Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪

হাসপাতালে মদের আসর

 ঝুপ করে রাত নামলেই চারপাশ সুনসান হয়ে পড়ার অপেক্ষা। হাসপাতাল চত্বরেই ইতিউতি অন্ধকার দেখে জটলা পাকিয়ে বসে পড়ে কয়েক জন। তার পর প্রায় সারা রাত ধরেই চলতে থাকে মদের আসর।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কোচবিহার শেষ আপডেট: ১৫ জানুয়ারি ২০১৮ ০২:১১
Share: Save:

ঝুপ করে রাত নামলেই চারপাশ সুনসান হয়ে পড়ার অপেক্ষা। হাসপাতাল চত্বরেই ইতিউতি অন্ধকার দেখে জটলা পাকিয়ে বসে পড়ে কয়েক জন। তার পর প্রায় সারা রাত ধরেই চলতে থাকে মদের আসর। দূর থেকে রোগীর আত্মীয়দের সন্দেহ হলেও কেউ কিছু বলে ওঠার সাহস পান না।

কোচবিহার এমজেএন হাসপাতাল থেকে শুরু করে দিনহাটা ও তুফানগঞ্জের মহকুমা হাসপাতালেও এমন অভিযোগ উঠেছে। অভিযোগ, দীর্ঘ দিন ধরে এই অবস্থা চলছে। পর পর কয়েকটি ঘটনায় পুলিশ কয়েক জনকে গ্রেফতারও করেছে। ফলে অভিযোগ যে সঠিক, সে কথাও ইতিপূর্বে প্রমাণিত। প্রশ্ন উঠছে, হাসপাতালের মতো সুরক্ষিত জায়গায় কী ভাবে লাগাতার মদ্যপদের আসর চলছেএ। কেন কর্তৃপক্ষ বা পুলিশ নিরাপত্তা জোরদার করছে না।

কোচবিহারের পুলিশ সুপার ভোলানাথ পাণ্ডে বলেন, “সব হাসপাতালেই চব্বিশ ঘণ্টার পুলিশি নজরদারি রয়েছে। এ ছাড়া কোথাও কোনও অভিযোগ পেলে দ্রুত ব্যবস্থ নেওয়া হয়। ইতিমধ্যেই মদের আসর বসানোর অভিযোগে কয়েক জনকে গ্রেফতারও করা হয়েছে।” কোচবিহার এমজেএন হাসপাতালের সুপার জয়দেব বর্মন জানান, তাঁরা এমন অভিযোগ কিছু দিন আগে পেয়েছিলেন। তার পরেই লিখিত ভাবে পুলিশ কর্তাদের তিনি তা জানান। এই অবস্থায় শনিবার রাতে বহির্বিভাগ থেকে অন্তর্বিভাগে যাওয়ার রাস্তার দিকে দু’জনকে গ্রেফতার করে পুলিশ। সুপার বলেন, “লিখিত ভাবে জানানোর পরে পুলিশের নজরদারি আরও বেড়ে যায়।”

কোচবিহার এমজেএন হাসপাতাল শহরের প্রাণকেন্দ্রে অবস্থিত। প্রতিদিন হাজার হাজার মানুষ সেখানে ভিড় করেন। সকালের দিকে বহির্বিভাগে মানুষের ভিড়ে তিল ধারণের জায়গা থাকে না। অন্তর্বিভাগেও রোগীদের ভিড় থাকে সবসময়। বহির্বিভাগের সামনের রাস্তা মর্গের সামনে দিয়ে বেরিয়ে যায়। আবার বহির্বিভাগ থেকে সরাসরি অন্তর্বিভাগে যাওয়ার রাস্তা রয়েছে। এই দুই জায়গার বেশ কিছুটা অংশে আলো থাকে না। অভিযোগ, ওখানেই মদের আসর বসে। শুধু তাই নয়, দিনের বেলায় সেখানে গাঁজার আসরও বসে। রোগীর আত্মীয়রা অনেকেই সেখান দিয়ে যাতায়াতে অস্বস্তি বোধ করেন।

দিনহাটা হাসপাতালেও বহির্বিভাগের সামনে মদের আসর বসানোর অভিযোগ উঠেছিল। অন্তর্বিভাগের পিছনে বহির্বিভাগ। দিনের বেলা জমজমাট থাকলেও রাতে অনেকটাই নির্জন হয়ে যায়। সেই সুযোগে সেখানে গাড়ি দাঁড় করিয়ে মদের আসর চলছিল। কোনও কোনও সময় আসন পেতে বসেও মদের আসর চলে বলে দাবি। পরে কয়েক জনকে গ্রেফতার করা হয়।

দিনহাটা নাগরিক মঞ্চের সম্পাদক জয়গোপাল ভৌমিক বলেন, “নিরাপত্তা বাড়ানো উচিত। যাতে হাসপাতালে কোনও দুষ্কর্ম না ঘটে।” কোচবিহারের বাসিন্দা ব্লাড ডোনার অর্গানাইজেশনের সম্পাদক রাজা বৈদ্য বলেন, “হাসপাতাল চত্বরে মদ্যপ ও কিছু দুষ্কৃতীর আড্ডার অভিযোগ মাঝে মাঝে ওঠে। এ ক্ষেত্রে দিনে ও রাতে নজরদারি বাড়ানো উচিত।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Alcohol Hospital
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE