কোচবিহার এমজেএন স্টেডিয়ামে চলছে প্রবীণদের ক্রীড়া প্রতিযোগিতা।নিজস্ব চিত্র
দৌড় শুরুর আগে মাঠের এককোণে দাঁড়িয়ে পিঠ মালিশে ব্যস্ত ৭৩ বছরের সাদা চুলের এক ‘যুবক’। খানিকটা দূরে জ্যাভেলিন হাতে দৌড়চ্ছেন যিনি, তাঁরও বয়স ৬৫ পেরিয়েছে। বার্দ্ধক্য তাঁদের কাবু করতে পারেনি। রবিবার কোচবিহারে আয়োজিত ক্রীড়া প্রতিযোগিতায় অংশ নিয়ে মাঠ দাপালেন উত্তরবঙ্গের এমন অনেকে।
কোচবিহারের আইটিআই মোড়ের বাসিন্দা সুবোধ বর্মন অবসরপ্রাপ্ত এনবিএসটিসি কর্মী। ৭৩ বছরের সুবোধবাবু দৌড় প্রতিযোগিতার অন্যতম পরিচিত মুখ। প্রবীণদের ১০০ মিটার দৌড়ে একাধিকবার বিদেশের মাঠেও নেমেছেন তিনি। এ দিন দৌড়ের একটি ইভেন্টে প্রথম পুরস্কারও পেয়েছেন। সুবোধবাবু বলেন, “দুই ছেলেই চাকরি সূত্রে বাইরে থাকে। এই বয়সে নিজেকে ফিট রাখতে, আনন্দে রাখতে খেলার মাঠই আমার ভরসা।’’ এখনও প্রতিদিন নিয়ম করে তিনি অনুশীলন করেন বলে জানালেন তিনি। জ্যাভেলিন ছোড়ায় পারদর্শী আশিস অধিকারী অবসরপ্রাপ্ত রেলকর্মী। দৌড়েও অংশ নিয়েছেন তিনি। কিছুদিন আগে আলিপুরদুয়ারে ৪০ বছর ও তার বেশি বয়সীদের ব্যাডমিন্টনে যোগ দিয়ে রানার্সও হয়েছিলেন তিনি। তিনি বলেন, ‘‘খেলার সময় দর্শকদের বলতে শুনেছি, দারুণ খেলছে। শরীরও ফিট। এটাই বড় প্রাপ্তি।’’
উদ্যোক্তারা জানান, ৫০টির বেশি ইভেন্টে শতাধিক প্রতিযোগী যোগ দেন। তাঁরা সকলেই জানালেন, ‘ফিট রাখছে মাঠ।’ এক মহিলা প্রতিযোগী রাধা সরকার বলেন, “টানা ৫ বছর অনুশীলন করছি।’’ ঘর সামলানোর পরে খেলাই তাঁর আনন্দ বলে জানান তিনি। আয়োজক সংস্থার সম্পাদক করেন্দ্র বর্মন জানান, সত্তর বা তার বেশি বয়সীদের জন্য নির্ধারিত বিভাগ ছিল। ৪০ বছর বা তার বেশি বয়সীদের জন্য নির্ধারিত বিভাগ ছিল। ছিল মহিলাদের আলাদা বিভাগও। প্রতিযোগিতার উদ্বোধক উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী রবীন্দ্রনাথ ঘোষও প্রবীণদের এমন উদ্যোগে উচ্ছ্বসিত। তিনি বলেন, “শরীর সুস্থ রাখতে বয়স যে কোনও বাধা হতে পারে না, তা ওই প্রবীণেরা প্রমাণ করছেন।’’ নতুন প্রজন্ম এসব দেখে খেলাধূলায় উৎসাহ পাবেন বলে মন্ত্রীর ধারণা। অনুষ্ঠানে ছিলেন কোচবিহারের সাংসদ পার্থপ্রতিম রায়ও।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy