Advertisement
১৮ মে ২০২৪
Delhi Diary

দিল্লি ডায়েরি: তাপপ্রবাহেও ছুটছে মোদীর প্রচার-ঘোড়া

তেলঙ্গানার করিমনগরে প্রবীণ বিজেপি নেতা এবং লোকসভা প্রার্থী বন্দী সঞ্জয় কুমার প্রতিটি জনসভায় প্রত্যেককে একটি ফ্রেমবন্দি ছবি দিচ্ছেন।

প্রচার: গুজরাতের হিম্মতনগরে একটি নির্বাচনী জনসভায় নরেন্দ্র মোদী।

প্রচার: গুজরাতের হিম্মতনগরে একটি নির্বাচনী জনসভায় নরেন্দ্র মোদী।

অগ্নি রায়, প্রেমাংশু চৌধুরী
শেষ আপডেট: ০৫ মে ২০২৪ ০৮:৩৭
Share: Save:

দেশ জুড়ে প্রবল তাপপ্রবাহের মধ্যে দৈনিক চারটি করে জনসভা করছেন নরেন্দ্র মোদী। শুরুর দিকে যতটা তাজা তাঁর কণ্ঠস্বর, দিনের শেষ পর্বে স্বাভাবিক ভাবেই আর ততটা নয়। মাইক্রোফোনের সামনে রাখা জলের গেলাসে চুমুক দিচ্ছেন বক্তৃতার ফাঁকে। তবুও এই তিয়াত্তরেও তাঁর উদ্দীপনা তেত্রিশের। গলার ওঠা পড়া, স্বর বদলে কোনও খামতি নেই। শ্লেষের সময় গলা খাদে নামিয়েও তীক্ষ্ণ, ‘ভারতমাতা কি জয়’ স্লোগানে তীব্র— বাচিক শিল্পীদের হার মানানোর মতো। যে রাজ্যে যাচ্ছেন সেখানকার ঐতিহ্যের চিহ্ন পোশাকে। প্রথম বাক্যগুলি বলছেন আঞ্চলিক ভাষায়। কংগ্রেস তথা বিরোধী দলগুলিকে আক্রমণের পাশাপাশি দর্শক শ্রোতাদের সঙ্গেও সরাসরি সংযোগ করছেন। সামনে দাঁড়ানো বাচ্চাকে বলছেন, “তুমি এ বার প্ল্যাকার্ডটা (মোদীর) নামিয়ে দাও, হাতে ব্যথা হয়ে যাবে!” এসপিজি-কে বলছেন, “ওর ঠিকানা নিন, চিঠি লিখব।” ভিড়ের মধ্যে কাউকে বলছেন, “ও-ভাবে পোস্টার নাড়াবেন না, পিছনের মানুষের অসুবিধা হচ্ছে!” প্রতিটি সভার শেষে জনতাকে সম্বোধন করে বলছেন, “আমার একটা ব্যক্তিগত কাজ করে দেবেন? যে যার গ্রামে ফিরে গিয়ে সবাইকে বলবেন মোদী এসেছিল। সবাইকে নমস্কার জানিয়েছে!”

নরেন্দ্র এবং রামচন্দ্র

২০২৪ লোকসভা নির্বাচনের সমস্ত খবর জানতে চোখ রাখুন আমাদের 'দিল্লিবাড়ির লড়াই' -এর পাতায়।

চোখ রাখুন

মোদীর পাশাপাশি এ বারে বেশ কিছু বিজেপি নেতার প্রচারে বড় জায়গা করে নিয়েছেন রামচন্দ্র। তেলঙ্গানার করিমনগরে প্রবীণ বিজেপি নেতা এবং লোকসভা প্রার্থী বন্দী সঞ্জয় কুমার প্রতিটি জনসভায় প্রত্যেককে একটি ফ্রেমবন্দি ছবি দিচ্ছেন। রাম এবং রামমন্দিরের ছবিটির এক কোণে মোদী এবং প্রার্থীর ছোট ছোট দু’টি মুখ। জানা গিয়েছে, এখনও পর্যন্ত পাঁচ লাখ ছবি ভোটারদের মধ্যে বিতরণ করেছেন বন্দী সঞ্জয় কুমার। স্থানীয় বিজেপির দাবি, তাতে কাজও হচ্ছে খুব!

প্রচারে: গুজরাতের হিম্মতনগরে একটি নির্বাচনী জনসভায় নরেন্দ্র মোদী।

প্রচারে: গুজরাতের হিম্মতনগরে একটি নির্বাচনী জনসভায় নরেন্দ্র মোদী।

কাগজের ফাইল কেন

“আপনার আইপ্যাড কোথায়?” কঠিন গলায় জানতে চাইলেন প্রধান বিচারপতি ডি ওয়াই চন্দ্রচূড়। থতমত সলিসিটর জেনারেল তুষার মেহতা। প্রধান বিচারপতির যে এত দিকে নজর, ভাবেননি। প্রধান বিচারপতি হওয়ার পর থেকেই চন্দ্রচূড় চাইছেন, সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি থেকে আইনজীবী সবাই ল্যাপটপ বা আইপ্যাড দেখে কাজ করুন। মোটা কাগজের ফাইল যত বাদ দেওয়া যায়, ততই ভাল। নিজে পুরোপুরি কাগজের ফাইল ছাড়া কাজ করছেন। তাঁর ইচ্ছা, বড় আইনজীবীরাও একই দৃষ্টান্ত স্থাপন করুন। মোদী সরকারের সলিসিটর জেনারেল আইপ্যাডের বদলে কাগজের ফাইল নিয়ে সওয়াল করছেন দেখে শুনিয়ে দিয়েছেন, “আপনার আইপ্যাড শুধু সাংবিধানিক বেঞ্চের মামলার জন্য নয়!” শুনে লজ্জায় মেহতার আশ্বাস, সোমবার থেকে হাতে শুধু আইপ্যাডই থাকবে।

ইদের মিলনমেলা

“কোই দিওয়ানা কেহতা হ্যায়, কোই পাগল সমঝতা হ্যায়।” সুর করে গাইছিলেন সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি বিক্রম নাথ। শুনে সবাই মুগ্ধ। বিচারপতি আহসান উদ্দিন আমানুল্লাও শায়েরি শোনালেন। সুপ্রিম কোর্ট বার অ্যাসোসিয়েশনের ইদ মিলন উৎসবে কোর্টের ক্যান্টিনে এই দৃশ্য দেখা গেল। আইনজীবীদের সঙ্গে বিচারপতিরা খাওয়াদাওয়া, শায়েরি, গজলে মেতে উঠেছিলেন।

ডিম্পলের জন্য উন্মাদনা

মহা মুশকিলে মইনপুরীর সমাজবাদী পার্টির প্রার্থী ডিম্পল যাদব। মুলায়ম সিংহ যাদবের পুত্রবধূ যেখানেই প্রচারে যাচ্ছেন, দলীয় কর্মীদের ভিড় তিন গুণ হয়ে যাচ্ছে! ডাকা না হলেও আশপাশের ব্লক থেকে কর্মীরা ভিড় জমাচ্ছেন মিছিলে। লাফ দিয়ে মঞ্চে উঠতে চাইছেন কেউ কেউ, নিজস্বী তোলার উপদ্রবও বেড়েছে। দলের কর্মী, তাই মুখে তাঁদের না-ও করতে পারছেন না ডিম্পল। আপাতত তাই শীর্ষ নেতৃত্বের সিদ্ধান্ত, তাঁর সভা এবং যাত্রাপথ শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত গোপন রাখা হবে। তাই কয়েক জন অফিসকর্মী এবং শীর্ষ নেতা ছাড়া কেউ তা জানতে পারছেন না।

নেত্রী: লখনউয়ে সাংসদ ডিম্পল যাদব।

নেত্রী: লখনউয়ে সাংসদ ডিম্পল যাদব।

উপরাষ্ট্রপতির গৃহপ্রবেশ

ঠিকানা বদলে গেল দেশের উপরাষ্ট্রপতির। তাঁর নিবাস ছিল মৌলানা আজ়াদ রোডে। দিল্লির রাষ্ট্রপতি ভবন থেকে ইন্ডিয়া গেট পর্যন্ত সেন্ট্রাল ভিস্টা ঢেলে সাজানো হচ্ছে। তৈরি হচ্ছে প্রধানমন্ত্রীর নতুন বাসভবন, নতুন সচিবালয়। তারই অঙ্গ হিসাবে রাষ্ট্রপতি ভবনের কাছেই, নর্থ ব্লকের পাশে তৈরি হয়েছে নতুন উপরাষ্ট্রপতি নিবাস। চার্চ রোডের এই ভবনে সদ্য গৃহপ্রবেশ করেছেন জগদীপ ধনখড়। বিজ্ঞান ভবনের পাশে পুরনো উপরাষ্ট্রপতি নিবাসের ভবিষ্যৎ স্পষ্ট নয়।

২০২৪ লোকসভা নির্বাচনের সমস্ত খবর জানতে চোখ রাখুন আমাদের 'দিল্লিবাড়ির লড়াই' -এর পাতায়।

চোখ রাখুন
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE