Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪

তৎপর রক্ষী রুখলেন ব্যাঙ্ক ডাকাতি

এটিএমের নিরাপত্তা রক্ষী ও পুলিশের তৎপরতায় রোখা গেল ব্যাঙ্ক ডাকাতি। দুষ্কৃতীদের হাত থেকে রক্ষা পেল উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের চলতি সেপ্টেম্বর মাসের বেতন-সহ প্রায় তিন কোটি টাকা।

সংগ্রাম সিংহ রায়
শিলিগুড়ি শেষ আপডেট: ০২ সেপ্টেম্বর ২০১৫ ০২:০৪
Share: Save:

এটিএমের নিরাপত্তা রক্ষী ও পুলিশের তৎপরতায় রোখা গেল ব্যাঙ্ক ডাকাতি। দুষ্কৃতীদের হাত থেকে রক্ষা পেল উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের চলতি সেপ্টেম্বর মাসের বেতন-সহ প্রায় তিন কোটি টাকা। পুলিশ দেখে দুষ্কৃতীরা কয়েক রাউন্ড গুলিও চালায়। তখনকার মতো তারা পালিয়ে গেলেও পরে এক অভিযুক্তকে পুলিশ গ্রেফতার করেছে।

পুলি‌শ সূত্রে জানা গিয়েছে, রবিবার রাতে প্রবল বৃষ্টির মধ্যে দুষ্কৃতীরা মাটিগাড়া থানার একটি রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কের উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয় শাখায় হানা দেয়। বৃষ্টির মধ্যেই ব্যাঙ্কের ভিতর থেকে খুটখাট আওয়াজ শুনতে পান ব্যাঙ্কের সামনে থাকা এটিএম কাউন্টারের নিরাপত্তারক্ষী সোমাই মার্ডি। সঙ্গে সঙ্গে তিনি ১০০ নম্বরে ফোন করে বিষয়টি জানান। পুলিশ কন্ট্রোল রুম থেকে মাটিগাড়া থানায় তা জানানো হয়। মাটিগাড়া থানার পুলিশ শিবমন্দিরের ব্যাঙ্কে পৌঁছয়। পুলিশ এসেছে টের পেতেই দুষ্কৃতীরা বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনের এলাকার জঙ্গলের দিকে পালানোর চেষ্টা করে। পুলিশকর্মীরা পিছু ধাওয়া করলে তারা কয়েক রাউন্ড গুলিও ছোড়ে বলে অভিযোগ। পরে তাদের আর খুঁজে পাওয়া যায়নি। জঙ্গলে তাদের ফেলে যাওয়া কিছু জিনিসপত্র পাওয়া যায়।

সকাল থেকে পুলিশ খোঁজখবর শুরু করে। বিকেলের দিকে এক ব্যক্তিকে খুঁড়িয়ে খুঁড়িয়ে শিবমন্দির বাসস্ট্যান্ড এলাকায় ঘোরাঘুরি করতে দেখা যায়। সন্দেহের বশে তাকে থানায় নিয়ে আসা হয়। তার কাছ থেকে রিভলবার, জাল নোট পাওয়া যায়। টানা জেরার পর সে ব্যাঙ্কের টাকা লুঠের পরিকল্পনার কথা জানায় বলে পুলিশের দাবি। সে পুলিশের কাছে দাবি করে, প্রথমবারই সে দলটির সঙ্গে এসেছিল। আগে কোনও ঘটনা ঘটায়নি। পুলিশ ধৃতের সম্পর্কে খোঁজখবর করতে ঝাড়খন্ড পুলিশের সঙ্গেও যোগাযোগ করছে।

পুলিশ জানিয়েছে, ধৃতকে জেরা করে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসের জঙ্গল ও পরে প্রধাননগরের একটি লজ থেকে উদ্ধার হয় ছটি গ্যাস সিলিন্ডার সহ একটি গ্যাস কাটার, হাতুড়ি সহ তালা কাটার যন্ত্রপাতি। ধৃতকে মঙ্গলবার শিলিগুড়ি আদালতে পেশ করা হলে তার ১৪ দিনের পুলিশি হেফাজত মঞ্জুর হয়েছে। শিলিগুড়ি পুলিশের ডিসি (পশ্চিম) শ্যাম সিংহ বলেন, ‘‘ধৃতকে জেরা করা হচ্ছে। ধৃত ব্যাক্তির সঙ্গে বড় একটি চক্র জড়িত রয়েছে। তার বিরুদ্ধে পুলিশের উপরে গুলি চালানোর অভিযোগ রয়েছে।’’ পুলিশ জানতে পেরেছে, ওই ব্যাঙ্কের ওই শাখায় বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-অশিক্ষক কর্মীদের বেতন রাখা ছিল। তার পরিমাণ প্রায় তিন কোটি টাকা।

পুলিশ জানিয়েছে, ধৃতের নাম আলমগির শেখ। বাড়ি ঝাড়খণ্ডের সাহেবগঞ্জে। ঝাড়খণ্ড ও মালদার একাধিক ব্যক্তি এই চক্রের সঙ্গে যুক্ত। ব্যাঙ্ক লুঠের জন্য তার সঙ্গে আরও সাত জন ছিল। দলটি আরও কোনও লুঠের ঘটনায় জড়িত কি না, তা তদন্তকারীরা খতিয়ে দেখছেন। প্রাথমিক তদন্তের পরে পুলিশ জানিয়েছে, দলটি শিলিগুড়িতে আসে গত ২৫ অগস্ট। প্রথমে হাসমিচক এলাকার কোনও হোটেলে ওঠে। পরে ২৭ অগস্ট ময়নাগুড়িতে যায় দলটি। সেখানে একটি ব্যাঙ্কের শাখায় লুঠের ছক করেও পরে পিছিয়ে আসে বলে ধৃত জেরায় জানিয়েছে। গত ২৮ অগস্ট তারা ফের শিলিগুড়িতে আসে। এবারে তারা ওঠে প্রধাননগরের একটি লজে। সেখানে তারা নিজেদের গ্রিল মিস্ত্রি বলে পরিচয় দেয়। ব্যাঙ্কের ম্যানেজার রঞ্জন সিংহ বলেন, ‘‘নিরাপত্তা বাড়ানো নিয়ে কর্তৃপক্ষের নির্দেশ অনুসারে কাজ করা হবে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE