Advertisement
২৭ এপ্রিল ২০২৪

দুর্নীতি কাণ্ডে অভিযোগ নবান্নেও

শুক্রবার বিশ্ববিদ্যালয়ের টিচার্স কাউন্সিলের প্রাক্তন নেতা সমর বিশ্বাস ট্রাইবুনাল গঠনের প্রক্রিয়া নিয়ে প্রশ্ন তুলে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দ্বারস্থ হয়েছেন। শুক্রবার তিনি উত্তরকন্যায় গিয়ে ওই চিঠি দেন। সরকারি সূত্রের খবর, সঙ্গে সঙ্গেই তা নবান্নে পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে।

কিশোর সাহা
শিলিগুড়ি শেষ আপডেট: ১১ নভেম্বর ২০১৭ ০৭:৪০
Share: Save:

দুর্নীতির দায়ে বরখাস্ত রেজিস্ট্রার দিলীপ সরকারের শাস্তি পুনর্বিবেচনার চূড়ান্ত প্রক্রিয়া শুরু হতেই উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-কর্মীদের কয়েক জন ফের আসরে নেমেছেন। বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রের খবর, শাস্তি পুনর্বিবেচনার জন্য গঠিত ট্রাইবুনালের চূড়ান্ত পর্বের শুনানি ১৬ ও ১৭ নভেম্বর কলকাতায় হওয়ার কথা। শুক্রবার বিশ্ববিদ্যালয়ের টিচার্স কাউন্সিলের প্রাক্তন নেতা সমর বিশ্বাস ট্রাইবুনাল গঠনের প্রক্রিয়া নিয়ে প্রশ্ন তুলে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দ্বারস্থ হয়েছেন। শুক্রবার তিনি উত্তরকন্যায় গিয়ে ওই চিঠি দেন। সরকারি সূত্রের খবর, সঙ্গে সঙ্গেই তা নবান্নে পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে।

তবে আইনি প্রক্রিয়ার চূড়ান্ত পর্বে এ হেন আশঙ্কা প্রকাশ করে চিঠি দেওয়াটা অনৈতিক বলে মনে করছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের অনেকেই। টিচার্স কাউন্সিলের পদাধিকারীরা কেউ মন্তব্য করতে চাননি। তবে কাউন্সিলের একাধিক কর্তা একান্তে জানিয়েছেন, দিলীপবাবুর শাস্তির বিষয়ে কী সিদ্ধান্ত হবে সেটা ট্রাইবুনাল ঠিক করবে। তার মুখে বিশ্ববিদ্যালয়ের মতো স্বশাসিত সংস্থার ব্যাপারে সরাসরি মুখ্যমন্ত্রীকে হস্তক্ষেপ করতে বলাটা ঠিক হয়নি বলে কাউন্সিলরের অনেকেই একান্তে জানিয়েছেন। উপরন্তু, ট্রাইবুনাল গঠনের জন্য দিলীপবাবু আচার্য তথা রাজ্যপালের কাছে আর্জি জানিয়েছিলেন। সেই মতো তা গঠিত হয়েছে। সেখানে একজন শিক্ষক কী ভাবে আচার্যের সিদ্ধান্তের বিরোধিতা করেন, তা নিয়েও বিশ্ববিদ্যালয়ে চলছে নানা আলোচনা।

যদিও টিচার্স কাউন্সিলের প্রাক্তন কর্তা তথা বিশ্ববিদ্যালয়ের নৃতত্ত্ব বিভাগের বর্তমান প্রধান সমরবাবু বলেন, ‘‘মুখ্যমন্ত্রী যে কোনও দুর্নীতির বিরুদ্ধে কড়া পদক্ষেপ করেন। এ ক্ষেত্রে ট্রাইবুনাল গঠন থেকে যা হতে চলেছে, তা মুখ্যমন্ত্রীর অগোচরে হচ্ছে বলে মনে হয়। সে জন্য ওঁর নজরে এনে হস্তক্ষেপ চেয়েছি।’’ সমরবাবুকে আড়াল থেকে সমর্থন করছেন অধ্যাপক, শিক্ষকদের কয়েক জন। কিন্তু, কেউই প্রকাশ্যে মুখ খুলতে চাইছেন না।

প্রায় ৫ বছর সাসপেনশনে থাকার পরে ২০১৬-র জানুয়ারিতে কর্মসমিতি দিলীপবাবু বরখাস্ত করে। তখন সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ মেনে দিলীপবাবু শাস্তি যথার্থ হয়নি জানিয়ে আচার্যের কাছে ট্রাইবুনাল গঠন করে পুনর্বিবেচনার আর্জি জানান। তা গঠন নিয়ে টালবাহানা চলে অভিযোগ দিলীপবাবুর কয়েক জন অনুগামীর। পরে ২০১৬-র নভেম্বরে ট্রাইবুনাল গঠিত হয়।, গত অক্টোবরে শিলিগুড়িতে শুনানির সময়েও বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ দুর্নীতির পক্ষে প্রামাণ্য নথিপত্র পেশ করতে পারেননি। বেসরকারি অডিটের ভিত্তিতে এফআইএরের সিদ্ধান্ত নিয়েও প্রশ্ন ওঠে ট্রাইবুনালে। এর পরেই ৩ সদস্যের ট্রাইবুনাল দ্রুত পুনর্বিবেচনা প্রক্রিয়া সম্পূর্ণ করার উপরে জোর দেয়। টিচার্স কাউন্সিলের তরফে যেখানে সরকারি ভাবে কোনও আপত্তি নেই, সেখানে একজন প্রাক্তন কর্তা কী উদ্দেশ্যে মুখ্যমন্ত্রীকে চিঠি দিচ্ছেন, তা নিয়ে তদন্তের দাবি তুলেছেন অনেকেই। বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন প্রাক্তন বিভাগীয় প্রধান জানান, দিলীপবাবুর পুনর্বিবেচনা চাওয়ার অধিকার বিশ্ববিদ্যালয়ের সংবিধান সম্মত।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE