Advertisement
১০ মে ২০২৪

বইয়ের উপরে গোখরো,মেঝের নীচে পাঁচ ছানা

বর্ষা শুরু হতেই দফতরের ঘরে পাঠ্য বইয়ের উপরে কোথাও ফণা তুলে বসে গোখরো। আবার কোথাও স্কুলের মেঝে খুঁড়ে দেখা গেল কিলবিল করছে গোখরো সাপের ছানারা।

রায়গঞ্জে সর্বশিক্ষা মিশন দফতরে উদ্ধার হওয়া গোখরো সাপ।

রায়গঞ্জে সর্বশিক্ষা মিশন দফতরে উদ্ধার হওয়া গোখরো সাপ।

নিজস্ব সংবাদদাতা
শিলিগুড়ি ও রায়গঞ্জ শেষ আপডেট: ০২ জুলাই ২০১৬ ০৩:০২
Share: Save:

বর্ষা শুরু হতেই দফতরের ঘরে পাঠ্য বইয়ের উপরে কোথাও ফণা তুলে বসে গোখরো। আবার কোথাও স্কুলের মেঝে খুঁড়ে দেখা গেল কিলবিল করছে গোখরো সাপের ছানারা।

শুক্রবার উত্তর দিনাজপুরের রায়গঞ্জে সর্বশিক্ষা মিশনের দফতরে ও শিলিগুড়ির বাগডোগরার একটি স্কুলে এমনই ঘটনা ঘটেছে। তাতে হাড় হিম হয়ে গিয়েছে শিক্ষাকর্মী থেকে পড়ুয়াদের। দু’টি জায়গাতেই সাপগুলি উদ্ধার করে জঙ্গলে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। তবে প্রশ্ন উঠছে আগাছার জঙ্গলে ভরে থাকা দফতরের চার পাশ সাফাই না করা নিয়ে।

এ দিন রায়গঞ্জের কর্ণজোড়ায় সর্বশিক্ষা মিশনের দফতরের গোডাউনে পাঠ্য বইয়ের উপরে সাপটিকে ফণা তুলে বসে থাকতে দেখেন কর্মীরা। খবর পেয়ে একটি পশুপ্রেমী সংগঠনের জেলা সম্পাদক গৌতম তান্তিয়ার নেতৃত্বে একদল সদস্য সেখানে গিয়ে ছ’ফুট লম্বা ওই সাপটিকে উদ্ধার করে রায়গঞ্জের পক্ষিনিবাসে ছেড়ে দেন।

ওই ঘটনার পর আতঙ্কে দফতরের কর্মীরা বিভিন্ন ঘরের জানালা বন্ধ করে কাজকর্ম শুরু করেছেন। দফতরের কর্মী ও আধিকারিক মিলিয়ে ২১ জন ১২টি ঘরে বসে কাজ করেন। কর্মীদের অভিযোগ, গত ছ’মাস ধরে দফতরের চারিদিক আগাছা ও জঙ্গলে ভরে গেলেও দফতরের কর্তারা সেগুলি সাফাইয়ের কোনও ব্যবস্থাই করছে না। সেই সঙ্গে পাঠ্যবই রাখার জন্য দফতরের কোনও স্থায়ী গোডাউনই নেই। তাই সারা বছর ধরে দফতরের একটি ঘর ও বারান্দাতেই বইগুলি ছড়িয়ে ছিটিয়ে রাখা হয়। দফতরের জেলা প্রকল্প আধিকারিক প্রবীর পাত্রের দাবি, দ্রুত দফতরের চারিদিকে আগাছা ও জঙ্গল সাফাইয়ের উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে। স্থায়ী গোডাউন তৈরির প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে।

সাপের আতঙ্ক ছড়িয়েছে শিলিগুড়ির উপকণ্ঠে বাগডোগরা চিত্তরঞ্জন হাইস্কুলেও। এ দিন সেখানে স্কুলের শিক্ষক-শিক্ষিকাদের বসার ঘরের মেঝে খুঁড়ে উদ্ধার করা হয় পাঁচটি গোখরো সাপের বাচ্চা। সেখানে পপি ঘোষ, জয়তী চক্রবর্তী ও মিঠু সাহা নামে তিন জন শিক্ষিকা বসেছিলেন। মোবাইলে কথা বলছিলেন জয়তীদেবী। আচমকা পায়ের দিকে তাকিয়ে তিনি চমকে ওঠেন। তাঁর পায়ের কাছে ঘোরাফেরা করছে গোখরোর বাচ্চা! চিৎকার করে মুহূর্তে লাফিয়ে ওঠেন। চেয়ার, টেবিল ফেলে তিনি ঘর থেকে বেরিয়ে যান। নিরাপদ দূরত্বে সরে যান অন্য দুই শিক্ষিকাও। খবর পেয়ে ছুটে আসেন অন্যান্য শিক্ষক, কর্মীরা। হইচই পড়ে যায়। পরে আরেকটি সাপ বার হয় ঘরের মেঝের গর্ত থেকে। স্কুলের কর্মী তাপস বল এবং অন্যান্যরা সাপ দু’টিকে ধরে বোতলে এবং জারে করে বন দফতরে দিয়ে আসেন। সাপ ধরতে লোকও ডাকা হয়।

স্কুলের প্রধানশিক্ষিকা তপতী হালদার বলেন, ‘‘শিক্ষক-শিক্ষিকাদের বসার ওই ঘরটি আপাতত ব্যবহার করতে নিষেধ করা হয়েছে। সাপ ধরতে ডাকা হয় রাঙাপানির বাসিন্দা সুভাষ তালুকদারকে। তিনি বলেন, ‘‘সবগুলিই গোখরো সাপের বাচ্চা। সাধারণত এক সঙ্গে ২৫-৩০টা বাচ্চা থাকে। তাই আরও কিছু সাপের বাচ্চা রয়েছে বলে মনে হচ্ছে।’’

—নিজস্ব চিত্র।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Cobra snake
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE