সেই সিন্দুক। নিজস্ব চিত্র।
মাটিতে অর্ধেক পোঁতা একটা সিন্দুক। তাকে ঘিরেই তোলপাড় সাগরদিঘির মণিগ্রাম। সিন্দুক কেটে চুরির চেষ্টার অভিযোগে সোমবার সন্ধ্যায় পুলিশ তিন জনকে গ্রেফতারও করেছে।
এই এলাকায় এক কালে সাহেবি নীলকুঠি ছিল। তারই কাছারিবাড়িতে পোঁতা ছিল ওই সিন্দুক। তার ভিতরে কী আছে, তা নিয়ে অনেক দিন ধরেই এলাকার মানুষের কৌতূহলের শেষ ছিল না। অনেকেরই ধারণা ছিল, তার মধ্যে হিরে-জহরত না থাকুক, সোনা-রুপোর মোহর নির্ঘাত আছে। কিন্তু এত দিনে কেউ না পেরেছে খুলতে, না পেরেছে মাটি থেকে তুলতে।
কিছু দিন আগে পটল রাজমল্ল নামে এক স্থানীয় বাসিন্দা পড়ে থাকা ওই খাসজমি ঘেরা দিয়ে মাটির ঘর তুলে ফেলেন। ঘরটি তোলা হয়েছিল এমন ভাবেই যাতে সিন্দুকের এক দিক দেওয়ালের ভিতরে ঢুকে থাকে। তার পরেই খেলা শুরু। বাড়িটিতে বাইরে লোকজনের আনাগানো শুরু হয়েছে বলে গ্রামের লোকজন সম্প্রতি লক্ষ করছিলেন। কিন্তু ভিতরে যে গ্যাস কাটার দিয়ে সিন্দুক কাটা শুরু হয়ে গিয়েছে, তা রবিবারের আগে তাঁরা জানতে পারেননি।
পুলিশ সূত্রের খবর, ক’দিন আগে বহরমপুর থেকে দুই যুবক মণিগ্রামে আসেন। হান্নান শেখ ও কৃষ্ণ হালদার নামে ঘূর্ণির ওই দুই যুবক আসলে গ্যাস কাটার চালানোর মিস্ত্রি। বাড়ির মালিকের সঙ্গে তাদের আলোচনা হয়। সকলেই প্রায় নিশ্চিত ছিল যে সিন্দুকের মধ্যে গুপ্তধন আছে, তা না হলে এত ভারী হয় কী করে! তড়িঘড়ি ছক কষা হয়ে যায়। গ্যাস কাটার এনে রবিরার রাতে শুরু হয় সিন্দুক কাটার চেষ্টা। যে অংশ ঘরের মধ্যে ঢুকে রয়েছে, সেই দিকেই হাত গলানোর মতো একটা গর্ত করে ফেলা হয়। যা মোটা লোহার পাত, ওইটুকু ফুটো করতেই দম বেরিয়ে যায় দু’জনের। ইতিমধ্যে পাড়াপড়শি ব্যাপারটা টের পেয়ে গিয়েছিলেন। তাঁরা পুলিশে খবর দেন। পুলিশ এসে তিন জনকেই পাকড়াও করে সাগরদিঘি থানায় নিয়ে যায়। টানা জিজ্ঞাসাবাদের পরে সোমবার রাতে তিন জনকে গ্রেফতার করা হয়।
কিন্তু সিন্দুকে কী মিলল?
পুলিশ বলছে— ফক্কা! এত চেষ্টা করে সিন্দুক কেটে জানা গেল, রহস্য ঠাসা ছিল খালি। সত্যি কিছু নেই।
সত্যি? মানতে পারছেন না মণিগ্রামের কেউ-কেউ। পুলিশ আসার আগেই গুপ্তধন সরিয়ে ফেলেনি তো কেউ? — সন্দেহ যাচ্ছে না অনেকেরই।
এত দিনের জমাট রহস্য এক রাতে উবে গেলে কারই বা ভাল লাগে?
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy