ছবি: বিশ্বরূপ বসাক
জলপাইগুড়ি জেলা পরিষদ দখল নিশ্চিত করার কথা শিলিগুড়িতে এসে ঘোষণা করল তৃণমূল। শিলিগুড়ি মহকুমা পরিষদ এবং পুরসভাও বামেদের দখলে রয়েছে। সম্প্রতি দার্জিলিং জেলা তৃণমূল সভাপতি তথা পর্যটনমন্ত্রী গৌতম দেব অগস্টেই শিলিগুড়ির পুরবোর্ড দখল করার হুমকি দেন। তারপর থেকে লাগাতার আন্দোলন শুরু করেছে বামেরা। এ দিন অবশ্য দলবদলের কথা ঘোষণার সময়ে শিলিগুড়ির কোনও নেতাদের দেখা যায়নি। তবে জলপাইগুড়ি জেলা পরিষদ দখলের ঘোষণা শিলিগুড়িতে করে বাম এবং নিজেদের দলের নেতাদেরও বার্তা দেওয়া হল বলে তৃণমূলের নেতাদের একাংশের দাবি।
জলপাইগুড়ি জেলা পরিষদের সহকারী সভাধিপতি সহ বামেদের ৬ সদস্যকে এ দিন দলে যোগদান করায় তৃণমূল। সোমবার সন্ধেয় জেলা পরিষদের ৬ বাম সদস্যকে তৃণমূলের পতাকা তুলে দিয়েছেন রাজ্যের যুব কল্যাণ, পূর্তমন্ত্রী অরূপ বিশ্বাস এবং দলের জেলা সভাপতি সৌরভ চক্রবর্তী। এ দিনই জলপাইগুড়ির বিভাগীয় কমিশনারকে চিঠি পাঠিয়ে তৃণমূলের তরফে বাম সদস্যদের যোগদানের কথা জানানো হয়েছে। বামেদের দলে টেনে ১৯ সদস্যের জেলা পরিষদের মধ্যে তৃণমূলের সদস্য সংখ্যা হল ১০।
তৃণমূলের দাবি, সরকারি ভাবে জেলা পরিষদের বোর্ড দখল করা এখন সময়ের অপেক্ষা। জেলা পরিষদের বোর্ড দখলে আইনি কোনও বাধাও নেই বলে দাবি তৃণমূল নেতাদের। চলতি সপ্তাহেই অনাস্থা প্রস্তাব আনা হবে বলে দাবি তৃণমূল নেতাদের।
জেলা পরিষদের সহকারী সভাধিপতি ফরওয়ার্ড ব্লকের বিধানচন্দ্র রায় ছাড়াও ধূপগুড়ির সিপিএমের জোনাল কমিটির সদস্য তথা জনস্বাস্থ্য কর্মাধ্যক্ষ ধজেন্দ্রনাথ রায়, বিদ্যুৎ কর্মাধ্যক্ষ বসন্ত টোপ্পো, শিক্ষা কর্মাধ্যক্ষ কৃষ্ণা রায়, কৃষি-সেচের দায়িত্বপ্রাপ্ত গোবিন্দ রায় এবং শঙ্কর ওঁরাও রয়েছেন। গত পঞ্চায়েত ভোটে জলপাইগুড়িতে তৃণমূল পেয়েছিল তিনটি আসন। পরবর্তীতে কংগ্রেসের এক সদস্য তৃণমূলে যোগ দেন। গত লোকসভা ভোটের পর থেকে চার সদস্যকে নিয়েই জেলা পরিষদে দল ভাঙানোর চেষ্টা শুরু করে শাসক দল। কয়েক দফায় আলোচনার পরে ৪ জনের বেশি সদস্য রাজি হননি। গত বিধানসভা ভোটে দলের বিপুল সাফল্যের পরে অবশ্য বেগও তেমন পেতে হয়নি বলে দলের অন্দরের দাবি। এ দিন জেলা তৃণমূল সভাপতি সৌরভ চক্রবর্তী দাবি করেছেন, ‘‘যখন অনাস্থা প্রস্তাব আনা হবে, সে দিন আমাদের পক্ষে আরও বেশি সদস্য থাকবে।’’
সৌরভ বলেন, ‘‘জেলা সভাপতি হওয়ার পরে আমার মনে হয়েছিল, জেলা পরিষদ, গ্রাম পঞ্চায়েত ও পঞ্চায়েত সমিতি সঙ্গে না এলে আমি উন্নয়নের কাজ করতে পারব না। সে জন্যই আমি সচেষ্ট হয়েছিলাম।’’ তাঁর কথায়, ‘‘সিপিএম বিধানসভা ভোটের পরে অভিভাবকহীন হয়ে পড়েছে। ওরা কাজ করতে পারছিল না। এখন একসঙ্গে উন্নয়নের কাজে ঝাঁপাব।’’
জেলা পরিষদ দখলের কৃতিত্ব জেলা নেতাদেরই দিয়েছেন মন্ত্রী অরূপবাবু। সাংবাদিক বৈঠকে তিনি মাইক এগিয়ে দিয়েছেন সৌরভবাবুকেই। পরে অরূপবাবু বলেন, ‘‘মুখ্যমন্ত্রী যে ভাবে উন্নয়নের কাজ পরিচালনা করেছেন, তাতে সকলেই সামিল হতে চাইছেন।’’ শিলিগুড়ি পুরসভা এবং মহকুমা পরিষদ দখলের প্রসঙ্গে অরূপবাবুর জবাব, ‘‘শিলিগুড়ি পুরবোর্ড কাজ করতে করতে পারছে না। গত ৩৪ বছরেও কাজ করতে পারেনি। কাজ করতে না পারলে সরে দাঁড়াক।’’
বামেদের তরফেও এ দিনের ঘটনাকে ‘অপ্রত্যাশিত’ বলে দাবি করা হয়েছে। জেলা সিপিএম সম্পাদক সলিল আচার্য বলেন, ‘‘রাজ্য জুড়েই এই দখলের প্রবণতা চলছে। তীব্র নিন্দা করছি। জনগণের আদালতে এর বিচার হবে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy