বন্ধু: গৌতমের বাড়ি খেতে গিয়ে রবি দাবি করলেন, ত্রিশ বছরের বন্ধুত্বে চিড় ধরেনি। নিজস্ব চিত্র
ঘণ্টা দেড়েক আগেই দলের কাউন্সিলরদের নিয়ে উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী রবীন্দ্রনাথ ঘোষের দফতরে গিয়ে তাদের ওয়ার্ডে বিভিন্ন উন্নয়ন কাজের আলোচনা করে এসেছেন পর্যটন মন্ত্রী গৌতম দেব। তার পরেই বুধবার দুপুরে পর্যটনমন্ত্রীর কলেজ পাড়ার বাড়িতে গিয়ে মধ্যাহ্নভোজ সারলেন উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী। যা নিয়ে শহরে জোর চর্চা শুরু হয়েছে।
চর্চার কারণ, সম্প্রতি দুই মন্ত্রীর দ্বন্দ্ব প্রকাশ্যে চলে এসেছিল। গৌতমবাবুর জমানায় উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন দফতরের কাজ নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিলেন রবিবাবু। সে কথা বিরোধীরাও ব্যবহার করে। তা ভাল ভাবে নেয়নি দলের শীর্ষ নেতৃত্ব।
মুখ্যমন্ত্রীর উত্তরবঙ্গ সফরের সময় দলের উত্তরবঙ্গের দায়িত্বে থাকা পর্যবেক্ষক অরূপ বিশ্বাসের মাধ্যমে দুই মন্ত্রীকে নিয়ে আলোচনায় বসিয়ে বার্তাও দেওয়া হয়, নিজেদের মধ্যে অলিখিত লড়াই বন্ধ না-হলে দলনেত্রী কাউকেই রেয়াত করবেন না। দুই মন্ত্রী অবশ্য বরাবরই দাবি করে আসছেন তাঁদের মধ্যে কোনও মতবিরোধ নেই।
দলের শীর্ষ নেতৃত্ব সতর্ক করার পর তাঁরা যে মিলেমিশেই থাকতে চান, সেই বার্তা দলের কাছে পৌঁছে দিতেই এদিন এক মন্ত্রীর তরফে মধ্যাহ্নভোজনের আমন্ত্রণ এবং অপর মন্ত্রী তা রক্ষা করতে গিয়েছেন বলেই মনে করছেন দলেরই একাংশ।
এ দিন বেলা পৌনে তিনটে নাগাদ পর্যটনমন্ত্রীর বাড়িতে যান রবীন্দ্রনাথবাবু। আধ ঘন্টার মতো ছিলেন। তিনি সুগারের রোগী হওয়ায় খাওয়াদাওয়াতেও সংযম রক্ষা করতে হয়। এ দিন পর্যটনমন্ত্রীর বাড়িতে মধ্যাহ্ন ভোজনে মেনু ছিল সাদামাটাই। ভাত-ডাল, স্যালাড। সঙ্গে কাতলা মাছ ভাজা, ঝোল। পাপড় ভাজা। গৌতমবাবুর স্ত্রী শুক্লা দেবী কলকাতায় ছেলের কাছে। তাই বাড়িতে রান্নার দায়িত্বে থাকা ব্যক্তির উপরেই আয়োজনের ভার ছিল।
পর্যটনমন্ত্রী অবশ্য বিষয়টি একেবারেই ব্যক্তিগত সম্পর্কের বিষয় বলে জানান। শুধু বলেন, ‘‘অন্য কোনও ব্যাপার নেই। পুরনো বন্ধু। অনেক সময়ই কোচবিহার ছেড়ে শিলিগুডিতে এসে থাকতে হয়। বাড়িতে সব সময় তাই খেতেও ডাকতে পারি না। এদিন দুপুরে একটু খেতে ডেকেছিলাম। শরীরের অসুস্থতার জন্যও সব কিছু খেতেও পারে না। মাছ ভাজা দিয়ে খুব সাধারণ ভাবেই খেয়েছে।’’
উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী বলেন, ‘‘বন্ধুর বাড়িতে এসেছি অনেকদিন বাদে। বন্ধু আসতে বলেছে ভালবেসে। একটু খাওয়াদাওয়া করলাম। খুব ভাল লাগল। খুব ভাল রান্না হয়েছে। পছন্দের রান্না করেছে।’’
তাঁর কথায়, ‘‘আমাদের মধ্যে কোনও দ্বন্দ্ব নেই। ভেদ নেই। আমাদের দল এক, নেত্রী এক, পতাকা এক। বন্ধুত্বের হৃদয় এক। ৩০ বছরের বন্ধুত্ব। কী করে আলাদা হব। সংবাদ মাধ্যমই মাঝেমধ্যে আলাদা করে দেয়।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy