অসমাপ্ত হোমের নির্মাণ কাজ। নিজস্ব চিত্র।
টাকার অভাবে চার মাস ধরে বন্ধ রয়েছে মালদহের জুভেনাইল হোমের ভবন নির্মাণের কাজ। শিলান্যাসের পর বছর ঘুরতে চললেও এখনও এক ভাগ কাজই শেষ হয়নি বলে অভিযোগ। এ দিকে, জেলার একমাত্র মহিলা হোমটিও ধুঁকছে। তাই নিয়েই ক্ষোভ ছড়িয়েছে জেলায়।
অভিযোগ, ঢাক ঢোল পিটিয়ে ঘটা করে শিলান্যাস অনুষ্ঠান করে বলা হয়েছিল বছরখানেকের মধ্যে জেলাতে হোমের স্থায়ী ভবন তৈরি হয়ে যাবে। ঘোষণা মতো কাজ না হওয়ায় প্রশাসনের সমালোচনা করেছে মানবাধিকার সংগঠনগুলি। এপিডিআর-এর জেলা সম্পাদক জিষ্ণু রায়চৌধুরীর অভিযোগ, জেলাতে কেবল মাত্র মেয়েদেরই হোম রয়েছে। তাও আবার ভাড়া বাড়িতে মাত্র দু’টি ঘরে ঠাসাঠাসি করে মেয়েদের রাখা হচ্ছে। একাধিক সমস্যায় জর্জরিত হোমটি। তবুও জেলা প্রশাসন উদাসীন। হোমের ভবন নির্মাণের কাজ দ্রুত শেষ করার দাবিতে নিয়ে জেলা প্রশাসনের দ্বারস্থ হবেন বলে জানান তিনি। হোমের কাজ দ্রুত শেষ করার দাবি জানিয়েছেন জেলা কংগ্রেসের সভানেত্রী তথা উত্তর মালদহের সাংসদ মৌসম নুরও। তিনি বলেন, ‘‘রাজ্য সরকার টাকা খরচ করে বিভিন্ন উৎসব করছে, অথচ হোম তৈরির কাজ শেষ করার জন্য টাকা দিতে পারছে না। আমরা জেলাতে বৃদ্ধবৃদ্ধাদের জন্যেও হোম তৈরির করার দাবি জানাব।’’ মালদহের অতিরিক্ত জেলাশাসক (সাধারণ) দেবতোষ মণ্ডল বলেন, ‘‘টাকা পেলেই দ্রুত হোমের ভবন নির্মাণের কাজ শেষ হয়ে যাবে। আমরা দ্রুত কাজ শেষ করার চেষ্টা করছি।’’
জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, ইংরেজবাজার পুরসভার ১ নম্বর ওয়ার্ডের রামনগর কাছারি ময়দানে ২০১৪ সালের ২৫ নভেম্বর হোমের শিলান্যাস করেন রাজ্যের সমাজ কল্যাণ দফতরের মন্ত্রী শশী পাঁজা। একসঙ্গে ৫০ জন করে আবাসিক যাতে থাকতে পারে সেই পরিকল্পনা নিয়ে হোমের ভবন নির্মাণের কাজও শুরু হয়ে যায়। বরাদ্দ করা হয়েছিল চার কোটি আট লক্ষ টাকা। ছেলে ও মেয়ে উভয়েরই থাকার ব্যবস্থাও নেওয়া হয়। হোমের ভবন নির্মাণের জন্য প্রথম ধাপে ৭৬ লক্ষ টাকা দেওয়া হয়।
মালদহে মাত্র একটি সরকারি হোম রয়েছে, যেখানে শুধুমাত্র মহিলাদেরই থাকার ব্যবস্থা রয়েছে। তারও নিজস্ব কোনও ভবন নেই। ইংরেজবাজার শহরের সুকান্ত মোড়ে ৩৪ নম্বর জাতীয় সড়কের ধারে একটি ভাড়া বাড়িতে চলছে হোমটি। জানা গিয়েছে, সেখানে শতাধিক আবাসিক রয়েছে। মাত্র দু’টি ঘরের মধ্যে চাপাচাপি করে থাকতে হয় বিভিন্ন বয়সের আবাসিকদের। ছেলেদের কোনও হোম নেই। তাই ছেলেদের পাঠানো হয় বহরমপুর হোমে। এ ক্ষেত্রেও সমস্যায় পড়তে হয়। কারণ কোনও মামলায় অভিযুক্তের বয়স ১৮ বছরের নীচে হলে বিচারক হোমে রাখার নির্দেশ দেন। সেক্ষেত্রে বহরমপুর থেকে তাকে আদালতে আনা নেওয়া করতে হয়। তাই জেলায় হোম তৈরির দাবি দীর্ঘদিনের। রাজ্যের প্রাক্তন সমাজকল্যাণ মন্ত্রী তথা রাজ্যের উদ্বাস্তু ও পুনর্বাসন মন্ত্রী সাবিত্রী মিত্র বলেন, ‘‘আমি সংশ্লিষ্ট দফতরের মন্ত্রী থাকার সময় পরিকল্পনা নিয়েছিলাম। এখন তা কী অবস্থায় রয়েছে তা খোঁজ নিয়ে দেখব। আশা করি, খুব শীঘ্রই হোমের ভবন নির্মাণের কাজ শেষ হবে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy