Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪
নলহাটির পুরভোট

তালিকা নিয়ে ক্ষোভ জমছে শাসকদলেই

ঘোষিত প্রার্থী তালিকা দেখে সোমবার তৃণমূলের বিদায়ী কাউন্সিলর রবীন্দ্রনাথ শর্মা ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, ‘‘গত লোকসভা ও বিধানসভায় যাদের কার্যকলাপ ভালো ছিল না, তারাই আজ প্রধান। আর যারা বরাবর দলের স্বার্থে কাজ করে চলেছে তারা আজ দলের কাছে ব্রাত্য।’’

নির্বাচনে তৃণমূলের প্রস্তুতি।—ফাইল চিত্র।

নির্বাচনে তৃণমূলের প্রস্তুতি।—ফাইল চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
নলহাটি শেষ আপডেট: ১১ জুলাই ২০১৭ ০২:৩৭
Share: Save:

নলহাটি পুরসভা নির্বাচনে তৃণমূলের প্রার্থী তালিকা প্রকাশ হতেই প্রকাশ্যে এল দলীয় কোন্দল।

কোন্দল ঘিরেই দলের ৪ নম্বর ওয়ার্ডের গতবারের বিদায়ী তৃণমূল কাউন্সিলর রবীন্দ্রনাথ শর্মা দল ছেড়ে দেওয়ার কথা লিখিত ভাবে জানিয়ে দিয়েছেন। তাঁর দাবি, ‘‘প্রার্থী তালিকা দেখেই নলহাটি বাসিন্দারা বুঝতে পেরেছেন প্রাক্তন পুরপ্রধান বিপ্লব ওঝার অনুগামীদের প্রার্থী করা হয়নি। অধিকাংশ প্রার্থী ওয়ার্ড কমিটির সঙ্গে আলোচনা না করেই করা হয়েছে। সেক্ষেত্রে বিদায়ী পুরপ্রধান রাজেন্দ্র প্রসাদ সিংহ তাঁর নিজের গদি রক্ষা করার জন্য নিজে এবং তার ভাই তথা নলহাটি শহর তৃণমূলের সভাপতি রাকেশ সিংহ (পিন্টু) নিজেদের মতো করে প্রার্থী করেছেন।’’

উল্লেখ্য, রবিবার সন্ধ্যায় দলের জেলা সভাপতি অনুব্রত মণ্ডল ও মন্ত্রী আশিস বন্দ্যোপাধ্যায়ের উপস্থিতি নলহাটি পুরসভার ১৬টি ওয়ার্ডের প্রার্থী তালিকা ঘোষণা করেন বিধায়ক তথা নলহাটি পুরসভা নির্বাচনে দলের ৭ জনের কোর কমিটির চেয়ারম্যান মৈনউদ্দিন শামস। ১৬টি ওয়ার্ডে ঘোষিত প্রার্থী তালিকা অনুযায়ী পরপর প্রার্থীরা হলেন— খালেদা বেগম, রাকেশ সিংহ (পিন্টু), রাজেন্দ্রপ্রসাদ সিংহ, আলোশ্রী ভট্টাচার্য, বিষ্ণুপ্রসাদ ভকত, রমেশ মহেশ্বরী, প্রণতি মণ্ডল, সুব্রত দত্ত, জুলি ফুলমালি, দেবেন্দ্র প্রসাদ, আয়েষা সিদ্দিকি, একরামুল হক, তহিদ সেখ, সুনীল লেট, গিরি গোবর্ধন মহলদার (দাস) এবং নুরন্নেহার বেগম।

ঘোষিত প্রার্থী তালিকা দেখে সোমবার তৃণমূলের বিদায়ী কাউন্সিলর রবীন্দ্রনাথ শর্মা ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, ‘‘গত লোকসভা ও বিধানসভায় যাদের কার্যকলাপ ভালো ছিল না, তারাই আজ প্রধান। আর যারা বরাবর দলের স্বার্থে কাজ করে চলেছে তারা আজ দলের কাছে ব্রাত্য।’’ একা রবীন্দ্রনাথ শর্মা নয়, নলহাটি শহর ঘুরলে প্রার্থী তালিকা নিয়ে চরম ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন— এলাকার এমন তৃণমূল কর্মীর সংখ্যা মন্দ নয়। ওই সমস্ত তৃণমূল কর্মীরা জানান, যদি সংরক্ষণের ধাক্কায় ১ নম্বর ওয়ার্ডে গত বোর্ডের বিদায়ী উপ-পুরপ্রধান ইমাম হোসেনের পরিবর্তে ইমাম হোসেনের স্ত্রী, ৭ নম্বর ওয়ার্ডে বিদায়ী কাউন্সিলর নির্মল মণ্ডলের স্ত্রীকে দাঁড় করানো হচ্ছে, তাহলে ২ নম্বর ওয়ার্ডে ২ বারের বিজয়ী অমর দাসের স্ত্রীর নাম প্রার্থী তালিকায় রাখা উচিত ছিল। তাঁদের দাবি, সেক্ষেত্রে প্রভাব খাটিয়ে ২ নম্বর ওয়ার্ডে দলের শহর সভাপতি রাকেশ সিংহ (পিন্টু) খোদ নিজে প্রার্থী হয়েছেন। এবং পুরবোর্ডে নিজেদের প্রভাব খাটানোর জন্য বেছে বেছে ৪, ৫, ৬, ১১, ১৪ এই সমস্ত ওয়ার্ডগুলিতে নিজেদের পছন্দ মতো প্রার্থী করা হয়েছে বলে অভিযোগ।

আবার ১০ নম্বর ওয়ার্ডে বিধায়ক ঘনিষ্ট দেবেন্দ্র প্রসাদকে প্রার্থী করা নিয়েও দলীয় কর্মীদের ক্ষোভ দানা বেঁধেছে। প্রার্থী বাছাই নিয়ে ক্ষোভ ৪ নম্বর ওয়ার্ডের আনকোরা নতুন মুখ অবসর প্রাপ্ত শিক্ষিকা আলোশ্রী ভট্টাচার্যকে প্রার্থী করা নিয়েও। আবার গতবার ৯ এবং ১০— যে ওয়ার্ডে তৃণমূল প্রার্থী পরাজিত হয়েছিল, সেই হারা প্রার্থীদের আবার ওই দুটি ওয়ার্ডেই প্রার্থী করা হয়েছে। এ দিন মৈনউদ্দিন শামস অবশ্য বলেন, ‘‘প্রার্থী তালিকা নিয়ে কোনও ক্ষোভ-বিক্ষোভ নেই।’’ তিনি জানিয়ে দেন, অনুব্রত মণ্ডলের নির্দেশে একাধিকবার বৈঠকে বসে প্রার্থীদের নাম ঘোষণা করা হয়েছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE