Advertisement
১১ মে ২০২৪

সম্পাদক সমীপেষু

শহরের কথা যাঁরা ভেবেছিলেন

শেষ আপডেট: ০২ জুলাই ২০১৫ ০০:০১
Share: Save:

শহরের কথা যাঁরা ভেবেছিলেন

কে সি শিবরামকৃষ্ণন সম্পর্কে সুকান্ত চৌধুরীর লেখাটি (‘নগর, প্রশাসক ও আত্মবিস্মৃত নাগরিক’, ১৬-৬) কেসিএস-এর (ঘনিষ্ঠদের কাছে তিনি এই নামেই পরিচিত ছিলেন) সম্পর্কে অনেক ব্যক্তিগত স্মৃতিকে ফিরিয়ে দিল। এমন নির্মোহ বিশ্লেষণী ক্ষমতা খুব কম মানুষের মধ্যেই দেখেছি। নিজের কাজেরও কঠোর সমালোচক ছিলেন। শেষ দিন অবধি নতুন কিছু শুনলে বুঝতে চাইতেন, বয়স বা অভিজ্ঞতা বাধা হয়ে দাঁড়াত না। কর্মসূত্রে কলকাতা ছেড়েছেন কিন্তু শহরটা থেকে গেছে ওঁর হৃদয়ে। কলকাতার ডাকে বার বার ফিরে এসেছেন, ওঁর নানা লেখায় বারে বারে ফিরে এসেছে কলকাতা।

এ বছর জানুয়ারি মাসে ওঁর মহানগর পরিকল্পনার ওপরে শেষতম প্রকাশিত বইটির একটি আলোচনাতে অংশগ্রহণ করার সৌভাগ্য হয়েছিল। ভারতের নগর পরিকল্পনার ত্রুটিবিচ্যুতি বুঝতে আর ভবিষ্যৎ পথ নির্দেশের জন্য রাজনীতি, অর্থনীতি, জনপ্রশাসন, জনসংখ্যাতত্ত্ব— সব কিছু নিয়ে আলোচনা করেছেন।

ওঁর শেষ বইটির জন্য আনন্দবাজার পত্রিকার সংগ্রহ থেকে কিছু পুরনো ছবির প্রয়োজন ছিল। মার্চ মাসে ওঁর যে সহযোগী কলকাতায় এসে প্রাথমিক যোগাযোগ করেছিলেন তিনি বিদেশে চলে যাওয়াতে প্রক্রিয়াটি থেমে যায়। মে মাসের প্রথম দিকে আমাকে এক দিন ফোন করলেন এবং বললেন হাসপাতাল থেকে একটু ছাড়া পেয়েছেন। বইটার শেষ কাজ একটু দ্রুত করতে চান। আমি যদি ছবিগুলোর ব্যাপারে একটু উদ্যোগ নিতে পারি। আমার গবেষক ছাত্র জয় ছোটাছুটি করে এনে দিল বাইশ তারিখে। আমি ওঁর আপ্তসহায়ককে ফোন করে জানালাম যে আমি একটু ছুটিতে যাচ্ছি, ছবিগুলো পৌঁছলে যেন আমাকে একটু ই-মেল করেন। বেড়ানোর ফাঁকে সাতাশ তারিখ ওঁর মেল খুলে দেখি, ছবি পৌঁছনো নয়, রয়েছে ওঁর অন্তিম সংবাদ।

প্রসঙ্গত, কলকাতাকে ভরাডুবির হাত থেকে রক্ষা করতে তৎপর আর এক দক্ষিণী সন্তানকেও কলকাতা মনে রাখেনি। এম জি কুট্টি, বেসিক ডেভেলপমেন্ট প্ল্যান (১৯৬৬—৮৬) তৈরি ও কেএমডিএ-র প্রাথমিক বছরগুলিতে যাঁর অবদান অনস্বীকার্য।

মহালয়া চট্টোপাধ্যায়। নগর অর্থনীতি চর্চা কেন্দ্র, কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়

॥ ২ ॥

১৯১১ সালে কলকাতা থেকে ভারতের রাজধানী দিল্লিতে স্থানান্তরিত করার অভিমানকে সামাল দিতে সিআইটি তৈরি হল। পরবর্তী কালে স্বাধীন ভারতে বিধানচন্দ্র রায় খুব ঠান্ডা মাথায় তৈরি করেছিলেন সিএমপিও বা ক্যালকাটা মেট্রোপলিটান প্ল্যানিং অর্গানাইজেশন। কেবল অন্য রাজ্যের নয়, বিদেশে কর্মরত অনেক কৃতী প্রযুক্তিবিদ, ও প্ল্যানারদের যুক্ত করা হয়েছিল সিএমপিও-র সঙ্গে। অল্প সময়ের মধ্যে সিএমপিও প্রয়োজনীয় সার্ভে করে যে ক’টি মাস্টার প্ল্যান তৈরি করে, সেগুলো পরবর্তী কালে সিএমডিএ-কে গাইড করেছিল।

সিএমডিএ-র সেক্রেটারি হয়ে এসে কে সি শিবরামকৃষ্ণন রাজ্যের বিভিন্ন দফতর থেকে প্রযুক্তিবিদদের এনে সিএমডিএ-র বিভিন্ন অফিস তৈরি করলেন। সিআইটি, এইচআইটি এবং সিএমপিও অনাদরে ও অভুক্ত থাকতে থাকতে কঙ্কালে পরিণত হল। সিএমপিও-র মিউনিসিপ্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং শাখাটি আলাদা ভাবে একটি ইঞ্জিনিয়ারিং ডায়রেক্টটরেটে রূপান্তরিত হয়ে বেঁচে গেল। বর্তমানে এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ দফতর।

কয়েক বছরের মধ্যে সিআইটি, এইচআইটি এবং সিএমপিও-র বাকি অংশের দিকে তাকানো হল না। সিএডিএ-র মতো একটা গুরুত্বপূর্ণ সংস্থাকে সুন্দর ভাবে বাঁচিয়ে রাখার কোনও যথাযথ রূপরেখা কিন্তু শিবরামকৃষ্ণনরা দিয়ে যেতে পারেননি।

অধ্যাপক চৌধুরী তাঁর লেখায় বি এন দে এবং শৈাবাল গুপ্তের কথা উল্লেখ করেছেন। বি এন দে কলকাতার জলনিকাশি ব্যবস্থার আধুনিকীকরণের যে উদ্যোগ নিয়েছিলেন সেটাই আরও এগিয়ে নিয়ে গিয়েছিল সিএমপিও। শৈবাল গুপ্ত শক্ত হাতে সিআইটি-র হাল ধরে রেখেছিলেন। কলকাতা মিউনিসিপ্যাল কর্পোরেশন, সিআইটি এবং পরবর্তী কালে সিএমপিও যে সব উন্নয়ন ডকুমেন্ট তৈরি করেছিল, সেগুলো ভেঙেই বহু দিন চলেছে।

কে সি শিবরামকৃষ্ণন কলকাতা ছেড়ে আরও বৃহত্তর ক্ষেত্রে কী কী অবদান রেখেছেন, কলকাতাবাসী হয়তো জানে না। কিন্তু কলকাতা উন্নয়নের সঙ্গে জডিত আর এক জন আইএএস অফিসার এম জি কুট্টিকে (অকালপ্রয়াত) সিএমডিএ বহু দিন স্মরণে রেখেছে।

শিশিরকুমার নিয়োগী। কলকাতা-৯১

আন্দামানে নয়

শ্রীজাত (‘কিস্‌সা এ মির্জা’, ৬-৬) লিখেছেন, সম্রাট বাহাদুর শাহ জাফরের মৃত্যু হয় আন্দামানে। ভুল। তাঁকে কয়েদ করে রাখা হয়েছিল বর্মা তথা মায়ানমারের রেঙ্গুনে (এখন ইয়াংগন)। সেখানেই তাঁর মৃত্যু হয়।

সুনীতিচরণ ভট্টাচার্য। কলকাতা-৮২

সংখ্যা আর অঙ্ক

তপনকুমার মল্লিক তাঁর চিঠিতে উল্লেখ করেছেন ‘দশমিকের পর সংখ্যাগুলিকে আলাদা ভাবে উচ্চারণ করাই নিয়ম’ (৯-৬)। ‘সংখ্যা’ না বলে ‘অঙ্ক’ বললে ভাল হত। কয়েকটি অঙ্ক মিলে একটি সংখ্যা তৈরি হয়। যেমন, ১, ২, ৩ অঙ্ক মিলে ১২৩, ১৩২, ২১৩, ইত্যাদি সংখ্যা হয়।

বিনয় পাল। কান্দী, মুর্শিদাবাদ

শৌচালয়ের দেওয়ালে?

দক্ষিণ কলকাতার রাসবিহারী মোড় জংশনের উত্তর পশ্চিম দিকের ফুটপাথে একটি আধুনিক শৌচালয়ের বাইরে দেওয়াল জুড়ে নির্মিত হয়েছে শিল্পী যামিনী রায়ের ‘ভক্তগণের সঙ্গে নৃত্যরত শ্রীচৈতন্য’ নামক চিত্রটির একটি বিশাল প্রতিলিপি।

শৌচালয়টির প্রায় ঢিল ছোড়া দূরত্বে দক্ষিণ পশ্চিম দিকে রয়েছে শ্রীচৈতন্যচর্চার বিখ্যাত কেন্দ্র ‘চৈতন্য রিসার্চ ইনস্টিটিউট’ এবং উত্তর পূর্বে ওই একই দূরত্বে অবস্থান করছে ‘চৈতন্য গৌড়ীয় মঠ’। কিন্তু একটি পুর প্রস্রাবাগারের দেওয়ালের অলংকরণের জন্য এক সুবিখ্যাত শিল্পীর একটি বিখ্যাত চিত্র ছাড়া আর কিছু কি চিন্তা করা গেল না? এতে যামিনী রায় বা শ্রীচৈতন্যের গৌরব কতখানি বৃদ্ধি হল জানি না, কিন্তু সংস্কৃতিমনস্ক শহরবাসীর মাথা লজ্জায় হেঁট হয়ে যাওয়ার পক্ষে বোধহয় যথেষ্ট কারণ হয়ে রইল।

সমীর রায়চৌধুরী। কলকাতা-৩৯

ভ্রম সংশোধন

বিশ্বজিৎ রায়ের লেখায় (‘বুঝি না, বুছতে...’, ২৮-৫) দুটি বাক্য বাদ পড়ে গিয়েছিল।
লাইন দুটি এই রকম: ‘স্ত্রী বিমলা অপর পুরুষে আসক্ত জেনেও নিখিলেশ জোর খাটায় না। আর উঠতি
বড়লোক মধুসূদন স্ত্রী কুমুদিনীকে ধর্ষণ করে।’ মুদ্রণপ্রমাদের জন্য আমরা দুঃখিত ও ক্ষমাপ্রার্থী।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE