প্রতীকী ছবি।
খবর ছিল পুলিশের কাছে। তবু লাভ হল না। মই বেঁধে দোতলায় উঠে ফিল্মি কায়দায় প্রাক্তন সেনাকর্মীর বাড়িতে ডাকাতি করে পালাল দুষ্কৃতীরা।
ওই বাড়ি ঘিরে ডাকাতেরা মুড়ি-মুড়কির মতো বোমা, গুলি চালায় বলে অভিযোগ। রবিবার রাতে ইংরেজবাজারের শোভানগরের ব্রাহ্মণ গ্রামের এই ঘটনায় গৃহকর্তা মিহির চৌধুরী গুরুতর জখম অবস্থায় ভর্তি রয়েছেন শহরের এক বেসরকারি নার্সিংহোমে। এ ছাড়া তাঁর স্ত্রী স্মৃতিদেবী, স্কুলশিক্ষক ছেলে সানাই চৌধুরী ও কলেজ পড়ুয়া মেয়ে তৃণা আহত হয়েছেন।
ডাকাতির ঘটনায় পুলিশের ভূমিকায় প্রশ্ন উঠেছে। আক্রান্তের ভাই নেপালবাবু বলেন, “মাস দু’য়েক আগে দাদার বাড়িতে ডাকাতি হতে পারে বলে পুলিশ আগাম আমাদের সতর্ক করেছিল। তার পরে প্রায়ই গ্রামে পুলিশ রাতে টহলদারি চালাত। তবে পুলিশ আগে জেনেও কেন দুষ্কৃতীদের গ্রেফতার করতে পারল না?’’ মালদহের পুলিশ সুপার অর্ণব ঘোষ বলেন, “অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্ত শুরু হয়েছে। দুষ্কৃতীদের খোঁজ চলছে।”
আক্রান্ত মিহিরবাবু দু’দশক আগে সেনাবাহিনীতে চাকরি করতেন। অবসরের পরে এখন তিনি জমি কেনাবেচার ব্যবসাও করেন। তাঁর দুই ছেলে-মেয়ের মধ্যে ছেলে সানাই চৌধুরী প্রাথমিক স্কুলের শিক্ষক। মিহির বাবুরা পাঁচ ভাই হলেও সকলে অন্যত্র থাকেন। নিজের পরিবার নিয়ে গ্রামের ওই দোতলা পাকা বাড়িতে থাকতেন মিহিরবাবু। রবিবার রাত সাড়ে ১১টা নাগাদ জনা তিরিশের ডাকাত দল হানা দেয় তাঁর বাড়িতে। স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, দুষ্কৃতীরা গ্রাম থেকে বাঁশ কেটে মই বাঁধে। তার পরে সেই মই দিয়েই বাড়ির দোতলায় ওঠে।
দোতলায় থাকতেন সানাইবাবু। প্রথমে তাঁকে লোহার রড দিয়ে মারধর করা হয়। তার পরে তাঁর মাথায় আগ্নেয়াস্ত্র ঠেকিয়ে নীচে নিয়ে আসা হয়। বাড়ির প্রতিটি ঘরেই লুঠপাট চালায় দুষ্কৃতীরা। এমনকী, শৌচাগারের মেঝে ভেঙেও দুষ্কৃতীরা তল্লাশি চালায়। সেই সময়ই বাড়ি থেকে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেন মিহিরবাবু। তখন তাঁকে লক্ষ করে দুষ্কৃতীরা বোমা ছুড়লে জখম হন মিহিরবাবু।
স্মৃতিদেবী বলেন, “দুষ্কৃতীরা কিছু টাকা, সোনার অলঙ্কার, মোবাইল ফোন, এটিএম কার্ড নিয়ে পালিয়েছে। ডাকাতেরা যেভাবে বোমা, গুলি চালিয়েছে তাতে আতঙ্ক কাটছে না আমাদের।”
ঘটনাকে কেন্দ্র করে আতঙ্কে রয়েছেন গ্রামবাসীরা। জানা গিয়েছে, দুষ্কৃতীদের প্রত্যেকের হাতেই অস্ত্র ছিল। অনেকেরই মুখ বাঁধা ছিল। দুষ্কৃতীরা বাংলা ও হিন্দিতে কথা বলছিল। দুষ্কৃতীরা পরিকল্পনা করেই ডাকাতি চালিয়েছে বলে প্রাথমিক অনুমান। পঞ্চায়েত সমিতির কর্মাধ্যক্ষ নুর নেহার খাতুন বলেন, “ঘটনাটি খুবই আতঙ্কের। এমন ভাবে বোমাবাজি, গুলি চালিয়ে এখানে ডাকাতির কোনও ঘটনা আগে ঘটেনি। তাই সবাই আতঙ্কিত।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy