Advertisement
১১ মে ২০২৪
political news

এই উপসর্গ গণতন্ত্রের পক্ষে শুভ নয়

কোনও সংশয় নেই, এই কণ্ঠস্বর মৌলবাদেরই। এই কণ্ঠস্বর চরম অসহিষ্ণুতার, অগণতান্ত্রিকতার, রাজনৈতিক অশিক্ষার। কোনও গণতান্ত্রিক পরিসরে রাজনৈতিক প্রতিপক্ষের মাথা কেটে আনার জন্য পুরস্কার মূল্য যে ঘোষিত হতে পারে না, সে সত্য উচ্চারণের অপেক্ষা রাখে না

এই সেই বিজেপি নেতা যোগেশ ভার্সনে।

এই সেই বিজেপি নেতা যোগেশ ভার্সনে।

অঞ্জন বন্দ্যোপাধ্যায়
শেষ আপডেট: ১৩ এপ্রিল ২০১৭ ০৩:৪৮
Share: Save:

কোনও সংশয় নেই, এই কণ্ঠস্বর মৌলবাদেরই। এই কণ্ঠস্বর চরম অসহিষ্ণুতার, অগণতান্ত্রিকতার, রাজনৈতিক অশিক্ষার। কোনও গণতান্ত্রিক পরিসরে রাজনৈতিক প্রতিপক্ষের মাথা কেটে আনার জন্য পুরস্কার মূল্য যে ঘোষিত হতে পারে না, সে সত্য উচ্চারণের অপেক্ষা রাখে না। কিন্তু তেমনই হল। পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রীর শিরশ্ছেদের বরাত দিলেন উত্তরপ্রদেশের এক বিজেপি যুব নেতা, মোটা অঙ্কের পুরস্কার মূল্যও ঘোষণা করলেন।

উদ্বেগটা বাড়ছে এ বার, দেশ জুড়েই বাড়ছে, কারণ অর্বাচীন এবং হিংস্র প্রস্তাবনাটা বার বার ভেসে উঠছে। সম্প্রতি কেরলের মুখ্যমন্ত্রীর বিরুদ্ধেও এমনই ঘোষণা এসেছে, তাঁরও ‘মাথার দাম’ ধার্য হয়েছে। পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রীও একই হিংসাত্মক ঘোষণার সম্মুখীন হলেন। পিনারায়ি বিজয়ন বা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়দের মতো মহারথীরা শুধু নন, ছোটখাটোদের অনেকেও ইতিউতি এমনই নানা দৃষ্টান্তের সম্মুখীন হচ্ছেন। বিষয়টাকে তাই আর বিচ্ছিন্ন বা বিক্ষিপ্ত আখ্যা দেওয়া যাচ্ছে না, ভয়ঙ্কর এক প্রবণতা হয়ে উঠছে এই হিংসা ক্রমশ।

মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে যে মন্তব্য এসেছে, স্বাভাবিক ভাবেই প্রায় গোটা বিরোধী রাজনৈতিক শিবির ঐক্যবদ্ধ হয়ে তার নিন্দায় মুখর। বিজেপি-ও নিন্দা করল, যুব নেতার মন্তব্যের সঙ্গে দলীয় অবস্থানের কোনও সম্পর্ক নেই বলে জানিয়ে দিল, সংশ্লিষ্ট রাজ্য সরকার চাইলে এই যুব নেতার বিরুদ্ধে পদক্ষেপ করতে পারে বলেও কেন্দ্রীয় মন্ত্রী সংসদে মন্তব্য করলেন। কিন্তু নিন্দার ভাষায় যে তীব্রতা প্রত্যাশিত ছিল, বিজেপির বয়ানে তা গরহাজিরই রইল।

কুকথার স্রোত এমনিতেই বাড়ছে রাজনৈতিক পরিসরে। হিংসার উল্লাসও বাড়ছে ক্রমশ। কিন্তু প্রতিপক্ষের ‘মাথার দাম’ ধার্য করে দেওয়ার এই নতুন রাজনৈতিক কেতা আরও ভয়ঙ্কর। অঙ্কুরেই এর বিনাশ ঘটানো জরুরি। শাসক দল সুলভ দায়বদ্ধতা দেখিয়ে বিজেপিকে অবিলম্বে কঠোরতম অবস্থান নিতে হবে এই ভয়ঙ্কর প্রবণতার বিরুদ্ধে। কারণ, উদ্ভবেই থামিয়ে দেওয়া না গেলে এই হিংসার স্রোত সর্বনাশা হয়ে উঠতে পারে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE