লজ্জা কার?
‘ভিত কিন্তু নষ্ট করছি’ (সম্পাদক সমীপেষু ২৮-০১) পড়লাম। এখানে ‘আমরা’ কথাটিকে উহ্য রাখা হয়েছে। হ্যাঁ, আমরা শিক্ষকরাই শিশুদের ঠিক মতো শিক্ষা দিতে পারছি না। আমরা আশা করছি শিশুরা নিজেরাই সব কিছু শিখে যাবে। আর ক’দিন পরে হয়তো আমরা এও বলতে পারি, দশ মাস মাতৃগর্ভে থেকে এরা কিচ্ছু যদি শেখে। আমাদের দ্বারা বোধ হয় সবই সম্ভব। ‘দশটি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে চার বছর পড়াশোনা করে এরা নিজের নামটিও লিখতে অক্ষম’, জনৈক শিক্ষকের উক্তি।
কিন্তু এই অক্ষমতা কার? এই ফেল করা কার? এই লজ্জা কার? এক জন ছয় বছরের শিশুকে আয়ত্তে এনে যাঁরা শেখাতে পারছেন না, ফেল কি তাঁরা করেননি? অক্ষমতা কি তাঁদের নয়? আমরা তো এক জন শিশুকে গড়ে তোলার দায় গ্রহণ করছি না, আমরা শুধু বলছি ‘ওরা পারে না’। অথচ তাদের পারার জন্য আমরা যৎসামান্য চেষ্টাটুকুও করছি না। তাঁরাই শিক্ষক হওয়ার উপযুক্ত যাঁরা ধৈর্যবান এবং ছেলেদের প্রতি সহানুভূতিশীল। আমরা নিজেদের অক্ষমতা কখনও রাষ্ট্রের উপর কখনও বা সমাজের উপর চাপিয়ে দিয়ে নিজেরা নিরাপদ থাকি। সরকারের বিধিব্যবস্থায় পাশ-ফেল প্রথা যদি না-ও থাকে, পরিপূর্ণ শিক্ষা দিতে অসুবিধে কোথায়?
ছেলেরা যদি সব শিখে যায় তা হলে তো আর ফেলের প্রশ্নই ওঠে না। আর এই শেখানোর পদ্ধতিটা শিশুমন যে ভাবে নিতে সক্ষম সেই ভাবে তাদের সামনে তুলে ধরতে হবে। তারা যেন সেগুলোকে হজম করতে পারে। কতকগুলো কথার বোঝা টেনে তারা যেন ভারাক্রান্ত না হয়। তারা যেন খেলার ছলে আনন্দ করে সব কিছু শিখে নিতে পারে। শিক্ষককুলের প্রতি বিনীত অনুরোধ, তাঁরা যে মহান কাজে ব্রতী হয়েছেন, ‘মানব জনম’ আবাদের ভূমিতে সোনা ফলাবার ব্রত, সেই ব্রত পালনের মাহেন্দ্রক্ষণ যেন অতীত না হয়ে যায়।
সর্বাণী গুহ। কলকাতা-৯২
কে প্রথম
সৌভিক চক্রব়র্তীর প্রতিবেদনে (‘হরেক বই দুশো টাকা কেজি, লাগলে বলবেন!’, ৯-১) প্রচ্ছন্ন ভাবে বলা হয়েছে, কালিকাপুরের কাছে ‘বুকটুক’ কলকাতার প্রথম ওজনদরে বই বিক্রির দোকান। উল্লেখিত দোকানের সাইনবোর্ডেও জ্বলজ্বল করছে সেই দাবি: ‘কলকাতায় প্রথম বার’। কিন্তু গড়িয়াহাটের কাছে ডোভার লেনে বহু বছর ধরে এ-রকম একটি বইয়ের দোকান বর্তমান, যার সাইনবোর্ডেও একই দাবি করা হয়েছে। আমি ব্যক্তিগত ভাবে দোকানটি অনেক বছর ধরে দেখছি। সুতরাং প্রথম কি না নিঃসংশয়ে বলতে না পারলেও অন্তত ‘বুকটুক’-এর থেকে যে অনেকটাই পুরনো সেটা নিয়ে কোনও সংশয় নেই। প্রতিবেদনটি পড়ে একটু স্মৃতিমেদুরতার ওম পোহাতে পরিচিত দোকানটিতে গিয়ে অবশ্য দেখলাম সেটি বন্ধ।
প্রসঙ্গত, বইপ্রেমিক হিসেবে আমার মতে, মুগ ডাল বা পাঁঠার মাংসের মতো ওজন দরে হোক বা তেলেভাজা বা হাত ধোওয়ার সাবানের মতো পিস হিসেবে, বই কিনতে পারাটাই আসল। উল্টো দিক থেকে পুরনো বই বিক্রি হওয়াটাই অনেক সদর্থক বার্তা, তা সে ওজন দরে হলেও। অন্তত এই সব ক্রেতারা ‘ঘর সাজাবার’ জন্য বই কেনেন না।
অনুক্তা। কসবা, কলকাতা
বাংলা নেই
সম্প্রতি আর জি কর হাসপাতালে দেখলাম, প্রবেশ থেকে ভেতর পর্যন্ত সাইনবোর্ডগুলো প্রায় সবই ইংরাজিতে লেখা। পুরনো দু-একটা বাংলা সাইনবোর্ড চোখে পড়ল বটে, নতুনগুলো সবই ইংরাজিতে। বাংলা ভাষার প্রতি এই অশ্রদ্ধা মনকে খুবই বেদনাতুর করে তোলে।
সনৎকুমার বন্দ্যোপাধ্যায়। কলকাতা-৩০
বাকি ইতিহাস
চন্দ্রিল ভট্টাচার্য (‘সিরিয়ায় এলেন নয়া পরশুরাম’, ২১-১) জানিয়েছেন, ‘পরশুরাম পিতৃআজ্ঞায় মা’কে বধ করেছিলেন। সিরিয়ায় এক আই এস জঙ্গি সংগঠনের আদেশে মা’কে গুলি করে মারল।’ আমরা পরশুরামের পিতৃ-আজ্ঞায় মাতৃহত্যার কথাই শুধু আলোচনায় আনি। পরশুরামের অনুশোচনায় দগ্ধ হয়ে দীর্ঘ সাধ্যসাধনায় প্রায়শ্চিত্তের মাধ্যমে মাতৃহত্যা পাপ থেকে মুক্তি লাভের কথাটি ভুলে থাকি।
তপেন সিংহ বর্মন। শিলিগুড়ি
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy