Advertisement
২৭ এপ্রিল ২০২৪

মুখ্যমন্ত্রীর নিরাপত্তার পাঠ জেলায়

হেমতাবাদ-কাণ্ডের জেরে মুখ্যমন্ত্রীর সফরের সময়ে নিরাপত্তা বলয় আরও আঁটোসাটো করতে প্রতি জেলা থেকে বাছাই ১৫ জন পুলিশ ও গোয়েন্দাকর্মীকে বিশেষ প্রশিক্ষণের প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। সরকারি সূত্রের খবর, মুখ্যমন্ত্রীর নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা ‘স্পেশাল সিকিউরিটি ইউনিট’ (এসএসইউ) ওই প্রশিক্ষণ দেবে।

বিব্রত: হেমতাবাদে মুখ্যমন্ত্রীর নিরাপত্তা বেষ্টণী পার করে সভামঞ্চেই উঠে পড়েন রাবেয়া খাতুন। তাতে বিব্রত হন পুলিশকর্তারা। ফাইল চিত্র

বিব্রত: হেমতাবাদে মুখ্যমন্ত্রীর নিরাপত্তা বেষ্টণী পার করে সভামঞ্চেই উঠে পড়েন রাবেয়া খাতুন। তাতে বিব্রত হন পুলিশকর্তারা। ফাইল চিত্র

কিশোর সাহা
শিলিগুড়ি শেষ আপডেট: ১০ মার্চ ২০১৮ ০২:৫৭
Share: Save:

হেমতাবাদ-কাণ্ডের জেরে মুখ্যমন্ত্রীর সফরের সময়ে নিরাপত্তা বলয় আরও আঁটোসাটো করতে প্রতি জেলা থেকে বাছাই ১৫ জন পুলিশ ও গোয়েন্দাকর্মীকে বিশেষ প্রশিক্ষণের প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। সরকারি সূত্রের খবর, মুখ্যমন্ত্রীর নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা ‘স্পেশাল সিকিউরিটি ইউনিট’ (এসএসইউ) ওই প্রশিক্ষণ দেবে। সে জন্য সব জেলা থেকে প্রথম পর্যায়ে তালিকা রাজ্যের নিরাপত্তা অধিকর্তার কাছে পৌঁছে গিয়েছে। উত্তরবঙ্গের এক পুলিশ কর্তা জানান, ইন্সপেক্টর, এসআই, এএসআই ও কনস্টেবলদের তালিকা ধরে শীঘ্রই প্রশিক্ষণ শুরু হওয়ার কথা।

পুলিশ ও গোয়েন্দা সূত্রেই জানা গিয়েছে, এতদিন মুখ্যমন্ত্রীর নিরাপত্তা বলয়ের ‘ডি-জোন’ মানে সভামঞ্চ পুরোপুরি এসএসইউ ঘিরে রাখে। সেখানে জেলা পুলিশের গোয়েন্দা কিংবা পুলিশ অফিসারদের যেতেও অনুমতি দরকার হয়। কিন্তু, তার বাইরের তিনটি বলয়ের দায়িত্বে থাকেন জেলা পুলিশের অফিসার ও গোয়েন্দারা। যেমন, হেমতাবাদে ডি-জোন যেখানে শেষ হচ্ছে, সেই সভা প্রাঙ্গণের দায়িত্বে ছিলেন জেলা পুলিশের অফিসার ও কয়েকজন কনস্টেবল ও সাদা পোশাকের গোয়েন্দারা। সভাস্থলের সামনে কন্যাশ্রী প্রাপকদের মধ্যে দিয়ে বাঁশের ব্যারিকেডের ফাঁক গলে রাবেয়া খাতুন ও তাঁর বোন মঞ্চের দু’দিক দিয়ে ওঠার চেষ্টা করেন। একজনকে এসএসইউ আটকে দেয়। আরেকজন সটান মঞ্চে উঠে পড়েন। ঘটনার পরে প্রাথমিক তদন্তে দু’জন দায়িত্বপ্রাপ্ত কনস্টেবলের বিরুদ্ধে কর্তব্যে গাফিলতির অভিযোগে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। একজন ইন্সপেক্টরকে শো কজ করা হয়েছে।

তদন্তকারী উচ্চ পদস্থ অফিসাররা দেখেছেন, এসএসইউয়ের যাঁরা ডি-জোনে থাকেন, তাঁদের সঙ্গে জেলা পুলিশের দায়িত্বপ্রাপ্তদের সমন্বয় আরও ভাল থাকলে, এমন ঘটা সহজ হতো না। এরপরেই ভিআইপিদের নিরাপত্তার কাজের সময়ে কোন বিষয়ে কতটা সতর্ক থাকতে হবে তা নিয়ে জেলা পুলিশের বাছাই অফিসার-কর্মীদের আরও প্রশিক্ষিত করার উপরে জোর দেন বিশেষজ্ঞরা। যাতে ডি জোনে থাকা এসএসইউ-এর অফিসার-কর্মীদের সঙ্গে বোঝাপড়া আরও ভাল হতে পারে। তাই প্রতিটি জেলা থেকে বাছাই ১৫ জনকে চিহ্নিত করে প্রশিক্ষণের রূপরেখা তৈরি হয়।

সরকারি সূত্রেই জানা গিয়েছে, ওই প্রশিক্ষণ পর্ব পুরোপুরি শেষ না হওয়া অবধি এসএসইউয়ের তরফে আগাম জেলায় গিয়ে দায়িত্বপ্রাপ্ত জেলা পুলিশের অফিসার-কর্মীদের সঙ্গে বোঝাপড়া বাড়ানো হবে। এতদিন মুখ্যমন্ত্রী থাকাকালীন ডি-জোনের পরের বলয়ে জেলার অফিসার-গোয়েন্দারা কী ভাবে কাজ করবেন, তা জেলা পুলিশের কর্তারাই ঠিক করে দিতেন। এখন থেকে এসএসইউয়ের তরফেই মুখ্যমন্ত্রী থাকাকালীন ওই বাছাই অফিসারদের কার কী দায়িত্ব তা ঠিক করে দেওয়া হবে। সে ক্ষেত্রে অবশ্য সংশ্লিষ্ট এসপি, ডিআইজি, আইজিদের সঙ্গে আলোচনা সাপেক্ষেই পদক্ষেপ করবে এসএসইউ।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE