বোমাকে বল ভেবে খেলতে গিয়ে দুই বালকের মৃত্যু হয়েছিল বুধবার সন্ধ্যায়। চাকদহের শিকারপুর মিস্ত্রিপাড়ার সেই ঘটনার সেই শোক এখনও কাটেনি। এরই মধ্যে শুক্রবার সকালে চাকদহের কালীগঞ্জ প্রিয়নগর প্রাথমিক বিদ্যালয়ের আশপাশ থেকে দু’টি তাজা বোমা উদ্ধার হয়েছে। যদিও এই দিনের ঘটনায় কেউ হতাহত হয়নি। এদিনের বোমা উদ্ধারের ঘটনায় এলাকায় আতঙ্ক ছড়িয়েছে। বুধবার প্রিয়নগর স্কুল থেকে সাকুল্যে দুই কিলোমিটার দূরে চাকদহের মিস্ত্রিপাড়ার বোমা ফেটে মৃতু্য হয় শরিফ মিস্ত্রি (১০) ও ইয়ানুর মণ্ডলের (১১)।
প্রিয়নগর প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ১১২ জন পড়ুয়া রয়েছে। এ দিন প্রায় সব পড়ুয়াই স্কুলে এসেছিল। জাতীয় সঙ্গীত গেয়ে ছাত্র-ছাত্রীরা সবে যে যার ক্লাসে গিয়ে বসেছে। একে একে বিভিন্ন শ্রেণিকক্ষে ঢুকছেন শিক্ষকরা। এরই মধ্যে স্কুল চত্বরে বোমা রয়েছে বলে খবর ছড়িয়ে পড়ে। স্থানীয় বাসিন্দা পারুল সাহু বলেন, “আমার স্বামী প্রথমে স্কুল থেকে একটু দুরে এক মোটর বাইক গ্যারেজের কাছে একটি বোমা দেখতে পান। স্কুলের দেওয়ালের পাশেই খানিক পরেই দেখা যায় দ্বিতীয় বোমাটি। সঙ্গে সঙ্গে উনি প্রধান শিক্ষককে বিষয়টি জানান।” প্রধান শিক্ষক বিজয়কৃষ্ণ রায় হন্তদন্ত হয়ে বাইরে এসে দেখেন স্কুলের অদূরেই পড়ে রয়েছে দু’টি বোমা। তিনি সঙ্গে সঙ্গে খবর দেন পুলিশে। পুলিশ এসে বোমা দু’টিকে উদ্ধার করে। পরে নিষ্ক্রিয় করা হয় ওই জোড়া বোমা। ততক্ষণে স্কুল চত্বরে ছড়িয়ে পড়েছে বোমাতঙ্ক। পড়ুয়াদের অভিভাবকরা বিপদের আশঙ্কায় দ্রুত স্কুলে ছুটে আসেন। অনেক অভিভাবকই কালবিলম্ব না করে তাঁদের সন্তানদের সোজা বাড়ি নিয়ে যান। বোমা পড়ে থাকার খবর পাওয়া মাত্রই ছুটে আসেন স্কুল সংলগ্ন এলাকার লোকজনও।
ঘটনার বেশ কয়েক ঘণ্টা পরেও স্কুলের বাচ্চাদের মধ্যে আতঙ্কের রেশ কাটেনি। এ দিন দুপুর বেলা ওই স্কুলে গিয়ে আতঙ্কের ছবিটাই চোখে পড়ল। দেখা গেল, সিংহভাগ পড়ুয়া তাদের বাবা-মায়ের হাত ধরে বাড়ি চলে গিয়েছে। স্কুলে রয়েছে মুষ্টিমেয় ছাত্র-ছাত্রী ও শিক্ষক-শিক্ষিকারা। দেখা গেল, স্কুলে টানা বারান্দার মিড-ডে মিল খাচ্ছে হাতেগোনা কয়েকজন পড়ুয়া। খাবার মুখে তোলার সময় ওই পড়ুয়াদের চোখে-মুখে ভয়ের ছাপ পরিষ্কার। অধিকাংশ পড়ুয়াদের পাশেই দাঁড়িয়ে রয়েছেন তাদের স্বজনেরা। বারান্দায় দেখা মিলল বছর সত্তরের নিতাই বৈরাগ্যর। বোমা উদ্ধারের কথা উঠতেই বৃদ্ধ জানালেন, তাঁর নাতনি এই স্কুলেরই তৃতীয় শ্রেণির ছাত্রী। বোমার কথা শুনেই তিনি নাতনির কথা ভেবে এই অশক্ত শরীরেই তড়িঘড়ি হাজির হয়েছেন স্কুলে।
এই ঘটনার রাজনীতির রং লেগেছে। এলাকায় ঘনঘন বোমা মেলার সিপিএম শাসকদলকে দুষছে। সিপিএমের চাকদহ জোনাল কমিটির সদস্য অসীম সরকার বলেন, “এলাকায় অশান্তি পাকানোর জন্য তৃণমূল আশ্রিত দুষ্কৃতীরা বোমা মজুত করেছে। এটা মানা যায় না।” অভিযোগ উড়িয়ে দিয়ে কল্যাণী ব্লক তৃণমূলের সভাপতি দেবাশিস বিশ্বাস বলেন, “অহেতুক আমাদের বিরুদ্ধে কুৎসা রটাচ্ছে বিরোধীরা।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy