Advertisement
০৫ মে ২০২৪

বোমা-কাণ্ডে গ্রেফতার

নেতাজি ইন্ডোর স্টেডিয়াম থেকে রাজ্য সরকারের দেওয়া ক্লাবের জন্য দু’লক্ষ টাকার চেক নিয়ে ফেরার পথে মাঝরাস্তায় পুলিশের হাতে গ্রেফতার হলেন তৃণমূলের এক অঞ্চল সভাপতি।

বিষ্ণুপুর আদালতে তৃণমূল নেতা গোলাম মোস্তাফা তরফদার।

বিষ্ণুপুর আদালতে তৃণমূল নেতা গোলাম মোস্তাফা তরফদার।

নিজস্ব সংবাদদাতা
পাত্রসায়র শেষ আপডেট: ২২ ফেব্রুয়ারি ২০১৭ ০০:২৯
Share: Save:

নেতাজি ইন্ডোর স্টেডিয়াম থেকে রাজ্য সরকারের দেওয়া ক্লাবের জন্য দু’লক্ষ টাকার চেক নিয়ে ফেরার পথে মাঝরাস্তায় পুলিশের হাতে গ্রেফতার হলেন তৃণমূলের এক অঞ্চল সভাপতি। পাত্রসায়র ব্লকের বিউর বেতুর গ্রাম পঞ্চায়েতের ওই নেতা গোলাম মোস্তাফা তরফদারকে পুলিশ বোমা বিস্ফোরণ কাণ্ডে এবং দলীয় এক কর্মীকে গুলি করার ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে গ্রেফতার করে। ওই এলাকায় কয়েকদিন আগে বোমা বাঁধতে গিয়ে একজনের মৃত্যু হয়েছে বলে পুলিশের দাবি।

জেলা পুলিশের এক কর্তা বলেন, ‘‘বর্ধমান জেলার পালসিট টোল প্লাজা থেকে আমাদের তদন্তকারী দল সোমবার বিকেলে গোলাম মোস্তাফা তরফদারকে গ্রেফতার করে। তাঁর বাড়ি পাত্রসায়রের আলিপুর গ্রামে। ওই গ্রামেই একটি বাড়িতে বোমা বিস্ফোরণ হয়েছিল।’’ পুলিশের দাবি, গোলামের তত্ত্বাবধানে তাঁরই এক আত্মীয়ের বাড়িতে বোমা বাঁধা চলছিল। কী উদ্দেশ্যে বোমা বাঁধা হচ্ছিল, কারা কারা যুক্ত তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। বিষ্ণুপুর আদালতে মঙ্গলবার অভিযুক্তকে তোলা হলে, বিচারক তাকে ১৪ দিন জেলহাজতে রাখার নির্দেশ দেন।

গত ১০ ফেব্রুয়ারি দুপুরে আলিপুরের একটি পরিত্যক্ত বাড়িতে বোমা বাঁধা চলছিল। পুলিশ গিয়ে ঘটনাস্থল থেকে কাউকে ধরতে না পারলেও কিছু বোমা ও বোমা তৈরির সরঞ্জাম বাজেয়াপ্ত করে। এর কয়েকদিন পরে বাঁকুড়া মেডিক্যালে ঝলসে যাওয়া একটি দেহ পাওয়া যায়। তদন্তে পুলিশ জানতে পারে, ওই ব্যক্তি সোনামুখী থানা এলাকার বাসিন্দা। তিনি ওই বোমায় জখম হয়ে মারা যান। বোমা বিস্ফোরণের কয়েকদিন আগে পাত্রসায়রেরই কাঁটাদিঘি এলাকায় দুপুরে বাড়ি ফেরার পথে গুলিবিদ্ধ হন এক তৃণমূল কর্মী।

পাত্রসায়রে তৃণমূল নেতাদের মধ্যে গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব দীর্ঘদিনের। বোমাবাজি ও গুলি চালানোর ঘটনাতে তৃণমূলেরই গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের কথা সামনে এসেছিল। এ দিন গোলামের গ্রেফতারিতেও সেই ছায়া দেখছেন তাঁর ঘনিষ্ঠেরা। এ দিন বিষ্ণুপুর আদালতে ধৃত গোলাম মোস্তাফা তরফদার দাবি করেন, ‘‘বেতুর ওয়েলফেয়ার সোসাইটির সম্পাদক আমি। নেতাজি ইন্ডোর স্টেডিয়ামে ক্লাবের জন্য পাওয়া দুই লক্ষ টাকার চেক নিয়ে ফিরছিলাম। পুলিশ শুধু শুধু মিথ্যা অভিযোগে আমাকে ধরেছে।’’ বিষ্ণুপুর আদালতে উপস্থিত বিউর বেতুর গ্রাম পঞ্চায়েতের উপপ্রধান হারাধন মল্লিক সরাসরি দাবি করেছেন, ‘‘আমাদের অঞ্চল সভাপতি গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের শিকার। বিস্ফরণেক দিন অঞ্চলের উন্নয়ন নিয়ে তাঁর সঙ্গে আমার আলোচনা চলছিল। তিনি কোনও ভাবেই ওই ঘটনায় জড়িত নয়। গুলি করার ঘটনাতেও তাঁকে ফাঁসানো হয়েছে।’’ বিষ্ণুপুর আদালতে বেতুর ওয়েলফেয়ার সোসাইটির প্রচুর সদস্য হাজির ছিলেন।

তৃণমূলের ব্লক সভাপতি স্নেহেশ মুখোপাধ্যায় দাবি করেন, ‘‘গোলাম আমাদের দলের একজন ভাল কর্মী। ওই এলাকায় কিছু লোক ডাকাতির উদ্দেশ্যে বোমা বাঁধছিল বলে শুনেছি। গোলাম কেন ওই ঘটনায় জড়াতে যাবে?’’ তাঁর পাল্টা দাবি, বিজেপি, কংগ্রেস ও সিপিএমের লোকজনের সঙ্গে তৃণমূলের কয়েকজন এলাকায় অশান্তির জন্য ষড়যন্ত্র করছে। তা শুনে সিপিএমের বাঁকুড়া জেলা সম্পাদক অজিত পতির কটাক্ষ, ‘‘তৃণমূলের লোকেরাই অশান্তি পাকাচ্ছে। আর সরকার বোমা বাঁধায় যুক্ত লোকজনকে উৎসাহ দিতে অনুদান দিচ্ছে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Bomb Explosion Case
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE