Advertisement
২৭ এপ্রিল ২০২৪

সম্পাদক সমীপেষু

জলাশয়েই প্রতিমা নিরঞ্জন করতে হবে— এমন কোনও শাস্ত্রীয় বিধি আছে কি না জানা নেই। তবে টালিগঞ্জের রানিকুঠির রানিদিঘিতে ক’দিন আগে দেখলাম অধিকাংশ মানুষ গণেশ ও বিশ্বকর্মাকে জলাশয়ের পাড়ে রেখে যাচ্ছেন।

শেষ আপডেট: ০৬ অক্টোবর ২০১৭ ০০:৪৯
Share: Save:

বিসর্জন তো হয় মন্ত্রেই

জলাশয়েই প্রতিমা নিরঞ্জন করতে হবে— এমন কোনও শাস্ত্রীয় বিধি আছে কি না জানা নেই। তবে টালিগঞ্জের রানিকুঠির রানিদিঘিতে ক’দিন আগে দেখলাম অধিকাংশ মানুষ গণেশ ও বিশ্বকর্মাকে জলাশয়ের পাড়ে রেখে যাচ্ছেন। পর দিন পুরসভার ট্রাক এসে প্রতিমা নিয়ে যাচ্ছে। গত বছর লক্ষ্মীপুজো, এ বছরের শুরুতে সরস্বতী পুজোর পরেও এই একই দৃশ্য।

ব্যতিক্রম কিন্তু দুর্গা ও কালী প্রতিমা। জলদূষণ হবে জেনেও কান ফাটানো বাদ্যি, ডিজে সহযোগে নিরঞ্জন। বৃদ্ধ বা অসুস্থরা অসহায়। ছাত্রছাত্রীদের কথাও ভাবা হয় না। পুজোর ক’দিন সরকারের নির্দিষ্ট করা লাউডস্পিকারের বিধিকেও বুড়ো আঙুল। পুলিশ নীরব দর্শক।

রানিদিঘিতে সারা দিন অসংখ্য মানুষ স্নান করেন। বড়দের মতো ছোটরাও সাঁতার কাটে। এদের কথা কেউ ভাবেন বলে মনে হয় না। ছোটবেলায় পূর্ববঙ্গে দেখতাম, গ্রামে যে দু’চারটে দুর্গা বা কালীপুজো হত, তার নিরঞ্জন হচ্ছে জোয়ার-ভাটার নদীতে। পুকুরে কখনও নয়। আর লক্ষ্মী-সরস্বতীর কখনও নির়ঞ্জন হত না। পুরোহিত মশাইরা বলতেন, এঁদের বিসর্জন বা নিরঞ্জন অনুচিত। সারা বছর এঁদের ঘরে রাখতে হয়। পরের বছর পুজো এলে পুরনো প্রতিমা বাগানে বা সবজি খেতের কোণে রাখা হত। এখন রানিদিঘিতে অনেকেই প্রায় সেটাই করছেন।

কলকাতা-সহ এ রাজ্যের নানা জায়গায় প্রতিমা নিরঞ্জন নিয়ে কত কাণ্ড! শুনেছি দশমী পুজোর পরে ‘নিরঞ্জন’ হয়ে যায় মন্ত্রেই। নদী বা পুকুরে প্রতিমা ফেলার প্রয়োজন নেই। নিয়মকানুন তো এক রকমই হওয়া উচিত। পণ্ডিত ও বিজ্ঞানমনস্করা আলোকপাত করলে নদী-পুকুর ভরাট হবে না। জলদূষণও কমে যাবে। সরকারও নিশ্চয়ই মান্যতা দেবে।

চিরঞ্জীব

কলকাতা-৮০

উভয়সংকট

অযৌক্তিক ‘রেফার’ ঠেকাতে স্বাস্থ্য ভবনে একটি কন্ট্রোল রুম খোলা হচ্ছে। কিন্তু রোগী না দেখে কী ভাবে দূর থেকে বোঝা যায় এর যৌক্তিকতা? জরুরি বিভাগের ডাক্তাররা ভয়ে বা পরামর্শ মেনে ঠিক ভাবে, ঠিক জায়গায় রেফার না করলে, পরবর্তী কালে ক্রেতা সুরক্ষা আইনের মুখোমুখি হত্তয়ার সম্ভাবনা থেকে যায়। এ এক উভয়সংকটের সৃষ্টি হতে চলেছে। বাম আমলে কোথায় কত বেড খালি আছে এমন একটি কেন্দ্রীয় (আইভিআরএস) প্রকল্প নেওয়া হয়েছিল, যা পরে ব্যর্থ হয়। এখানেও ইতিহাসের পুনরাবৃত্তি হবে না তো?

বাসুদেব দত্ত

চৈতলপাড়া, শান্তিপুর

আয়ু ফুরনো ব্রিজ

বহরমপুর হল মুর্শিদাবাদের প্রাণকেন্দ্র। এই বহরমপুরেই ভাগীরথী নদীর উপরে ‘রাধার ব্রিজ’ নামে একটা ব্রিজ আছে। প্রতি দিন হাজার হাজার মানুষ-সহ যানবাহন চলাচল করে এর উপর দিয়ে। অথচ আজ থেকে কম করে দশ বছর আগেই ব্রিজটার আয়ু ফুরিয়ে গেছে। কোনও সংস্কার করা হয়নি। একটা জেলা শহরের ব্রিজের হাল যদি এমন হয়, তা হলে গ্রামাঞ্চলের ব্রিজগুলোর কী অবস্থা হবে! প্রতি দিন মানুষ প্রাণ হাতে করেই ব্রিজ পার হয়, কিন্তু প্রশাসনের কোনও হেলদোল নেই। হয়তো এক দিন সেই উড়ালপুলের মতো ভেঙে পড়বে, হাজার হাজার মানুষ মরবে, তবে প্রশাসনের টনক নড়বে। রাস্তাগুলোর হালও তো কহতব্য নয়। ও দিকে গির্জার মোড় থেকে এ দিকে চোঁয়াপুরের রাস্তায় হামেশাই টুকটুকগুলো উলটে যাচ্ছে। প্রশাসনকে অনুরোধ করছি, এই সমস্ত বেহাল ব্রিজ এবং রাস্তাঘাটের সংস্কারের উদ্যোগ নেওয়া হোক।

আজিজা নাসরিন

মুর্শিদাবাদ

প্রাণ হাতে

উত্তর ২৪ পরগনার জেলা সদর শহর বারাসত। দুটি গুরুত্বপূর্ণ জাতীয় সড়ক ও দুটি রাজ্য সড়ক থাকা সত্ত্বেও যাতায়াত ব্যবস্থার অবনতি ঘটেছে অপরিকল্পিত নগরায়ন আর ক্রমবর্ধমান জনসংখ্যার চাপে। যানজট কমানোর উদ্দেশ্যে ২০০৮ সালে শহরের দুই প্রাণকেন্দ্র চাঁপাডালি মোড় আর কলোনি মোড়-কে ফ্লাইওভারের মাধ্যমে যুক্ত করা হয়। এর ফলে তৈরি হয় নতুন এক সমস্যা। বারাসতকে দুই ভাগে ভাগ করে দেওয়া ১২নং রেলগেটের ওপর দিয়ে ফ্লাইওভারটি যাওয়ায় বন্ধ করে দেওয়া হয় রেলগেটের লেভেল ক্রসিং। কেবল হেঁটে পারাপারের জন্য সরু কিছু অংশ খোলা রেখে বন্ধ করে দেওয়া হয় পুরো রেলগেট! উৎসবের সময় পুলিশ পিকেটিং করে ভিড় সামাল দেওয়ার চেষ্টা করা হলেও, সারা বছর হাজারও মানুষকে প্রাণ হাতে করেই পারাপার করতে হয় এই অরক্ষিত, বেহাল রেলগেট, ব্যস্ত রেল লাইন দিয়ে।

দিনের পর দিন এ ভাবেই চূড়ান্ত অব্যবস্থার সৃষ্টি হলেও কোনও সুরাহা মেলেনি। রেলগেটের দুই পাশেই রয়েছে একাধিক স্কুল, কলেজ, হাসপাতাল, গুরুত্বপূর্ণ সরকারি কার্যালয়; রয়েছে থানা, দমকলের মতো আপত্কালীন পরিষেবা প্রদানকারী দফতর। স্কুল-কলেজের ছাত্র-ছাত্রীদের পাশাপাশি অফিসযাত্রী কিংবা সাধারণ মানুষ— সকলকেই এই বিপজ্জনক রেলগেট পার হতে হয় প্রতি দিন। উড়ালপুলের ওপর দিয়ে মোটরচালিত ব্যতীত অন্য যানবাহনের চলাচল নিষিদ্ধ হওয়ার ফলে সাইকেল আরোহীরা রেলগেটের অপরিমিত সরু ফাঁক দিয়ে সাইকেল গলিয়ে হাতে সাইকেল নিয়ে লাইনের উপর দিয়ে পারাপার করেন। অনেক সাইকেল ও ভ্যানচালক বাধ্য হন বেআইনি ভাবে ব্রিজের ওপর দিয়ে চলাচল করতে! ফলে ব্যস্ত সময়ে অসাবধানতাবশত একাধিক দুর্ঘটনা ঘটেছে।

এমতাবস্থায় একমাত্র সমাধান সাবওয়ে আর ফুটব্রিজ। প্রতি ভোটের আগেই সাবওয়ের প্রতিশ্রুতি শোনা গেলেও আজও তা দিনের আলো দেখেনি। অথচ আজও রেলগেটের পাশে ২০১৫ সালের পূর্ব রেলের সাবওয়ের শিলান্যাসের প্রস্তরখণ্ডটি পড়ে আছে!

জয়দীপ দাশ

বনমালীপুর, বারাসত

নরক ওভারব্রিজ

শিয়ালদহ উত্তর শাখায় চাকদহ স্টেশনে একটিমাত্র ওভারব্রিজ, যার মাথায় কোনও ছাউনি নেই আর সমতল জায়গাটা এখন কড়াই-এর মতো হয়ে গিয়েছে। ফলে সামান্য বৃষ্টিতেই পায়ের পাতা-ডোবা জল জমে যায়। সঙ্গে আবর্জনার স্তূপ। জায়গাটা আক্ষরিক অর্থেই হয়ে ওঠে নরক। রেল কর্তৃপক্ষ একটু নজর দেবেন কি?

শুভংকর সাহা

সিন্দ্রানী, উত্তর ২৪ পরগনা

এক্সপ্রেস কেন

সম্প্রতি ৫৩০০৪/৫৩০০৩ হাওড়া-মালদহ টাউন ফাস্ট প্যাসেঞ্জার ট্রেনটিকে ১৩০৩৪/১৩০৩৩ হাওড়া-কাটিহার এক্সপ্রেসে পরিবর্তিত করা হয়েছে। কিন্তু ট্রেনটিকে এক্সপ্রেস করার ফলে মালদহ থেকে মুর্শিদাবাদের বিস্তীর্ণ এলাকার মধ্যে দিয়ে যাওয়া সাধারণ যাত্রীদের কোনও আলাদা উপকার হয়নি। কারণ, আগে মালদহ টাউন ফাস্ট প্যাসেঞ্জার ট্রেনটি সময় নিত ১১ ঘণ্টা ১৫ মিনিট। আর এক্সপ্রেস হয়ে যাওয়ার পর ওই ট্রেন একই দূরত্ব যেতে সময় নিচ্ছে পুরো ১১ ঘণ্টা। অর্থাৎ এক্সপ্রেস হওয়ার ফলে সাধারণ যাত্রীরা এক্সপ্রেসের ভাড়া (যেটা ফাস্ট প্যাসেঞ্জার থেকে অনেকটাই বেশি) দিয়ে মাত্র ১৫ মিনিট সময় সাশ্রয় করবেন। তা হলে ট্রেনটিকে এক্সপ্রেস বলার দরকার কী ছিল? ট্রেনটিকে প্যাসেঞ্জার ট্রেন হিসেবে রেখে সরাসরি ভাড়া বাড়িয়ে দিলেই তো এত প্রশ্ন হত না!

পূর্ব রেল তথা ভারতীয় রেলের কাছে তাই আমাদের অনুরোধ যে, ট্রেনটি এক্সপ্রেস হলে বাকি এক্সপ্রেসগুলোর মতোই একই দূরত্ব যেতে যাতে কম সময় লাগে, তার ব্যবস্থা করুন। মানুষ টাকা দিয়ে পরিষেবা না পেলে, সেই পরিষেবার কোনও দাম থাকে না।

শৌমিক দাস

রঘুনাথগঞ্জ, মুর্শিদাবাদ

চিঠিপত্র পাঠানোর ঠিকানা

সম্পাদক সমীপেষু,

৬ প্রফুল্ল সরকার স্ট্রিট,
কলকাতা-৭০০০০১।

ই-মেল: letters@abp.in

যোগাযোগের নম্বর থাকলে ভাল হয়

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Durga Puja Immersion Durga Idol
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE