Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪
কম বয়সী নয় কেন, প্রশ্ন

সিপিএমের ভরসা সেই ৬৩-র ‘তরুণ’

গত লোকসভা উপ নির্বাচনের ফলাফলে কোচবিহারে বামেদের স্থান ছিল তৃতীয়। দ্বিতীয় হয়ে জেলায় শক্তি বাড়াতে শুরু করে বিজেপি। এই অবস্থায় সিপিএম ছেড়ে অনেকেই তৃণমূল এবং বিজেপিতে যোগ দেয়। ফলে সংগঠন একরকম ভেঙে পড়ে।

মালদহ জেলা সম্মেলনের আগে প্রকাশ্য সমাবেশে সিপিএম সাংসদ মহম্মদ সেলিম। নিজস্ব চিত্র

মালদহ জেলা সম্মেলনের আগে প্রকাশ্য সমাবেশে সিপিএম সাংসদ মহম্মদ সেলিম। নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
কোচবিহার শেষ আপডেট: ১৪ জানুয়ারি ২০১৮ ০২:৫৯
Share: Save:

দু’জনই ষাটোর্ধ্ব। একজন সিপিএমের প্রাক্তন জেলা সম্পাদক তারিণী রায়। আরেকজন দলের নতুন জেলা সম্পাদক অনন্ত রায়। দলে তরুণ মুখ আনার বদলে কেন তারিণীবাবুকে সরিয়ে অনন্তবাবুকে সম্পাদকের দায়িত্ব দেওয়া হল, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে সিপিএমের অন্দরেই। সিপিএম জেলা নেতৃত্ব অবশ্য এই যুক্তিকে আমল দিতে নারাজ। ৬৮ বছরের তারিণীবাবু বলেন, “অনন্ত আমার থেকে পাঁচ বছরের ছোট। আমরা তরুণদের কথাই ভাবছি। আলোচনা করেই আমরা সব ঠিক করেছি। এ বারের জেলা কমিটিতে অনেক তরুণ নেতাকে তুলে আনা হয়েছে।’’ আর অনন্তবাবুর কথায়, “রাজ্য কমিটি এ বারে গড় হিসেবে বয়স যাদের কম তাঁদেরই দায়িত্বে এনেছে। অনেক আলোচনার পরেই কমিটি গঠন হয়েছে। অনেক তরুণ মুখ জেলা কমিটিতে আছে। আগামী দিনে দল জেলায় আরও শক্তিশালী হয়ে উঠবে।”

তবে নিচুতলার কর্মীদের অনেকেই মনে করছেন, একদিকে রাজ্যের শাসক দল তৃণমূল, আরেকদিকে বিজেপির উঠে আসা। এই কঠিন সময়ে যেখানে সিপিএমের সংগঠন ক্রমশই দুর্বল হচ্ছে তখন ঘুরে দাঁড়াতে কেন ভাবা হল না কোনও তরুণ নেতার নাম। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক দলের এক জেলা নেতার কথায়, “বর্ষীয়ান নেতারা থাকতে একবারে তরুণদের কাউকে জেলা সম্পাদক করার পক্ষে কেউ নন। সেক্ষেত্রে দল চালাতে প্রতিপদে বিচক্ষণতার অভাব সামনে আসবে।”

গত লোকসভা উপ নির্বাচনের ফলাফলে কোচবিহারে বামেদের স্থান ছিল তৃতীয়। দ্বিতীয় হয়ে জেলায় শক্তি বাড়াতে শুরু করে বিজেপি। এই অবস্থায় সিপিএম ছেড়ে অনেকেই তৃণমূল এবং বিজেপিতে যোগ দেয়। ফলে সংগঠন একরকম ভেঙে পড়ে। অভিযোগ, তারিণীবাবু জেলা সম্পাদক থাকার সময়ে সিপিএমের তেমন কোনও কর্মসূচি বা প্রচার জেলা জুড়ে লক্ষ্য করা যায়নি। এই অবস্থায়, দলের বর্ষীয়ান নেতা হিসেবে সামনের সারিতে চলে আসেন অনন্তবাবু। অনন্তবাবু বাম আমলে মন্ত্রীও ছিলেন। তিনি দক্ষ সংগঠক হিসেবেও পরিচিত। বিশেষ করে অনন্তবাবুর গ্রামের বাড়ি কোচবিহার ২ নম্বর ব্লকে খোল্টা এলাকায় এখনও সিপিএমের কিছুটা সংগঠন রয়েছে। সাম্প্রতিক কালে দলের কাজকর্ম নিয়ে সামনের সারিতে দেখা গিয়েছে তরুণ নেতা মহানন্দ সাহাকে। তিনি জেলা সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য হিসেবে রয়েছে। এ ছাড়াও তারাপদ বর্মন, বিশ্বনাথ চৌধুরী সহ বেশ কয়েকজন নেতা সম্পাদক হওয়ার মতো যোগ্যতা রাখেন বলেও দলের অনেকে মনে করেন।

তরুণ এক নেতার কথায়, “জেলা কমিটিতে এ বারে ১২ জন তরুণ মুখ আনা হয়েছে। এটা ভাল দিক। কিন্তু কমবয়সের কাউকে জেলা সম্পাদক করা হলে লড়াই আরও তীব্র করা যেত।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

CPI(M) CPM Mohammed Salim
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE