Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪

ধরা পড়েনি চিতাবাঘ, আতঙ্কিত স্থানীয়রা

এই ঘটনায় চিতাবাঘের আতঙ্ক আরও জাঁকিয়ে বসেছে বাসিন্দাদের মধ্যে। সোমবার রাতে বনকর্মীরা চিতাবাঘটার খোঁজে তল্লাশি চালানর সময় দু’টি কুকুরের দেহাংশ পান।

খাঁচা: চিতাবাঘ ধরতে ভরসা রাখা হচ্ছে খাঁচাতেই। নিজস্ব চিত্র

খাঁচা: চিতাবাঘ ধরতে ভরসা রাখা হচ্ছে খাঁচাতেই। নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
শিলিগুড়ি শেষ আপডেট: ০৯ মে ২০১৮ ১৩:০৮
Share: Save:

সেবক রোড লাগোয়া কিছু এলাকা থেকে পাওয়া গিয়েছে কুকুরের দেহাংশ। এই ঘটনায় চিতাবাঘের আতঙ্ক আরও জাঁকিয়ে বসেছে বাসিন্দাদের মধ্যে। সোমবার রাতে বনকর্মীরা চিতাবাঘটার খোঁজে তল্লাশি চালানর সময় দু’টি কুকুরের দেহাংশ পান। সেই ঘটনা জানাজানি হতেই মঙ্গলবার সকাল থেকে ওই মার্বেল গুদাম লাগোয়া আমতলা, জ্যোতিনগর, চয়নপাড়ার বাসিন্দারা পথ কুকুরদের খোঁজ শুরু করেন।

তাঁদের দাবি, কয়েকদিনরে মধ্যে এলাকায় পথ কুকুরের সংখ্যা কমে গিয়েছে। চিতাবাঘটা রাতের অন্ধকারে লাগোয়া জঙ্গল থেকে বের হয়ে পথ কুকুরদের তুলে নিয়ে যাচ্ছে। গভীর রাতে স্থানীয় এক বাসিন্দা তা দেখেছেন বলেও দাবি করা হয়েছে, ফলে আতঙ্ক আরও ছড়িয়েছে। বাসিন্দাদের অভিযোগ, ‘‘বনকর্মীদের আরও তৎপর হওয়া দরকার। লোকজনের রাতের ঘুম উড়ে গিয়েছে। যে কোনও সময় তো মানুষের উপর আক্রমণ হতে পারে।’’

এ দিন সেবক রোডের গুদামে নতুন করে দু’টি খাঁচাও পেতেছে বন দফতর। কিন্তু রাত পর্যন্ত চিতাবাঘের কোনও হদিশ নেই। মার্বেলের গুদাম ছাড়াও পাশের পরিবহণ সংস্থার গুদামেও তল্লাশি করা শুরু হয়েছে। দু’টি গুদামের মাঝে একটি পুরনো বন্ধ বাড়ি রয়েছে। বনকর্মীরা জানান, ওই বাড়িটির দেওয়াল এবং সীমানা পাঁচিলে কিছু আঁচড়ের দাগ মিলেছে। বড় গাছপালা, ঝোপে ঘেরা বাড়িটায় চিতাবাঘটা কয়েক দফায় ঢুকেছে। সেখান থেকেই বাড়িটির পাশের একটি দেওয়াল ধরে সেটি টিনের চালে উঠেছে।৩ এপ্রিল ওই পথেই চিতাবাঘটা মার্বেল কারখানার ছাদে উঠে বসেছিল বলে সন্দেহ বনকর্মীদের।

বৈকুন্ঠপুরের বনাধিকারিক উমারানি এন বলেন, ‘‘কয়েকজন অন্ধকারে চিতাবাঘটাকে দেখেছেন বলে দাবি করেছেন। আমাদের কর্মীরা এখনও সেটিকে খুঁজে পায়নি। টানা তল্লাশি চলছে। বাসিন্দাদের কথা শুনে এলাকায় দু’টি খাঁচাও পাতা হয়েছে।’’ গত সপ্তাহে চিতাবাঘটাকে প্রায় ঘণ্টাতিনেক গুদামের ছাদ ও ঝোপে দেখা গিয়েছিল। গভীর রাতে জাল পেতে সেটিকে ধরার চেষ্টা করার আগেই ওই বুনো অন্ধকারে পালিয়ে যায়। তার পরেরদিন, এলাকায় ছাগলের পায়ের অংশ মেলে। মাঝখানে চারদিন চিতাবাঘটার কোনও খোঁজ ছিল না। সোমবার রাতে হঠাৎ ওই গুদামের পিছনে দেখা গিয়েছে বলে কয়েকজন বাসিন্দা দাবি করেন। সেদিনই রাত ১২টা নাগাদ চিতাবাঘটাকে আমতলা, চয়নপাড়ার ফের দেখা গিয়েছে বলে খবর ছড়ায়।

স্থানীয় বাসিন্দা ভারতী রায় বলেন, ‘‘বেশি রাতে কুকুরের দলের আওয়াজে ঘুম ভাঙে। ঘরের বাইরে উঁকি দিতে দেখি দূরে তিনটি কুকুর আর চিতাবাঘ। একটিকে কামড়ে পাশের ঝোপ দিয়ে পালিয়ে যায়। আর দেখা যায়নি।’’ তবে এলাকায় এখনও আর কোনও কুকুরের দেহাংশ মেলেনি। ওই এলাকারই মহাবীর প্রসাদ, শিবশঙ্কর রায়, মালতি বর্মনেরা জানান, কুকুরের লোভে চিতাবাঘ বারবার অন্ধকারে হানা দিচ্ছে। রাস্তার কুকুর কমে যাচ্ছে। বাসিন্দাদের দাবি, চোখ খারাপ হয়ে যাওয়া একটি কুকুর ছিল। সেটিরও দেহাংশ পাওয়া গিয়েছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

cage leopard panic
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE