মালদহে তৃণমূল নেতৃত্বের গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব মেটাতে একাধিকবার সবাইকে এক হয়ে চলার বার্তা দিয়েছেন খোদ দলনেত্রী। কিন্তু বাস্তবে পরিস্থিতি যে একই রয়ে গিয়েছে তা আরও একবার টের পেলেন তৃণমূলের জেলা পর্যবেক্ষক শুভেন্দু অধিকারী।
বুধবার রাতে নারায়ণপুরের একটি হোটেলে শুভেন্দুবাবুর সামনেই তুমুল বাকবিতণ্ডায় জড়িয়ে পড়েন একাধিক জেলা নেতা। রীতিমতো আঙুল উঁচিয়ে চলে বাদানুবাদ। তীব্র বাদানুবাদ ও হইচইয়ে রীতিমতো সরগরম হয়ে ওঠে সভা। এমন পরিস্থিতিতে একাধিক নেতা পদ থেকে অব্যাহতি চেয়ে বৈঠকে সওয়াল করেন। জেলা নেতৃত্বের এ হেন কার্যকলাপে বিরক্ত শুভেন্দুবাবু নাকি বলেই ফেলেন, এমন হলে পঞ্চায়েত ভোটে জেলা কমিটিকে বাদ দিয়েই ব্লক স্তরের যে নির্বাচন কমিটি গঠন করা হবে তার মাধ্যমেই পঞ্চায়েত ভোট পরিচালনা করা হবে।
তৃণমূল সূত্রে খবর, মালদহ জেলায় দলের সাংগঠনিক বিষয় নিয়ে পর্যালোচনার জন্য বুধবার রাতে মালদহে আসেন দলীয় পর্যবেক্ষক শুভেন্দুবাবু। নারায়ণপুরে একটি হোটেলে ওই বৈঠকে কৃষ্ণেন্দুবাবু ও নীহারবাবুর মধ্যে তুমুল বাকবিতণ্ডা বাধে। কৃষ্ণেন্দুবাবু পুরসভার কাজকর্ম নিয়ে অভিযোগ করেন। এ নিয়ে খামবন্দি একটি চিঠিও শুভেন্দুবাবুর হাতে তুলে দেওয়া হয়। এই নিয়েই নীহারবাবুর সঙ্গে তাঁর উত্তপ্ত বাক্য বিনিময় হয়।
অন্যদিকে এক নেতার বিরুদ্ধে সরব হন জেলা পরিষদের একাধিক সদস্য। সেই নেতা জেলা পরিষদের ওই সদস্যদের বিরুদ্ধে পাল্টা দলবিরোধী কাজের অভিযোগ তোলেন। এ নিয়েও দু’পক্ষের মধ্যে তুমুল তর্ক বেধে যায়। দলের জেলা সভাপতির কাজ নিয়েও প্রশ্ন তোলেন অনেকে। নেতৃত্বের এমন আচরণে রীতিমতো বিরক্ত শুভেন্দুবাবু বারবার হস্তক্ষেপ করে বিবাদ মেটানোর চেষ্টা করেন। জানা গিয়েছে, সভা থেকে জেলার ১২টি বিধানসভা কমিটির দলীয় চেয়ারম্যানদের কাছ থেকে শুভেন্দুবাবু ব্লক স্তরের ২০ থেকে ২৫ জনের নামের তালিকা নেন এবং আগামী ৭ অক্টোবর কলকাতায় সুব্রত বক্সির সঙ্গে বসে ব্লক স্তরে পঞ্চায়েত নির্বাচন কমিটি গড়ার কথা জানান। যদিও বৃহস্পতিবার সংবাদমাধ্যমের সামনে দলীয় সভা প্রসঙ্গে একটি কথাও খরচ করতে রাজি হননি শুভেন্দুবাবু। কৃষ্ণেন্দুবাবু বলেন, ‘‘বৈঠকে পর্যালোচনা ও আত্মসমালোচনা হয়েছে।’’ নীহারবাবুও বিতণ্ডার বিষয়টি মানতে চাননি। বলেন, ‘‘আমরা তো এক।’’
পঞ্চায়েত নির্বাচনের আগে উত্তর দিনাজপুরেও জেলা নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করে দলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব রুখতে কড়া বার্তা দিয়েছেন শুভেন্দুবাবু। এ দিন রায়গঞ্জে সাংগঠনিক সভায় যোগ দিয়ে শুভেন্দুবাবু বলেন, ‘‘দলে কোনও নেতার খবরদারি ও মাতব্বরি চলবে না। সবাইকে বলছি পঞ্চায়েত নির্বাচনের আগে সবাই এক হয়ে কাজ করুন।’’ কখনও পদ বন্টন আবার কখনও সরকারি পদে বসা নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে এ জেলাতেও নেতাদের বিরোধ লেগে রয়েছে। এ দিনের সভায় সব গোষ্ঠীর নেতারাই হাজির ছিলেন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy