ফাইল চিত্র।
দীপাবলির শুভেচ্ছা সবাইকে। এবং সতর্কীকরণও বিধিসম্মতই থাকুক, এই উৎসব হোক আলোর, অসুরের উল্লাসের নয়।
এই সতর্কীকরণ আসলে কাগুজে বিধিসম্মতই থেকে যাবে শেষ পর্যন্ত, যদি না আইনের নিগড়কে আমরা শক্ত করে তুলতে পারি। যে সমাজের রাজনৈতিক তালেবররা বাজির এবং দূষণের এবং শব্দের তীব্র তাণ্ডবকে ‘পরম্পরা’ হিসাবে দেখে থাকেন, অতএব প্রকাশ্য প্রশ্রয়ের বরাভয়ও থাকে, সেই সমাজ কবে তার নিদ্রাভঙ্গের শেষে একদিন ভাববে, শব্দের তাণ্ডব এবার বন্ধ করা যাক— এর উপর নির্ভর করে থাকলে আর যাই হোক শব্দ-অসুরকে যে জব্দ করা যাবে না তা হলফ করেই বলে ফেলা যায়। সেই ভরসায় থাকলে সতীদাহ নিবারণে আরও এক শতাব্দী লেগে যেত হয়ত বা। তা যে হয়নি, তার কারণ ছিল আইন।
সেই আইনি পথেই শব্দতাণ্ডবকে বন্ধ করতে হবে অবিলম্বে। আদালতের নির্দেশের পর দিল্লি এই বছর কতটা পথ দেখাতে পারে, সেটা খুব গুরুত্বপূর্ণ। অগ্নিপরীক্ষায় বসছে দিল্লি, একবার উত্তীর্ণ হলে গোটা দেশের জন্য বড় মাইলফলক হয়ে দাঁড়াবে। ধোঁয়া ওগরানো অটো থেকে কলকাতার রাজপথকে মুক্ত করার মতো বহু আপাতঅসাধ্য কাজের সাক্ষী থেকেছি আমরা, সৌজন্যে থেকেছে সেই আদালতই। এবারও সেটাই হোক দ্রুত, এই শব্দদাপটের আসুরিকতার প্রসঙ্গে, বহু মানুষ কায়মনোবাক্যে সেই প্রার্থনা জানাচ্ছেন তা নিয়েও সংশয় থাকতে পারে না।
আরও পড়ুন: শব্দবাজির চেয়েও বেশি ক্ষতিকর আতসবাজি!
আদালতের রক্তচক্ষুর আগে আমরা সামাজিক ভাবে সেই পথটা প্রশস্ত করতে পারব? এই বাজির দৌরাত্ম্য যে কত মানুষ কত পশুর কী বিপুল ক্ষতি করে যাচ্ছে প্রতি বছর, সেটা বোঝার চেষ্টা শুরু করতে পারি আমরা? অন্তত নিজে এবার শব্দের দাপটে অংশ নেব না, এই সঙ্কল্পটা নিতে পারি? হাতে হাত মেলাতে পারি, কোনও এক বাসযোগ্য পৃথিবী উপহার দেওয়ার পরিকল্পনায়?
যদি পারি, তবে এবারই শুরু হোক সেই প্রতিরোধ। নবজাগরণের উত্তরাধিকারী এই বাংলা, পরম্পরার নামে শতেক বিষপ্রথাকে বিসর্জন দেওয়া বাংলা পারবে না? আরও একবার?
দীপের আলোর বর্তিকায় সেই অঙ্গীকার থাকুক।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy