Advertisement
২৭ এপ্রিল ২০২৪

সম্পাদক সমীপেষু

বড় বড় মানুষেরা বড় হন, কারণ তাঁরা মানুষের সত্তাটা নিয়ে কথা বলেন, বাহ্যিক অলংকার নিয়ে নয়। তাই শেক্সপিয়রের সময় কী প্রযুক্তি ছিল, রশফুকো-র সময় কোন গ্যাজেট আবিষ্কৃত হয়েছিল, এগুলো বিবেচনার বিষয়ই নয়।

শেষ আপডেট: ১৮ ডিসেম্বর ২০১৭ ০০:৩২
Share: Save:

তাঁরা থেকে যাবেন

ইন্দ্রজিৎ রায় লিখছেন (‘পিছুটান নিয়ে থাকলে হবে?’ ৫-১২), আমরা কথায় কথায় রামমোহন রবীন্দ্রনাথ বিবেকানন্দ প্রমুখ মনীষীর বাণী ও চিন্তার শরণ নিই, কারণ মহামানবদের প্রতি আমাদের অন্ধ বিশ্বাস, বা গড্ডলিকা প্রবাহ। তিনি লিখছেন, ‘অতীত-পাড়া আমাদের অভ্যাস’, কিন্তু ‘যুক্তিটা হাস্যকর। দেড়শো-দুশো বছর তো দূর, গত চল্লিশ বছরেই আমাদের দুনিয়া আমূল বদলে গেছে।’ বলে তিনি উদাহরণ দিয়েছেন, এখন টিভি এসেছে, ইন্টারনেট এসেছে, ইত্যাদি। অবাক লাগল। রবীন্দ্রনাথের সময় টিভি ছিল কি না, তিনি অটোয় চড়েছিলেন কি না, তা একেবারেই তাৎপর্যহীন। আসল কথা হল, তিনি মানুষ সম্পর্কে কী বলে গিয়েছেন। মানুষের ভেতরটা সম্পর্কে, তার চরিত্র সম্পর্কে কী বলে গিয়েছেন। তার মানসিক সংকট থেকে উত্তরণের কী পথ বাতলেছেন। আমাদের জীবনে মোবাইল, প্লাস্টিক মানি এসেছে, বাহ্যিক ভাবে জীবন অনেকটাই বদলে গেছে। কিন্তু আমাদের অন্তর-জীবন? আমাদের প্রেম-চাওয়া? আমাদের নিঃসঙ্গতা? আমাদের কষ্ট? সুখ? কান্না?

বড় বড় মানুষেরা বড় হন, কারণ তাঁরা মানুষের সত্তাটা নিয়ে কথা বলেন, বাহ্যিক অলংকার নিয়ে নয়। তাই শেক্সপিয়রের সময় কী প্রযুক্তি ছিল, রশফুকো-র সময় কোন গ্যাজেট আবিষ্কৃত হয়েছিল, এগুলো বিবেচনার বিষয়ই নয়। পৃথিবীতে যত নতুন আবিষ্কার হোক, আর মানুষ প্রতি বুধবার রকেটে চড়ে চাঁদে যাক, প্রায় আক্ষরিক ভাবে শেক্সপিয়র গ্যেটে রবীন্দ্রনাথের কথা আমাদের পথ দেখাবে, কালোত্তীর্ণ হয়েই, কারণ তা আমাদের স্ব-ভাব চেনায় জানায়, আর এই স্বভাব সহস্র বছরেও বদলাবে বলে মনে হয় না।

অতনু বসু সল্ট লেক

তিন দিন

এই বছর লাইফ সার্টিফিকেট জমা দেওয়ার জন্য পর পর তিন দিন ব্যাংকে গিয়েছিলাম। প্রথম দিন, এক ঘণ্টা লাইনে দাঁড়িয়ে থাকার পর একটি ফর্ম দেওয়া হল। ফর্ম ভর্তি করে যখন সেটি জমা দিতে গেলাম, দেখলাম আমার সামনে পঞ্চাশ জন মতো দাঁড়িয়ে। কিছুক্ষণ পরে জানতে পারলাম, ‘লিংক ফেল’ হয়ে গেছে, তাই অপেক্ষা করতে হবে। অনেকক্ষণ দাঁড়িয়ে জানলাম, কাজ হবে না। বাড়ি ফিরে এলাম। পরের দিন আবার ব্যাংকে গেলাম। যে কাউন্টার ফর্ম দেওয়ার জন্য নির্দিষ্ট ছিল, তাতে নোটিস বোর্ড দেওয়া হয়েছে— ‘কর্মীর অভাবে আজ লাইফ সার্টিফিকেট নেওয়া হবে না।’ পরের দিন সকাল সকাল গিয়ে লাইন দিয়ে ফর্ম জমা দিয়ে এলাম। কিন্তু কোনও রসিদ আমাকে দেওয়া হল না। এই তিন দিন আসা যাওয়ার জন্য রিকশা ভাড়া লাগল ১৮০ টাকার মতো। এই বিষয়ে একটি প্রস্তাব দিচ্ছি: লাইফ সার্টিফিকেট দুই মাস নেওয়া হোক। নভেম্বর ও ডিসেম্বর— এই দুই মাসে এই কাজ সম্পন্ন করতে পারলে গ্রাহকেরা উপকৃত হবে।

বীরেন সরকার অরবিন্দনগর, বাঁকুড়া

বয়স্ক মানুষ

প্রতি বছর নভেম্বর মাসে এক বার পেনশন-প্রাপকদের লাইফ সার্টিফিকেট দেওয়ার নিয়ম। নিয়মটি খুবই প্রয়োজন। কিন্তু অনেক বয়স্ক মানুষ আছেন, যাঁদের পক্ষে একা যাওয়া সম্ভব নয়। আবার অনেকের ছেলে ও মেয়ে দূরে থাকেন। আত্মীয়স্বজনরা কাছে থাকেন না। অনেক বয়স্ক মানুষই নানা ধরনের শারীরিক অসুখে ভুগছেন। পেনশন কর্তৃপক্ষ বিষয়টি একটু ভাবুন।

অভিজিৎ দাস বালি ঘোষপাড়া, হাওড়া

পঞ্চাশ পয়সা

সরকারি নির্দেশিকায় ২৫ পয়সা অচল। কিন্তু ৫০ পয়সা বাতিল হয়নি। বাজারে আর ৫০ পয়সা পাওয়া যায় না। কিন্তু পোস্ট অফিসে একটা ইনল্যান্ড লেটার কিনতে যান, তার দাম দুই টাকা পঞ্চাশ পয়সা। হয় আপনাকে তিন টাকা দিতে হবে, বা পাঁচ টাকা দিয়ে আপনাকে দুটো কিনতে হবে, প্রয়োজন ছাড়া। এক সিলিন্ডার গ্যাসের দাম ৭৫৯ টাকা ৫০ পয়সা। কী করে ৫০ পয়সা দেব?

কল্যণ চক্রবর্তী কলকাতা-৯১

যশোর রোড

‘হাবরা-অশোকনগর বাইপাস রাস্তার কাজ শুরু হতে চলেছে শীঘ্রই’ (৯-১২) সংবাদ পড়লাম। বহু দিন ধরে বহু ব্যক্তি ও সংস্থা যশোর রোড হকারমুক্ত করে তাকে জাতীয় সড়কের মর্যাদা দিতে আবেদন জানিয়েছে। শুধুমাত্র যানজটের জন্য বহু ছাত্রছাত্রী দুর্ঘটনায় প্রাণ হারিয়েছে, তার প্রতিবাদে এলাকার শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলি শামিল হয়েছে। হাবরা শহর ও সংলগ্ন এলাকার প্রায় এক লক্ষ মানুষ প্রতি দিন এই রাস্তায় চলাচল করেন। তা ছাড়া হাজার হাজার পণ্যবাহী ট্রাক, কলকাতা-ঢাকাগামী আন্তর্জাতিক বাস ছাড়াও বহু বাস, অ্যাম্বুল্যান্স, প্রাইভেট গাড়ি যাতায়াত করে। দু’পাশের জবরদখলকারী দোকান এবং রাজনৈতিক মদতে ফুটপাতের উপরে পসরা সাজিয়ে ব্যবসার কারণে এক দিকে যেমন ফুটপাত বলে কিছু নেই, তেমনি সংকীর্ণতর রাস্তাটি নিত্য মরণফাঁদে পরিণত হয়েছে।

বাম আমলে এক বার যশোর রোড সম্প্রসারণে উদ্যোগ দেখা গিয়েছিল। জবরদখলকারী দোকানঘর ভাঙার জন্য বুলডোজার মজুত করা হয়েছিল। এলাকার হাজার হাজার মানুষ রাত জেগে রাস্তায় বেরিয়ে এসেছিলেন— যশোর রোড উন্মুক্ত হবে, দেখার প্রত্যাশায়। কিন্তু কিছুই হল না। শোনা গেল এক নেতা এবং কিছু ব্যবসাদারের যোগসাজশে পরিকল্পনা ভেস্তে গিয়েছে।

সংবাদদাতা লিখেছেন, ‘মূলত দোকানিদের উচ্ছেদ, পুনর্বাসন কাজ ধীর গতিতে চলছে। আদালতের নির্দেশে গাছ কটার কাজও থমকে। সব মিলিয়ে উড়ালপুল সমস্যা কবে মিটবে, তা নিয়ে সংশয়ে সব পক্ষ।’ পড়ে কিছু প্রশ্ন জাগে। অশোকনগরে একটি ও হাবরা এলাকায় (২নং ও ১নং রেলগেটের উপর দিয়ে) দুটি উড়ালপুল তৈরির প্রস্তাব কয়েক বছর আগে গৃহীত হয়। তা নিয়ে সরকারি উদ্যোগে বিভিন্ন ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে দফায় দফায় বিস্তর আলোচনা হয়েছে। জানা গিয়েছে, এ বছর উড়ালপুলের জন্য টেন্ডারও গৃহীত হয়েছে। এলাকার বাস্তুজমির উপর বসবাসকারী ও দোকানিদের জমি অধিগ্রহণের কাজ যেখানে প্রায় শেষ এবং উড়ালপুলের কাজ শুরু হওয়ার মুখে, রহস্যময় ভাবে সেই সময় কিছু ব্যবসাদারের নেতৃত্বে সমস্ত স্তরের ব্যবসাদারদের সংঘবদ্ধ করে প্রতিবাদে শামিল হতে দেখা যাচ্ছে। সংবাদে যে সংশয়ের কথা উল্লেখ করা হয়েছে, তা যথার্থ হলে এলাকাবাসীর কাছে তা অত্যন্ত পরিতাপের বিষয় হবে।

তপন ভদ্র হাবরা, উত্তর ২৪ পরগনা

কুকুরের অভ্যাস

কলকাতার বেশ কিছু অঞ্চলে রোজই দেখি, কিছু লোক সকালের দিকে তাঁদের পোষা কুকুরগুলোকে নিয়ে মলত্যাগ করাতে যান। এঁরা সাধারণত ফুটপাতগুলোতেই কুকুরদের হাঁটান এবং সেখানেই পোষ্যগুলো মলত্যাগ করতে থাকে। আমরা যারা ফুটপাত দিয়ে যাতায়াত করি, খুবই সমস্যায় পড়ি। অনেক সময়েই কুকুরের মল মাড়িয়ে যাতায়াত করতে হয়। কুকুর পোষার যাঁদের এত শখ, তাঁদের এমন ব্যবস্থা করা উচিত, কুকুর যাতে তাঁদের বাড়িতেই মলত্যাগ করে। বা, যদি রাস্তায় হাঁটাতেই হয়, তা হলে বিদেশের কুকুর-মালিকদের মতো, নিজের কুকুরের ময়লা নিজেই রাস্তা থেকে সাফ করা উচিত। পুরসভা কি এর কোনও বিহিত করতে পারে না?

উত্তম দে ই-মেল মারফত

পার্কে তালা

ইদানীং বহু পার্কে দেখি, গেটে তালা দেওয়া আছে। এবং সেই তালা কখনওই খোলা হয় না। বিকেলের দিকে কিছু ডানপিটে ছেলেমেয়ে গেট ডিঙিয়ে বা পাঁচিল ডিঙিয়ে সেই পার্কে ঢুকে খেলা করে। নিরীহ ভদ্রলোক বা খুদেরা কী করবে?

রমলা সেন যোধপুর পার্ক

চিঠিপত্র পাঠানোর ঠিকানা

সম্পাদক সমীপেষু,

৬ প্রফুল্ল সরকার স্ট্রিট, কলকাতা-৭০০০০১।

ই-মেল: letters@abp.in

যোগাযোগের নম্বর থাকলে ভাল হয়

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE