Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪

সাফল্য দেখতে জেলায় কৃষি কমিশনার

জেলায় উন্নত প্রযুক্তির ব্যবহার করে পরীক্ষামূলক ভাবে শুরু হওয়া চাষাবাদের সাফল্য খতিয়ে দেখতে দু’দিনের সফরে মুর্শিদাবাদ ঘুরে গেলেন কেন্দ্রীয় কৃষি কমিশনার জে এস সান্ধু। গত সপ্তাহে শুক্র ও শনিবার খড়গ্রাম, সাগরদিঘি, বহরমপুর, রঘুনাথগঞ্জ ২ ব্লকের একাধিক গ্রাম ঘুরে এই প্রযুক্তিকে গোটা জেলায় ছড়িয়ে দেওয়ার ব্যাপারে জেলার কৃষি, উদ্যান পালন ও ইফকো কর্তাদের সঙ্গে বৈঠকও করেন তিনি।

নিজস্ব সংবাদদাতা
রঘুনাথগঞ্জ শেষ আপডেট: ২৫ অক্টোবর ২০১৪ ০০:৩২
Share: Save:

জেলায় উন্নত প্রযুক্তির ব্যবহার করে পরীক্ষামূলক ভাবে শুরু হওয়া চাষাবাদের সাফল্য খতিয়ে দেখতে দু’দিনের সফরে মুর্শিদাবাদ ঘুরে গেলেন কেন্দ্রীয় কৃষি কমিশনার জে এস সান্ধু। গত সপ্তাহে শুক্র ও শনিবার খড়গ্রাম, সাগরদিঘি, বহরমপুর, রঘুনাথগঞ্জ ২ ব্লকের একাধিক গ্রাম ঘুরে এই প্রযুক্তিকে গোটা জেলায় ছড়িয়ে দেওয়ার ব্যাপারে জেলার কৃষি, উদ্যান পালন ও ইফকো কর্তাদের সঙ্গে বৈঠকও করেন তিনি।

সান্ধু জানান, অবৈজ্ঞানিকভাবে জমির বহুল ব্যবহারের ফলে মাটির স্বাস্থ্য নষ্ট হতে বসেছে। উত্‌পাদন কমছে। কিন্তু বাড়ছে জনসংখ্যা। তাই কৃষি ক্ষেত্রে উন্নত প্রযুক্তির ব্যবহারকে কাজে লাগানোর প্রয়োজন হয়ে পড়েছে। মুর্শিদাবাদে কৃষি, উদ্যান পালন-সহ বিভিন্ন সরকারি দফতরের সমন্বয় ঘটিয়ে ইফকো জেলার ১১টি ব্লকের ৪০টি গ্রামে পরীক্ষামূলক ভাবে বিজ্ঞানসম্মত চাষের ব্যবস্থা করেছে। বর্ষাতি পেঁয়াজ, অসময়ের বাঁধাকপি, ফুলকপি, আপেল, কুল, পানের বরজ, পাট ইত্যাদি উত্‌পাদনে জোর দেওয়া হয়েছে।

ইফকো’র এরিয়া ম্যানেজার পার্থ ভট্টাচার্য বলেন, “চাষিরা মাটি পরীক্ষা না করেই দীর্ঘদিন ধরে চাষাবাদ করে আসছেন। কোন মাটিতে কোন ফসল লাভজনক তা না জেনে যথেচ্ছ ভাবে সার প্রয়োগ করা হচ্ছে। এটা ঠিক নয়।” তিনি জানান নয়া ব্যবস্থায় মাটি পরীক্ষা করে সঠিক সার চিহ্ণিত করে তা জমিতে প্রয়োগ করার ব্যবস্থা হয়েছে। মাটি পরীক্ষার জন্য ইফকোর ভ্রাম্যমান গাড়ি যাচ্ছে গ্রামে। একই মাটিতে বার বার একই ফসলের চাষের বদলে ঘটানো হয়েছে। পুরোনো বীজের বদলে নতুন বীজ ব্যবহার করা হচ্ছে। যেমন মুর্শিদাবাদে এতদিন ধরে যে পাট বীজ ব্যবহার হয়ে এসেছে তা বদলে আনা হয়েছে অন্য উন্নত জাতের বীজ। মাটির অম্লতা দূর করতে চুন প্রয়োগ, জৈব ও রাসায়নিক সারকে পরস্পরের পরিপূরক হিসেবে ব্যবহার করা হয়েছে, বিকল্প হিসেবে নয়। তিনি বলেন, “জৈব সার কিনতে হবে কেন? জমির পাশেই গর্ত খুঁড়ে এই সার তৈরি করে নেওয়া যায়।” সামগ্রিক ভাবে এর ফলে মাটির স্বাস্থ্য অক্ষত রেখে ফসলের উত্‌পাদন বাড়ানো সম্ভব হয়েছে। বর্তমানে ৪০টি গ্রামের তিন হাজার কৃষককে এই চাষের আওতায় আনা হয়েছে। এ বছর আরও ৬টি গ্রামকে এর অন্তর্ভুক্ত করা হবে বলে পার্থবাবু জানান।

জেলার সহকারি কৃষি অধিকর্তা দীনেশ চন্দ্র পাল বলেন, “ওই গ্রামগুলি পুরোপুরি ইফকোর তত্বাবধানে। কৃষি দফতর থেকে প্রযুক্তিগত ভাবে সাহায্য করা হয়েছে। কৃষি কমিশনার নিজে বহু গ্রামেই গিয়ে চাষিদের সঙ্গে কথা বলেছেন। এই ব্যবস্থা আরও বিস্তৃত হলে চাষিরা যে লাভবান হবেন তাতে কোনও সন্দেহ নেই। তাই মুর্শিদাবাদ মডেলের এই সাফল্যকে রাজ্যের সর্বত্র ছড়িয়ে দেওয়ার উপর জোর দেওয়া হচ্ছে।”

উদ্যান পালন দফতরের সহ-উদ্যানবিদ শুভদীপ নাথ বলেন, “বিভিন্ন ফলের বাগানের মধ্যে পড়ে থাকা জমিতে উপযোগী ফসল বোনা হলে উত্‌পাদন অনেকটাই বাড়ানো যাবে। প্রাথমিক ভাবে বর্ষাতি পেঁয়াজ উত্‌পাদনে এ জেলা যথেষ্ট সাফল্য পেয়েছে। পেঁয়াজের দাম এবারে তাই সে ভাবে বাড়েনি।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

farming commissioner raghunathganj
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE