Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪

পুলিশ হেফাজতে মৃত্যুতে খুনের মামলা রুজুর দাবি

মালদহের হরিশ্চন্দ্রপুরে পুলিশি হেফাজতে ওবাইদুল রহমানের (৫২) মৃত্যুর অভিযোগ তুলে ৬ পুলিশকর্মীর বিরুদ্ধে খুনের মামলা চালু করার দাবি উঠেছে। নিহতের পরিবারের পাশাপাশি ওই দাবি তুলে সরব হয়েছে গণতান্ত্রিক অধিকার রক্ষা কমিটি সহ একটি মানবাধিকার সংগঠন।

নিজস্ব সংবাদদাতা
চাঁচল শেষ আপডেট: ২৬ জানুয়ারি ২০১৫ ০১:৩৩
Share: Save:

মালদহের হরিশ্চন্দ্রপুরে পুলিশি হেফাজতে ওবাইদুল রহমানের (৫২) মৃত্যুর অভিযোগ তুলে ৬ পুলিশকর্মীর বিরুদ্ধে খুনের মামলা চালু করার দাবি উঠেছে। নিহতের পরিবারের পাশাপাশি ওই দাবি তুলে সরব হয়েছে গণতান্ত্রিক অধিকার রক্ষা কমিটি সহ একটি মানবাধিকার সংগঠন। গত শনিবার নিহতের পরিবারের তরফে ওই পুলিশকর্মীদের বিরুদ্ধে খুনের মামলা চালু করার জন্য লিখিত অভিযোগও জানানো হয়েছে। কিন্তু তারপরেও ওই পুলিশকর্মীদের বিরুদ্ধে খুনের মামলা চালু না করে উল্টে ঘটনা ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা চলছে বলে অভিযোগ উঠেছে। ওই পুলিশকর্মীদের বিরুদ্ধে খুনের মামলা রুজু না করা হলে আদালতের দ্বারস্থ হওয়ারও হুমকি দিয়েছে নিহতের পরিবার।

মালদহের পুলিশ সুপার প্রসূন বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “অভিযোগের তদন্ত চলছে। তদন্ত করেই প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”

গত ৬ জানুয়ারি হরিশ্চন্দ্রপুরের সোনাকুল এলাকায় জমি বিবাদে প্রতিবেশী ইব্রাহিম শেখকে হাঁসুয়া দিয়ে কোপানোর অভিযোগ ওঠে ওবাইদুল সহ পাঁচ প্রতিবেশীর বিরুদ্ধে। গত বুধবার কলকাতায় এসএসকেএম হাসপাতালে ইব্রাহিমের(৪৯) মৃত্যু হয়। ওইদিন রাতেই রতুয়ার বালুপুরে মেয়ের বাড়ি থেকে ওবাইদুলকে গ্রেফতার করে হরিশ্চন্দ্রপুর থানার পুলিশ। পরদিন ওবাইদুলের পরিবারের লোকজন জেলা পুলিশ সুপারের কাছে লিখিত অভিযোগ করেন, গ্রেফতারের সময় ওবাইদুলকে লাঠি ও টর্চ দিয়ে মাথায় ও শরীরে আঘাত করা হয়। ওবাইদুলকে হরিশ্চন্দ্রপুর হাসপাতাল, মালদহ মেডিক্যাল কলেজ হয়ে বৃহস্পতিবার কলকাতায় এসএসকেএম হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে চিকিৎসকরা তাকে মৃত বলে ঘোষনা করেন।

শনিবার দেহ নিয়ে হরিশ্চন্দ্রপুরে ফিরে মারধরে অভিযুক্ত পুলিশকর্মীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার দাবিতে থানায় বিক্ষোভও দেখানো হয়। পরে পরিবারের তরফে পুলিশের কাছে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে খুনের মামলা চালু করতে একটি অভিযোগও তুলে দেওয়া হয়। নিহত ওবাইদুলের মেয়ে হাসনারা বিবির বলেন, “দোষী পুলিশকর্মীদের বিরুদ্ধে খুনের মামলা করা না হলে আমরা আদালতে যাব।” গণতান্ত্রিক অধিকার রক্ষা কমিটির জেলা সম্পাদক জিষ্ণু রায়চৌধুরী বলেন, “আমরা চাই অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে খুনের মামলা চালু করে তাদের সাসপেন্ড করা হোক।” গৌড়বঙ্গ হিউম্যান রাইটস এওয়ারনেস সেন্টারের সম্পাদক মৃত্যুঞ্জয় দাসও বলেন, “অভিযুক্তদের বাঁচানোর চেষ্টা হলে আমরা প্রয়োজনে আদালতে যাব।”

পুলিশ অবশ্য প্রথম থেকেই অভিযুক্তকে মারধরের অভিযোগ অস্বীকার করে আসছে। হরিশ্চন্দ্রপুর ও মালদহ হাসপাতালের চিকিৎসকের রিপোর্ট উদ্ধৃত করে ওই অভিযুক্তের ‘সেরিব্রাল অ্যাটাকে’ই মৃত্যু হয়েছে বলে দাবি পুলিশের। হাসপাতালের ওই রিপোর্টকে হাতিয়ার করেই ঘটনার জেরে নীচুতলার পুলিশকর্মীদের মধ্যে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে বলে পুলিশ সূত্রের খবর। ক্ষোভ এতটাই যে এদিন একাধিক থানায় উপরওয়ালাদের নির্দেশ সত্ত্বেও একাধিক পুলিশকর্মী অভিযুক্তদের ধরতে অভিযানে যেতে রাজি হননি বলে অভিযোগ। কেননা ওবাইদুল পড়শিকে খুনের ঘটনায় অভিযুক্ত ছিলেন। তাদের অভিযোগ, পুলিশ দেখে দৌড়ে পালানোর সময় রক্তচাপ বেড়ে গিয়ে তিনি অসুস্থ পড়েন। পুলিশকর্মীদের একাংশের পাল্টা যুক্তি, ওইদিন পুলিশ বরং ভালো কাজ করেছিল। দেরি না করে তৎপরতার সঙ্গে তার চিকিৎসার ব্যবস্থা করেছিল।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

murder case Chanchal
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE