এনজেপি রেল স্টেশনের চার নম্বর প্ল্যাটফর্মে দাঁড়িয়ে থাকা হলদিবাড়ি এক্সপ্রেসের একটি কামরায় এক ভবঘুরে কিশোরীকে ধর্ষণের অভিযোগ উঠেছে।
মাস দুয়েক আগে রাতের অন্ধকারের ওই ঘটনা ঘটেছে বলে অভিযোগ। স্টেশন চত্বরে এ নিয়ে কিছু দিন ধরেই নানা কানাঘুঁষো চলছিল। কিন্তু বিষয়টি নিয়ে পুলিশ তেমন মাথা ঘামায়নি। সম্প্রতি ভবঘুরে ও পথশিশুদের নিয়ে কাজ করা একটি স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন আসরে নামতেই রেল পুলিশের টনক নড়ে। শুক্রবার বিকেলে কিশোরীকে সঙ্গে নিয়ে সংগঠনের পক্ষ থেকে ধর্ষণের অভিযোগ দায়ের হয় এনজেপি জিআরএপি থানায়। পকসো ধারায় মামলা দায়ের করে পুলিশ এবং সঙ্গে সঙ্গেই ধর্ষণে অভিযুক্ত যুবককে গ্রেফতার করা হয়।
চন্দন নামের ওই যুবক সাউথ কলোনি লাগোয়া এলাকার বাসিন্দা। রেল পুলিশ জানায়, ওই কিশোরী ও ধৃতকে মেডিক্যাল পরীক্ষার জন্য রেলওয়ে হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। প্রাথমিক তদন্তে পুলিশের দাবি, ওই যুবক দীর্ঘদিন ধরেই কিশোরীটিকে নানাভাবে উত্যক্ত করছিল। রেল পুলিশের পক্ষ থেকে এনজেপি স্টেশন ও লাগোয়া এলাকায় রাতে বাড়তি নজরদারি ও আলোর ব্যবস্থা করার জন্য অনুরোধ করা হয়েছে। উত্তর পূর্ব সীমান্ত রেলের এক শীর্ষ অফিসার বলেন, ‘‘উদ্বেগজনক ওই ঘটনার কথা শোনার পরে অতিরিক্ত নজরদারির জন্য রেল রক্ষী বাহিনী ও রাতে কর্তব্যরত রেলকর্মীদেরও সতর্ক করা হয়েছে।’’
পুলিশ সূত্রের খবর, এনজেপি স্টেশনে ২০-২৫ জনের একটি ভবঘুরে শিশু-কিশোরের দল রয়েছে। এরা কখনও যাত্রীদের ফেলে দেওয়া খাবার কুড়োতে রেললাইন ধরে ঘুরপাক খায়। কখনও ট্রেনের সব যাত্রী নেমে গেলে ফাঁকা কামরায় উঠে বোতল কুড়িয়ে বিক্রি করে। কখনও কাগজ কুড়িয়ে বিক্রি করে। রাতটা কখনও প্ল্যাটফর্মে কিংবা স্টেশনের অদূরে ‘সাইডিং’-এ থাকা ট্রেনের কামরায় রাত কাটায়। এদের মধ্যে বেশ কয়েকজন মাদকাসক্তও হয়ে পড়েছে। নির্যাতিতা কিশোরীও মাদকাসক্ত বলে পুলিশের সন্দেহ।
পুলিশ জেনেছে, ওই কিশোরী সহ কয়েকজন মাঝেমধ্যেই রেল রক্ষী বাহিনীর নজর এডিয়ে ফাঁকা ট্রেনে উঠে রাত কাটায়। সেই সুযোগ কাজে লাগিয়েই কিশোরীকে ধর্ষণ করা হয়েছে বলে অভিযোগ। স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন সূত্রের খবর, ঘটনার পরে ভবঘুরে শিশু-কিশোরদের কয়েকজন তা নিয়ে চেঁচামেচি করে। কিন্তু, গোড়ায় পুলিশের তরফে বিষয়টিকে গুরুত্ব দেওয়া হয়নি বলে অভিযোগ। এর পরে স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন খবর পেয়ে কিশোরীর পাশে দাঁড়ায়। সূত্রের খবর, তখনই কিশোরীটি অত্যাচারের বর্ণনা দিতে গিয়ে কান্নায় ভেঙে পড়ে। মেডিক্যাল পরীক্ষার পরে ওই কিশোরীকে কোনও সরকারি হোমে রাখার জন্য উদ্যোগী হয়েছে সংস্থাটি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy