Advertisement
২৭ এপ্রিল ২০২৪

সম্পাদক সমীপেষু

আর ক’দিন পরেই বাঙালি তার শ্রেষ্ঠ উৎসবে মেতে উঠবে। বছরভর অপেক্ষার পর যখন দুর্গাপুজো আসে, তখন সবাই পুরনো দুঃখ, বেদনা, হতাশা কাটিয়ে সেই আনন্দে মেতে ওঠার চেষ্টা করে।

শেষ আপডেট: ২১ সেপ্টেম্বর ২০১৭ ০১:০১
Share: Save:

ডিজে’র উপদ্রব

আর ক’দিন পরেই বাঙালি তার শ্রেষ্ঠ উৎসবে মেতে উঠবে। বছরভর অপেক্ষার পর যখন দুর্গাপুজো আসে, তখন সবাই পুরনো দুঃখ, বেদনা, হতাশা কাটিয়ে সেই আনন্দে মেতে ওঠার চেষ্টা করে। অথচ দশমীর পর দুর্গাপুজোর বিসর্জনকে কেন্দ্র করে যে ‘ডিজে সংস্কৃতির’ আমদানি ঘটেছে গত কয়েক বছরে এ শহরে তথা গোটা রাজ্যে, তা কিন্তু অনেক ক্ষেত্রেই বিষাদের কারণ হয়ে ওঠে। কারণ এই পুজোর শোভাযাত্রাগুলি যে রাস্তা দিয়ে যায়, তার দু’ধারের বাড়িগুলিতে অনেক বৃদ্ধ-বৃদ্ধা, হার্টের রোগী কিংবা ছোট বাচ্চা থাকতে পারে এবং সেই ডিজে মিউজিকের উচ্চৈঃস্বরের স্পিকারের আওয়াজ তাদের সমস্যার সৃষ্টি করে। আমার এ রকম দু’একটি ঘটনার কথা জানা আছে, যেখানে অসুস্থ হৃদ্‌রোগীকে হাসপাতালে পর্যন্ত ভর্তি করতে হয়েছে। আর এ সমস্যার ভুক্তভোগীর সংখ্যা যে সর্বত্র রয়েছে, তা বলার অপেক্ষা রাখে না। তাই আমার প্রশাসনের কাছে বিনীত অনুরোধ, এই বিষয়টির দিকে নজর দেওয়া অত্যন্ত জরুরি। ঠাকুর বিসর্জনে ডিজে মিউজিক সিস্টেমের ব্যবহার বন্ধ না করতে পারলেও তাতে অন্তত একটা নিয়ন্ত্রণ প্রয়োজন। যদি পুজো কমিটিগুলোকে শব্দের ডেসিবেল বেঁধে দেওয়ার অথবা ঘিঞ্জি বসতিপূর্ণ এলাকায় আওয়াজ কিছুটা কমানোর নিদান দেওয়া যায়, তা হলেও অনেকটা সুরাহা হতে পারে।

শান্তপ্রিয় চক্রবর্তী

কলকাতা-১০৯

দেশভাগের অঙ্ক

2 দেশভাগ নিয়ে সুগত বসুর প্রবন্ধ (‘ঘোরতিমিরঘন...’, ১৫-৮) ও তার পরিপ্রেক্ষিতে চিঠিপত্র পড়েছি। দেশভাগ ও বাংলা ভাগ নিয়ে চুলচেরা বিচার-বিশ্লেষণ, বিতর্কের শেষ নেই। কে দায়ী, কাদের মুখ্য ভূমিকা; কারা গৌণ স্থানে, বিদগ্ধমহলে সে চর্চা আজও চলছে। হিন্দুদের দাবি মুসলমানদের জন্য দেশ ভাগ হয়েছে। মুসলমানগণ সে অভিযোগ মানেন না। এই তুমুল বিতর্কের মাঝে আমার মতো সাধারণ মানুষের একটা ভিন্ন বক্তব্য আছে। দেশ ও বাংলা ভাগের মতো বিষয়ে জনসংখ্যার একটা অপরিসীম গুরুত্ব আছে। কিন্তু অধিকাংশ বিতর্কে এই অপরিহার্য বিষয় উপেক্ষিত হয়ে থাকে। এখানেও তাই দেখছি। জনসংখ্যাকে আলোচনায় ঠাঁই দিলে একটা অপরিহার্য কিন্তু উপেক্ষিত সত্য সামনে উঠে আসবে।

১৮৭২ সালের জনগণনায় বাংলার জনসংখ্যার হিন্দু ১,৮১,০০,৪৩৮ এবং মুসলমান ১,৭৬,০৯,১৩৫— হিন্দুপ্রাধান্য মাত্র ৪,৯১,৩০৩ জনে। কিন্তু ১৮৮১ সালে মুসলমানের সংখ্যা হিন্দুর চেয়ে ৩,২৩,১৩০ জন বেশি বলে জনগণনার খবরে প্রকাশ। ১৯৪১ সালের গণনায় দেখা গেল বাংলার মুসলমান ৩,৩০,০৫,৪৩৪ এবং হিন্দু ২,৫০,৫৭,০২৪ জন। অর্থাৎ হিন্দুর চেয়ে মুসলমান ৭৯,৪৬,৪১০ জনে সংখ্যাগুরু। এই সংখ্যাগরিষ্ঠতা তাঁদের পৃথক বাসভূমি দাবির সব চেয়ে জোরাল ভিত্তি হয়ে দাঁড়ায়।

১৯০১ সালের সেন্সাসে ১৮,৬১,০০০ নমঃশূদ্র এবং ৫ লক্ষ পোদ বা পৌণ্ড্রক্ষত্রিয়ের সংবাদ পেশ করে জনগণনার প্রতিবেদনে এক চমকপ্রদ তথ্য জানানো হয়েছিল। ঢাকা ও চট্টগ্রাম বিভাগের ১ কোটি ৫ লক্ষ মুসলমানের নব্বই লক্ষ নমঃশূদ্র এবং পৌণ্ড্রক্ষত্রিয়ের ধর্মান্তরিত উত্তরপুরুষগণ। “It would probably be safe to say that at least nine millions of the Muhammadans of Bengal Proper belong to this stock.” (Census of India 1901, vol. VI, p. 396.)। ১৯০১ থেকে ১৯৪১ সালের মধ্যে ধর্মান্তরিত নমঃশূদ্র ও পৌণ্ড্রক্ষত্রিয়ের সংখ্যা নব্বই লক্ষ থেকে বৃদ্ধি পেয়ে ১,০১,৮৮,০০০ হয়।

কেন নমঃশূদ্র ও পৌণ্ড্রক্ষত্রিয়রা ধর্মান্তরিত হয়ে ইসলামের আশ্রয় নিয়েছিলেন, সে আলোচনা করছি না। তবে এইটুকু বললেই যথেষ্ট হবে যে, জাতব্যবস্থা কণ্টকিত বঙ্গে এই দুই জাতের মানুষের জীবন অশেষ গঞ্জনা ও নিগ্রহপূর্ণ ছিল। অপমান, অত্যাচার, বৈষম্য ও ঘৃণা থেকে মুক্তি পেতে তাঁরা ইসলামের ছায়াতলে আশ্রয় নিয়েছিলেন। সংখ্যাগরিষ্ঠ হলেও অবিভক্ত পূর্ববঙ্গে মুসলমান হিন্দুর শ্রদ্ধার পাত্র ছিল না। হিন্দু জনগণ ও নেতৃবৃন্দ এ সব নিয়ে বেশি মাথা ঘামান না। তাঁরা দোষারোপে ব্যস্ত। জিন্নার বদলে অন্য কেউ হলেও বাংলা ভাগ অপরিহার্য হয়ে পড়ত।

এ কথা বললে অত্যুক্তি হয় কি যদি বলি বাঙালি হিন্দুগণ মহম্মদ আলি জিন্নার হাতে পূর্ব পাকিস্তান উপহার হিসাবে তুলে দিয়েছিলেন?

অতুলকৃষ্ণ বিশ্বাস

কলকাতা-৫২

পুলিশ

পৃথিবীতে যত ধরনের পেশা আছে এবং যে পেশায় মানুষকে সেবা করার সুযোগ আছে তার মধ্যে সবচেয়ে বেশি সুযোগ পুলিশের চাকরিতে। অথচ মানুষের সবচেয়ে বেশি অভিশাপ কুড়োয় পুলিশ। আমি নিজে দেখেছি অনেক ভাল ভাল অফিসার আছেন যাঁরা দিন রাত অক্লান্ত পরিশ্রম করে নিজেদের কর্তব্য পালন করেন। নীচের তলারও অনেক কর্মী খুব ভাল কাজ করেন। কিন্তু রাস্তায় বেরিয়ে আপনি যদি যে কোনও গাড়ির ড্রাইভারকে পুলিশ সম্পর্কে জিজ্ঞেস করেন, দেখবেন কী অসম্ভব ঘৃণা পুলিশের উপর। কারণটা কী? আমি অনেক ড্রাইভারকে জিজ্ঞাসা করেছি, তাদের উত্তর মোটামুটি একই। পুলিশ অকারণে মানুষকে হয়রান করে, ঝুটমুট কেসে ফাঁসিয়ে দেয়, তুইতোকারি ছাড়া কথা বলে না, তাদের সঙ্গে আসামির মতো ব্যবহার করে। এখানেই আমার প্রশ্ন, যে পুলিশরা রাস্তায় ডিউটি করেন, তাঁরা সরাসরি মানুষের সঙ্গে মিলবার সুযোগ পায়। তাঁরা কি রাস্তায় ডিউটি করার সময় একটু মানবিক হতে পারেন না? একটু ভদ্র আচরণ করতে পারেন না? তা হলে তো সমগ্র পুলিশ সম্পর্কে মানুষের ধারণাটা বদলে যায়। মানুষকে সেবা করার এই যে সুযোগ সেটা ক’জন পায়? সেই সুযোগটার সদ্ব্যবহার করা উচিত।

সমীরবরণ সাহা

কলকাতা-৮১

একটি ভুল

রাজ্যের গ্রন্থাগারগুলোর অচলাবস্থা কাটিয়ে আধুনিকীকরণে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করায় উদ্যোগী সরকারের প্রশংসা করে আমার একটি চিঠি (‘শুভ উদ্যোগ’, সম্পাদক সমীপেষু, ১২-৯) প্রকাশিত হয়েছিল। ওই চিঠিতে আমি কিছু ভুল তথ্য পরিবেশন করেছি। আমি লিখেছি, ‘জেলা, মহকুমা, শহর ও গ্রাম নিয়ে হুগলি জেলায় মোট ১৭টি গ্রন্থাগার...’। ঠিক তথ্যটি হল, হুগলিতে জেলা, টাউন ও গ্রামীণ নিয়ে সরকার পোষিত গ্রন্থাগারের মোট সংখ্যা ১৫৮। জেলা গ্রন্থাগার ১টি (চুঁচুড়া সদর), টাউন গ্রন্থাগার ২২টি ও গ্রামীণ গ্রন্থাগারের সংখ্যা ১৩৫টি। গোটা রাজ্যে সরকার পোষিত মোট গ্রন্থাগারের সংখ্যা প্রায় আড়াই হাজার। আমার এই অনিচ্ছাকৃত ত্রুটির জন্য আমি ক্ষমা প্রার্থনা করছি।

সমীরকুমার সাহা

শ্রীরামপুর, হুগলি

দুটি ভুল

আমার ‘রাজ্য সরকারই বাংলাকে...’ (৫-৯) লেখায় দুটি সংশোধন হবে। এক, শুনলাম এখন কিছু ইংরেজি মাধ্যম স্কুলেও বাংলা নাকি প্রথম ভাষা হিসেবে নেওয়া যায়। তবুও অবশ্য আমি বলব, এটা একটা চোখে ধুলো দেওয়ার কৌশল মাত্র— বিষয়গুলি যদি ইংরেজিতে পড়ানো হয়, প্রথম ভাষার সে গৌরব থাকে না, নাম ‘প্রথম ভাষা’ হলেও। ইংরেজির কাছে তার মাথা হেঁট হয়েই যায়। ছাত্রের মনে হবেই যে, আমার ভাষায় সব বিষয় পড়ানোর যোগ্যতা তৈরি হয়নি। যিনি বা যাঁরা এই কায়দা উদ্ভাবন করেছিলেন তাঁদের চাতুর্যকে অভিনন্দন। দ্বিতীয় সংশোধন, যেটি ভুল হয়েছে— রঞ্জুগোপাল মুখোপাধ্যায় কমিটি পঞ্চম শ্রেণিতেই ইংরেজি বহাল রাখার সুপারিশ করেছিলেন, স্রোতের বিরুদ্ধে গিয়ে। কিন্তু সরকার তা গ্রহণ করেননি, ফলে তাঁরা একটি বিশেষ সরকারি আদেশবলে প্রথম শ্রেণি থেকেই ইংরেজি পড়ানোর অনুমোদন করেন।

পবিত্র সরকার

কলকাতা-৮৪

চিঠিপত্র পাঠানোর ঠিকানা

সম্পাদক সমীপেষু,

৬ প্রফুল্ল সরকার স্ট্রিট,
কলকাতা-৭০০০০১।

ই-মেল: letters@abp.in

যোগাযোগের নম্বর থাকলে ভাল হয়

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE