Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪

সম্পাদক সমীপেষু

বিদ্রুপ করা কেন

শেষ আপডেট: ২৪ জুলাই ২০১৪ ০০:০০
Share: Save:

বিদ্রুপ করা কেন

তিয়াষ মুখোপাধ্যায় (‘এভারেস্টে ট্র্যাফিক জ্যাম’, রবিবাসরীয়, ২৯-৬) উপসংহারে হঠাৎ কেন পশ্চিমবঙ্গের বর্তমান পর্বতারোহীদের সংহার করতে উদ্যত হলেন বোঝা গেল না। ‘চট করে শৃঙ্গ ছুঁতে উদ্গ্রীব মানুষ। আর সাহায্য করতে তৈরি হাজারটা এজেন্সি। এরা মিলে একটা মহৎ ব্যাপারকে খেলো করে ফেলল’। এই যুক্তিসঙ্গত মূল প্রতিপাদ্যের সঙ্গে ‘বছর চার পাঁচ’ ধরে এভারেস্ট আরোহী বাঙালিদের বিদ্রুপ করাটা মোটেও সমীচীন হয়নি।

‘এজেন্সি নির্ভর ক্লাইম্বিং-এর ধারাটাকেই মেনে নিয়েছি আমরা’— এটা সত্যিই আক্ষেপের বিষয়। কিন্তু কী করার আছে? ১৯৮৮ থেকে রক্ষক ‘সাগরমাথা দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদ (এস পি সি সি)’ মরসুম শুরু হওয়ার আগে খুম্বু হিমবাহে রাস্তা তৈরি করে সাত সদস্যের দল পিছু ২১০০ ডলার এবং অতিরিক্ত প্রতি সদস্যের জন্য ২৭৫ ডলার আদায় করে ভক্ষকের ভূমিকায় অবতীর্ণ হন। অন্য দলগুলি মেনে নিলেও স্লোভাক দলের নেতা জোসেফ জাস্ট প্রতিবাদ করেছিলেন, লাভ হয়নি। গত বছরও এমন একটি প্রতিবাদ মারপিট পর্যন্ত গড়িয়েছিল।

তা হলে উপায় চিনের দিক দিয়ে আরোহণ। কিন্তু সে দিক দিয়ে শৃঙ্গারোহণের অনুমতি ও ভিসা পাওয়ার অনিশ্চয়তা, আমলাতান্ত্রিক জটিলতা, চিনের বিচিত্র নিয়মকানুনের বাধা এভারেস্ট আরোহণের থেকেও কঠিন। ২০১০ সালে বসন্ত সিংহরায় ও তাঁর সঙ্গীদের এভারেস্ট আরোহণের অনুমতি ছিল চিনের দিক দিয়ে। কলকাতা ছেড়ে অভিযানের উদ্দেশ্যে রওনা হওয়ার পর ওঁরা জানতে পারেন যে, সেই অনুমতি বাতিল হয়ে গেছে।

তা হলে, উপায় থাকলে যাঁরা নিজেরাই অভিযানের কল্পনা করতে পারতেন, পরিকল্পনা অনুযায়ী সব আয়োজন এবং শৃঙ্গ আরোহণের যোগ্যতাও যাঁদের প্রশ্নাতীত, যাঁরা চিনের লৌহকঠিন প্রতিবন্ধকতায় উত্তর দিক দিয়ে অভিযান করার সুযোগ পাচ্ছেন না, তাঁরা অন্যের তৈরি করা পথ বলেই পরিহার করবেন এভারেস্ট জয়ের স্বপ্নকে?

১৯৯১ ও ’৯৩ সালে পশ্চিমবঙ্গ থেকে সংগঠিত দুটি এভারেস্ট অভিযানকে লেখক বাংলার পর্বতাভিযান রেখচিত্রের সর্বোচ্চ বিন্দু হিসাবে স্বীকৃতি দিয়েছেন। দ্বিতীয় অভিযানটিকে তার সদস্যরা নিজেরাই গুরুত্ব দেন না। প্রথম অভিযানটি অবশ্যই গৌরবময়, যদিও সেই অভিযান নিয়ে সে সময় কিছু পত্রপত্রিকায় রোজ আফশোস করা হয়েছিল। কিন্তু তাঁরাই ‘অভিযানের নূতন সংজ্ঞা তৈরি করেছিলেন... একাধিক ভার্জিন শৃঙ্গে বাঙালির প্রথম পা রাখার ইতিহাসও’ গড়ে তুলেছিলেন, এটি বাস্তব সত্য নয়।

শেষে কিছু তথ্যভ্রান্তির কথা। আমেরিকার রব হল ও নিউজিল্যান্ডের স্কট ফিশার নয়, রব হল নিউজিল্যান্ডের, স্কট ফিশার আমেরিকার। ষাটের দশকে ১৮ জন নয়, এভারেস্ট জয় করেছিলেন মোট ২১ জন। ১৯৬০ সালের ২৫ মে তিন চিনা আরোহীর আরোহণ নিয়ে একটা বিতর্ক ছিল। কিন্তু পরে এই আরোহণ স্বীকৃত হয়েছে। ২১ বার এভারেস্ট জয়ের প্রথম রেকর্ড করেছিলেন আপা শেরপা ২০১১ সালে। এখন আপা ও পূর্বার যৌথ দখলে সেই রেকর্ড।’

রথীন চক্রবর্তী। মহেশতলা, কলকাতা-১৪১

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE