড়গ্রামের দূরত্ব অনেকটাই কম। বাম জমানায় ৩৪৮ মিটার লম্বা কংক্রিটের সেতু তৈরি হয়। ২০০৮ সালের ফেব্রুয়ারিকে সেতুটির উদ্বোধন করেন তৎকালীন পূর্তমন্ত্রী ক্ষিতি গোস্বামী।
খাতায়কলমে ধেড়ুয়া সেতুর নাম ‘কামাক্ষ্যা ঘোষ সেতু’। মেদিনীপুর থেকে ৬ নম্বর জাতীয় সড়ক মুম্বই রোড ধরে ঝাড়গ্রামের দূরত্ব প্রায় ৬০ কিলোমিটার। কিন্তু মেদিনীপুর থেকে ধেড়ুয়ার রাজ্য সড়ক দিয়ে বৈতা হয়ে ঝাড়গ্রামের দূরত্ব মাত্র ৪০ কিলোমিটার। তাই ধেড়ুয়ার রাস্তাটিতে সব সময়ই ব্যস্ত থাকে। রোজ এই সেতু দিয়ে কম করে হাজার খানেক যানবাহন চলে।
সেতুটি দেখভালের দায়িত্বে রয়েছে পূর্ত (সড়ক) দফতর। অভিযোগ, যথাযথ রক্ষণাবেক্ষণের অভাবে সেতুর মাঝে একাধিক জায়গায় ফাটল ধরেছে। কয়েক জায়গায় পিচ ও কংক্রিট উঠে গিয়ে বিপজ্জনক ভাবে লোহার রড বেরিয়ে পড়েছে। ঝাড়গ্রামের বাসিন্দা পর্যটন ব্যবসায়ী সুমিত দত্ত প্রায়ই ব্যবসায়িক কাজে গাড়ি চালিয়ে মেদিনীপুরে যান। সুমিতের কথায়, “সেতুটির ভয়াবহ পরিস্থিতি। লোহার রডে চাকা ফেটে গিয়ে বিপত্তি ঘটছে।” কয়েকদিন আগে এ ভাবেই সেতুর উপর দিয়ে যাওয়ার সময় চাকা ফেটে অল্পের জন্য দুর্ঘটনার হাত থেকে রক্ষা পেয়েছে একটি অ্যাম্বুল্যান্স। তারপরও হুঁশ ফেরেনি পূর্ত দফতরের।
শাসকদলের অভিযোগ, বাম আমলে নিম্নমানের কাজ হওয়ার জন্যই সেতুটি এত তাড়াতাড়ি বেহাল হয়ে পড়েছে। বামেদের পাল্টা অভিযোগ, তৃণমূলের আমলে যথাযথ রক্ষণাবেক্ষণ না হওয়ার কারণেই সেতুটি এমন পরিস্থিতি। পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা পরিষদের পূর্ত কর্মাধ্যক্ষ শৈবাল গিরি বলেন, ‘‘সেতুর উপরের স্তরের আস্তরণ কিছু জায়গায় উঠে গিয়েছে। শীঘ্রই সারিয়ে দেওয়া হবে।''
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy