Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪

সম্পাদক সমীপেষু

একটু বড় হতে মনে হল, স্বাধীনতা বলতে একটি দেশের স্বাধীনতা বোঝায়। মানে, ‘বিদেশি’ শাসন থেকে মুক্তি। এক স্বাধীন জাতি প্রতিষ্ঠার স্বীকৃতি। এবং এই বহুমূল্য প্রাপ্তিকে উত্তরাধিকারসূত্রে বহন করা। এই দেশে সেটা হয়নি বলে আমি মনে করি। যাঁদের ত্যাগ, বলিদানে ‘দেশ স্বাধীন’ হয়েছে, তাঁরা যদি বর্তমান অবস্থা দেখতেন, হয়তো বলতেন, ব্রিটিশ আমলই ভাল ছিল।

শেষ আপডেট: ২৩ অগস্ট ২০১৭ ০০:০০
Share: Save:

এখনও তো স্বাধীন নই

স্বাধীনতা— কী জিনিস, আজও বুঝিনি। ছোটবেলায়, স্কুলে পতাকা উত্তোলন, স্যরদের কাছে ‘স্বাধীনতা সংগ্রাম’-এর বীরগাথা শোনা, তার পর লাইন দিয়ে রসগোল্লা, ‘স্বাধীনতা’ নিয়ে একটি রচনা আর ইতিহাসের বইয়ে কয়েক পাতা মুখস্থ করা— সাকুল্যে এই ছিল আমার কাছে স্বাধীনতা দিবস।

একটু বড় হতে মনে হল, স্বাধীনতা বলতে একটি দেশের স্বাধীনতা বোঝায়। মানে, ‘বিদেশি’ শাসন থেকে মুক্তি। এক স্বাধীন জাতি প্রতিষ্ঠার স্বীকৃতি। এবং এই বহুমূল্য প্রাপ্তিকে উত্তরাধিকারসূত্রে বহন করা। এই দেশে সেটা হয়নি বলে আমি মনে করি। যাঁদের ত্যাগ, বলিদানে ‘দেশ স্বাধীন’ হয়েছে, তাঁরা যদি বর্তমান অবস্থা দেখতেন, হয়তো বলতেন, ব্রিটিশ আমলই ভাল ছিল। অন্তত আইনের একটা শাসন তো ছিল। তখন মেধার স্বীকৃতি ছিল, মুড়ি-মিছরির এক দর ছিল না।

স্বাধীন হওয়ার পর ক্ষমতা চলে গেল ক্ষমতালোভী, ধান্দাবাজ রাজনৈতিক দলের হাতে। এবং সেই ট্র্যাডিশন এখন ভয়ংকর ভাবে বইছে। নইলে এত উদগ্র কুৎসিত ভাবে রাস্তাঘাটে, মিডিয়ায় ‘স্বাধীনতা দিবস’ উদ্‌যাপন করতে হয়? এই দিনটি হওয়া উচিৎ আত্মসমীক্ষার দিন, যাতে স্বাধীন জাতি, সভ্য হিসাবে আমরা কতটা তৈরি হতে পেরেছি, তার বিচার করতে পারি। শিশুমৃত্যু, ক্রমাগত বেড়ে চলা নারীজাতির অবমাননা, ক্রমবর্ধমান বেকারত্ব ও চাকরি দেওয়ার নামে অপমান, ধর্মের নামে বিভাজন, খুন, লুঠপাট, মিথ্যাচার, বিচারের নামে প্রহসন— এ সবের মধ্যে ‘স্বাধীনতা উদ্‌যাপন’ করতে লজ্জা করে না! ‘স্বাধীনতা দিবস’-এর শুভেচ্ছা কেন? এই দেউলিয়া সংস্কৃতি, লুঠের মানসিকতা উদ্‌যাপনের জন্য? ছিঃ!

এ বার আমার কিছু ব্যক্তিগত মত। ১) এ দেশের প্রায় সমস্ত মেয়ে সব ব্যাপারে পুরুষের উপর নির্ভরশীল (সেই ভাবেই সমাজ ব্যবস্থা তৈরি হয়েছে)। পুরুষদের কথা মেনে চলতে হয়। এ দেশের মেয়েরা স্বাধীন নয়। ২) কিছু ব্যতিক্রম ছাড়া, তরুণরা কোনও না কোনও রাজনৈতিক দলের ছত্রছায়ায় থাকতে বাধ্য একটু খেয়েপরে বাঁচার জন্য। তারা কেউ স্বাধীন নয়। ৩) সাধারণ নাগরিকদের বেঁচে থাকতে হলে, গুন্ডাগিরি সহ্য করতে হয়। বাড়ি বানাতে গেলেও মিউনিসিপ্যালিটিকে ঘুষ দিতে হয়, সন্তানকে স্কুলে ভর্তি করতে হলে নেতাদের তোষামোদ করতে হয়, নাগরিকরা সে অর্থে স্বাধীন নয়। ৪) আমাদের প্রতিবাদের প্রায় সমস্ত ক্ষেত্র সংকুচিত। অনেক অন্যায় চুপ করে দেখতে হয়, সইতে হয়। সরকারি নীতির প্রতিবাদ করলে কেস দেওয়া হয় বা দেওয়ার হুমকি দেওয়া হয়। চাকরি ক্ষেত্রে ক্রমাগত হয়রানির স্বীকার হতে হয়। না, আমরা স্বাধীন নই। এর জন্য লড়াইটাই আসল স্বাধীনতার লড়াই।

অনির্বাণ বিশ্বাস

বর্ধমান

নীরস শিক্ষা

বর্তমানে এ রাজ্যের সরকারি এবং সরকারি সাহায্যপ্রাপ্ত স্কুলগুলিতে পঠনপাঠনের সময়সীমা বাড়িয়ে দশটা চল্লিশ থেকে চারটে তিরিশ করা হয়েছে। কিন্তু সময় বাড়ালেও তা শুধুই শ্রেণিকক্ষের পুঁথিগত বিদ্যাচর্চার মধ্যেই সীমাবদ্ধ রয়েছে। খাঁচার মধ্যে পাখিকে যেমন বন্দি করে রাখা হয়, তেমনই শ্রেণিকক্ষের মধ্যেও ছাত্রছাত্রীদের প্রায় ছ’ঘণ্টা সে ভাবেই আটকে রাখা হয়। সময়সীমা বাড়ানোর সঙ্গে শিক্ষাদানের পদ্ধতিতেও বৈচিত্র আনা একান্ত প্রয়োজন। নাচ, গান, ছবি আঁকা, খেলাধূলা, হাতের কাজ প্রভৃতি বিষয়গুলিকে এই সূত্রেই আবশ্যিক করা উচিত। কিছু স্কুল নিজস্ব উদ্যোগে এগুলি করে থাকে। কিন্তু সরকারি নির্দেশিকা না থাকায় অধিকাংশ স্কুলের শিক্ষকরা পুঁথিগত শিক্ষার বাইরে হাঁটতে চান না। ফলে শিক্ষার্থীদের মধ্যে কোনও আনন্দ নেই। আর শিক্ষাও হয়ে পড়ছে প্রাণহীন। নতুন প্রাণগুলির মধ্যে এত উদ্যম, প্রতিভা নষ্ট হয়ে যাচ্ছে ক্লাসরুমের চার দেওয়ালের মধ্যে। এই সিলেবাস-সর্বস্বতার জন্য হয়তো কিছু ভাল মার্কশিট বেরোবে, কিন্তু পরিপূর্ণ শিক্ষায় শিক্ষিত হয়ে সম্পূর্ণ মানুষ বেরোবে না। এই বিষয়ে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করতে চাই।

কল্যাণ মুখোপাধ্যায়

বোলপুর, বীরভূম

উঠতে মানা

সোদপুর স্টেশন-সংলগ্ন রেললাইন পারাপারের জন্য, সোদপুর-বারাসত রোডের ওপর যে ফ্লাইওভার আছে, সেই ফ্লাইওভারের ওপর পথচারীদের ওঠা-নামা কে বা কারা যেন পুরোপুরি বন্ধ করে দিয়েছে। দু’দিকেই ওঠা-নামার সিঁড়িপথে ব্যারিকেড করা হয়েছে। সম্ভবত অটোয় যাত্রী ওঠা-নামার সময় (ব্রিজের উপর) দুর্ঘটনার ঝুঁকি এড়াতে। অথচ ব্রিজের উভয় দিকের অ্যাপ্রোচে পথচারীদের সরাসরি ফ্লাইওভারে ওঠা বা নামার কোনও সুযোগ নেই। ব্যাপারটা আসলে দুটি অটোর রুটের (সোদপুর স্টেশন ও সোদপুর ট্রাফিক মোড়) যাত্রী তোলার রেষারেষির ফল। তাই আমরা সাধারণ পথচারীরা বাধ্য হয়েই জীবনের ঝুঁকি নিয়ে ফ্লাইওভারের তলা দিয়ে রেললাইন পারাপার করে সোদপুর-বারাসত রোডের অভিমুখে অহরহ সংযোগ রক্ষা করে চলেছি। ফলে প্রায়শই দুর্ঘটনা ঘটছে।

এই প্রসঙ্গে আরও একটি বিষয় মাথায় রাখা উচিত, সড়ক বা পূর্ত দফতর কিন্তু পথচারীদের সোদপুর ফ্লাইওভার বাইপাস করে হাঁটা পথে বারাসত রোডের ওপর ওঠার কোনও সুযোগ বা নির্দিষ্ট বন্দোবস্ত রাখেনি। ফ্লাইওভারের তলায় যেটুকু জায়গা (দুই পাশের নর্দমার পরিসরের সমান চওড়া, যা স্ল্যাব দিয়ে ঢাকা আছে মাত্র) পথচারীরা রেলস্টেশন ও বিটি রোডে ওঠার জন্য ব্যবহার করে, সেই স্বল্প পরিসর জায়গাটাও বর্তমানে দোকানদার, হকার আর অটো-টোটোর দখলে চলে গিয়েছে। পুজোর বাজারে এদের দৌরাত্ম্যে পথচারীদের পথচলা দায়।

আলোক রায়

কলকাতা-১১০

জ্যাম-যন্ত্রণা

এয়ারপোর্টের কাছে যশোর রোডে যে ভয়াবহ জ্যাম-যন্ত্রণা নিত্যযাত্রীরা ভোগ করছেন, তা আর বলার অপেক্ষা রাখে না। সারা বছর, বিশেষ করে বর্ষার সময় এই অঞ্চলে ভয়ানক জ্যাম হয়। আগে আড়াই নম্বর গেট থেকে রাস্তা খারাপ ছিল। এখন রাস্তা অনেক ভাল হয়েছে। তা সত্ত্বেও জ্যাম হওয়ার কারণ, আড়াই নম্বরের কাটা গেটের সিগন্যাল। কিছু অযোগ্য সিভিক ভলান্টিয়ার এখানে যান নিয়ন্ত্রণ করেন। নিয়মের কোনও বালাই নেই, সিগন্যাল কত ক্ষণ বন্ধ থাকা উচিত, কোনও ধারণা নেই। অফিস টাইমে কোন দিকের গাড়ি বেশি ছাড়া উচিত, সেটাও অজানা।

অন্য কারণটি হল, বেলঘরিয়া এক্সপ্রেসওয়ের একটি ফ্লাইওভার বহু দিন বন্ধ। ফলে ওই রাস্তার যানবাহন যশোর রোড ধরে গিয়ে এয়ারপোর্ট তিন নম্বরের কাছে রাইট টার্ন করে। ফলে গাড়ির গতি মন্থর হয়ে যায়। এর জন্য দুটো পরামর্শ— আড়াই নম্বর থেকে একটি ফ্লাইওভার ১ নম্বর গেট পর্যন্ত করা এবং এয়ারপোর্ট ৩ নম্বর গেটে একটি স্লিপ রোড খুলে দেওয়া, বারাসতের দিক থেকে যে গাড়িগুলো কলকাতার দিকে যায় তাদের জন্য। এয়ারপোর্ট ৩ নম্বর গেটে যে প্যারালাল রাস্তা এয়ারপোর্টের মধ্যে রয়েছে, সেই রাস্তা একদম শুনশান থাকে। সারা দিনে মাত্র কয়েকটি কার্গোর গাড়ি চলাচল করে। এই রাস্তা এয়ারপোর্ট অথরিটি খুলে দিলে যশোর রোডের জ্যাম-যন্ত্রণা দূর হয়। এয়ারপোর্ট অথরিটি নিরাপত্তার কারণে আগে এই রাস্তা ব্যবহারের অনুমতি দেয়নি। কিন্তু এখন নতুন টার্মিনাল হওয়ায় অনুমতি দিতে অসুবিধা হওয়ার কথা নয়।

সমীরবরণ সাহা

কলকাতা-৮১

কর্পূরের মতোই

পুজোর জন্য ছোট ছোট খণ্ডের কর্পূর কিনতে হয়। আগে প্রতি খণ্ডের দাম ছিল এক টাকা। জিএসটি চালু হওয়ার পর দাম বেড়ে হয়েছে দু’টাকা। এ বার তো পয়সা-কড়িও কর্পূরের মতোই উবে যাবে!

সুভাষ সরকার

কলকাতা-৩৫

চিঠিপত্র পাঠানোর ঠিকানা

সম্পাদক সমীপেষু,

৬ প্রফুল্ল সরকার স্ট্রিট, কলকাতা-৭০০০০১।

ই-মেল: letters@abp.in

যোগাযোগের নম্বর থাকলে ভাল হয়

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE