আর হেমন্ত?
‘পূর্ব-পশ্চিম মিলেছিল তাঁর সুরে’ (পত্রিকা, ৬-১) শীর্ষক নিবন্ধ পড়ে একটু দুঃখ থেকে গেল, সুধীন দাশগুপ্তর সুরে হেমন্ত মুখোপাধ্যায়ের গানের প্রসঙ্গ উল্লেখ না থাকায়। যদিও এটা ঠিক যে, সুধীন দাশগুপ্তের ‘গুড বুক’-এ হেমন্ত মুখোপাধ্যায় সে ভাবে ছিলেন না (যে কোনও কারণেই হোক)। তাই এই জুটিকে আমরা যথাযথ ভাবে পাইনি।
অথচ এই জুটির বেশ কিছু উল্লেখযোগ্য গান আছে, যা চিরস্মরণীয়। যেমন, ১৯৬০ সালে বেসিক রেকর্ডে ‘সাগর থেকে ফেরা’, ‘রূপ সাগরে ডুব দিয়ে’, ১৯৬১ সালে ‘পঙ্কতিলক’ ছবিতে ‘দেখেছি শুনেছি যা’ ১৯৬৬ সালে ‘সুশান্ত শা’ ছবিতে ‘সজনী লো দেখে যা’, ১৯৭৪ সালে ‘শজারুর কাঁটা’ ছবিতে ‘সময় কখন যে থমকে দাঁড়াল’, ১৯৭৪ সালে ‘সঙ্গিনী’ ছবিতে ‘একটু বাতাস ছিল’, ১৯৭৮ সালে ‘করুণাময়ী’ ছবিতে ‘কালো মেঘে কালী ছায়া’, ১৯৮৩ সালে ‘বনশ্রী’ ছবিতে ‘আশ্বিনে হোক অঘ্রানে হোক’ প্রভৃতি। এ ছাড়াও সুধীন দাশগুপ্তের সুরে ১৯৭৬ সালে ‘ছোটদের রামায়ণ’ শীর্ষক গীতিনাট্যেও হেমন্ত মুখোপাধ্যায় গেয়েছিলেন।
হেমন্ত মুখোপাধ্যায় প্রসঙ্গে সুধীন দাশগুপ্ত বলেছিলেন, ‘হেমন্ত মুখোপাধ্যায় মানে ম্যাজিক। এই নামের ম্যাজিকে সম্মোহিত হয়ে যায় নরনারী, ছেলে বুড়ো, কচিকাঁচা, সবাই। হেমন্তবাবুর কণ্ঠস্বরে কী জাদু আছে, এটা জানে না এ রকম লোক বোধহয় নেই-ই।’ অথচ ভাবতে অবাক লাগে, এই ম্যাজিককে সুধীন দাশগুপ্ত তাঁর সুরের ভুবনে যথাযথ ভাবে ব্যবহার করেননি। যার ফলে আরও সমৃদ্ধ ‘হেমন্তগীতি’ থেকে আমরা বঞ্চিত হয়েছি। যা হয়তো অপূরণীয় ক্ষতি হয়ে থেকে গেল বাংলা সংগীত-জগতে।
বিশ্বনাথ বিশ্বাস কলকাতা-১০৫
গাছের কথাও
ইদানীং এক অদ্ভুত মানসিকতার শিল্পকর্ম যাতায়াতের পথে চোখে পড়ে। হাওড়া-ব্যান্ডেল শাখার বিভিন্ন স্টেশনের প্ল্যাটফর্মে, আগে থেকে বেড়ে ওঠা গাছগুলোকে বেষ্টন করে যাত্রীদের বসার সাহায্যার্থে বেদি বানিয়ে দেওয়া হচ্ছে। আর যাকে ঘিরে এই বেদি, সেই গাছটার গুঁড়ির অংশকে ছুরি, করাত, বাটালি দিয়ে কেটেকুটে বানর, সাপ, কুমির ইত্যাদির প্রতিকৃতি ফুটিয়ে তোলা হচ্ছে। শিল্পী তাঁর শিল্পকর্মের নিদর্শন নানান সৃষ্টির মধ্য দিয়েই আমাদের কাছে পৌঁছে দেন। কিন্তু তা বলে গাছের দেহকে এই ভাবে কাটাছেঁড়া করে শিল্পীর প্রতিভার বিচ্ছুরণ কখনওই মেনে নেওয়া যায় না।
সঞ্জয় সাউ কালীপুর, হুগলি
কে সুপারফাস্ট
এক্সপ্রেস এবং সুপারফাস্ট ট্রেনের মধ্যে গুণগত বা গঠনগত পার্থক্য জানতে চাইছি রেল কর্তৃপক্ষের কাছে। উদাহরণ দিলে বিষয়টি স্পষ্ট হবে। আদ্রা থেকে মেদিনীপুর পর্যন্ত রূপসী বাংলা, আরণ্যক এবং রাজ্যরানি সুপারফাস্ট ট্রেনগুলির প্রত্যেকটিতে অসংরক্ষিত দ্বিতীয় শ্রেণির ভাড়া ৮০ টাকা। রেলের নির্ধারিত সময় ২ ঘণ্টা ১২ মিনিট। অন্য দিকে মালদহ-দিঘা (দিঘা এক্সপ্রেস) এবং পটনা-পুরী (বৈদ্যনাথধাম এক্সপ্রেস) ট্রেনে ওই পথ যেতে অসংরক্ষিত দ্বিতীয় শ্রেণির ভাড়া ৬৫ টাকা। নির্ধারিত সময় ২ ঘণ্টা ৮ মিনিট। তা হলে ঠিক কী সুবিধা দিতে সুপারফাস্ট ট্রেন চালানো হচ্ছে, তা বোধগম্য হচ্ছে না।
প্রদ্যোত পালুই বিষ্ণুপুর, বাঁকুড়া
ওঠা-নামা
২০১৮-র প্রথম রাতের ঘটনা। ঝাড়খণ্ড থেকে ফিরছি। দেড় ঘণ্টা দেরিতে ট্রেনটা পৌঁছল হাওড়া স্টেশনে। প্রায় রাত ১১টা। স্টেশনের (নতুন ক্যাম্পাসের) বাইরে এসে মুঠোফোনে গাড়িটাকে ডাকলাম। ডিকিতে একটা ব্যাগ তুলে সবাই গাড়িতে চড়ে বসলাম, গাড়িটা সাকুল্যে দাঁড়িয়ে ছিল ২ মিনিটের মতো। সবে চলতে শুরু করেছি, এক পুলিশবাবু এসে বললেন, দাঁড়ান, ফাইন হবে। কেন জিজ্ঞেস করতেই বললেন— গাড়ি থেকে নেমে কথা বলুন। নামলাম, এবং জানতে পারলাম, ওখানে গাড়ি দাঁড় করিয়ে ওঠা বারণ। আমি বললাম, এখানে পর পর কত গাড়ি তো দাঁড় করিয়ে লোকজন নামছে এবং মালও নামাচ্ছে, মায় আমরাও যাওয়ার দিন এখানেই নেমেছিলাম। তিনি বললেন, এখানে নামা যাবে, কিন্তু ওঠা বারণ। বললাম, এ আবার কেমন নিয়ম, আর এখানে যানজট তো সে রকম কিছু হচ্ছে না। তিনি বললেন, এর বেশি বলতে পারব না, আপনারা যাবেন না, দাঁড়ান, স্যর আসবেন, ফাইন দিয়ে চলে যাবেন। আমি সবিনয়ে বললাম, নিয়মটা আমার জানা ছিল না, আর কোথাও লেখাও নেই, তা ছাড়া ষাটোর্ধ্ব মা রয়েছেন, দুটো বাচ্চা আর গিন্নি রয়েছে, প্লিজ ছেড়ে দিন, শীতের রাত ১১টা এখন। তিনি জানালেন, তাঁকে আইন মেনে কাজ করতে হয়। আমি বললাম, ফাইন নিয়ে ছেড়ে দিন তা হলে। তিনি তাঁর স্যরকে ফোন করতে থাকলেন। আধ ঘণ্টা পার হয়ে গেছে, স্যর আসছেন না। অগত্যা সবাই গাড়ি থেকে নেমে পুলিশবাবুকে ছেড়ে দেওয়ার জন্য অনুরোধ করতে থাকেন বারংবার। বাদানুবাদ শুনে আর এক পুলিশবাবু চলে এলেন এবং বললেন, নিয়ম না জানলে আপনি তো আমাদের জিজ্ঞেস করতে পারতেন। আমি বললাম, ঠিক, কিন্তু আমার মনে কোনও দ্বন্দ্ব থাকলে তো জিজ্ঞেস করার প্রশ্ন আসে। তর্কবিতর্ক চলল, স্যরও আসছেন না, বাচ্চাদের কান্নাকাটি শুরু। এমন সময় আর এক পুলিশবাবু এসে, সব শুনে, বললেন, ঠিক আছে, চলে যান এ বারকার মতো, কিন্তু আর যেন না হয়।
এখন আমার গুটিকয়েক প্রশ্ন। যেখানে গাড়ি থেকে ট্রেনের হবু যাত্রীরা মাল নিয়ে নামতে পারেন, সেখানে ট্রেন থেকে নেমে যাত্রীদের গাড়িতে সওয়ার হওয়ার বাধা কেন? হয়তো তাতে বিশেষ কিছু সময়ে যানজট হওয়ার সম্ভাবনা। কিন্তু তা হলে সে রকম যথেষ্ট লিখিত বা মাইকে-ঘোষিত নির্দেশ থাকবে না কেন? আর রওনা দেওয়ার সময় পর্যন্ত অপেক্ষা না করে, যখন গাড়িতে সওয়ার হচ্ছিলাম, পুলিশ তখনই বারণ করলে, আমাদের মতো অমন নিয়ম-অজ্ঞ লোকেরা ঝঞ্ঝাট এড়াতে পারত। সর্বোপরি, হাওড়ার মতো স্টেশনের সামনে যাত্রী ও লাগেজ ওঠা-নামার জন্য মিনিট কয়েক গাড়ি দাঁড়ানোর ব্যবস্থা থাকবে না কেন, যেমন আছে কলকাতা বিমান বন্দরে?
কল্লোল সরকার হৃদয়পুর, উত্তর ২৪ পরগনা
সিলারি গাঁও
সম্প্রতি পাহাড়ে ঘুরতে গিয়ে, লাভা, লোলেগাঁও, রিশপ ঘোরার পর সিলারি গাঁও নামে একটি অসাধারণ সুন্দর গ্রামে গিয়ে পৌঁছই। স্থানীয় লোকেদের মুখে শোনা, এই গ্রাম নাকি এক সময় এশিয়ার পরিচ্ছন্নতম গ্রাম হিসেবে পরিচিত ছিল। এক দিকে জঙ্গল, এক দিকে পাহাড় ঘেরা ছবির মতো সুন্দর এই গ্রামে থাকার সুব্যবস্থা আছে। কিন্তু খুব বেশি ট্যুরিস্ট এ দিকে আসেন না। কারণ, রাস্তা খারাপ। রিশপ থেকে যে রাস্তা পেডংয়ের দিকে গিয়েছে, সেখানেই বিশ মাইল নামে একটি জায়গা থেকে বাঁ দিকে ঘুরে যাচ্ছে সিলারি গাঁওয়ের রাস্তা। প্রায় সাড়ে তিন কিমি এই রাস্তার পুরোটাই খানাখন্দ, বড় বড় পাথরে ভর্তি। ফলে গাড়ি যাওয়া দুষ্কর। রাস্তাটি সারিয়ে দিলে সিলারি গাঁও রাজ্যের অন্যতম একটি পর্যটনকেন্দ্র হয়ে উঠতে পারে।
অভীক রায় কলকাতা-৫৯
ইটভাটা
আজকের ভারতে বিভিন্ন মেট্রোপলিটন শহরগুলি দূষণের প্রভাব থেকে মুক্তির জন্য প্রতিনিয়ত লড়াই করে চলেছে। অথচ কলকাতা শহরের অভ্যন্তরে কিংবা কেএমডিএ এলাকার ভিতর ইটভাটা বিদ্যমান। যেমন ভাঙাখাল, মহেশতলা মিউনিসিপ্যালিটি এবং পুজালি মিউনিসিপ্যালিটি। ভারতের সব মেট্রোপলিটন শহরের অভ্যন্তরে কিংবা সংলগ্ন এলাকায় ইটভাটা নিষিদ্ধ এবং কঠোর ভাবে এই নিয়ম পালন করা হয়।
বিশ্বজিৎ ঘোষ কলকাতা-১৪০
চিঠিপত্র পাঠানোর ঠিকানা
সম্পাদক সমীপেষু,
৬ প্রফুল্ল সরকার স্ট্রিট, কলকাতা-৭০০০০১।
ই-মেল: letters@abp.in
যোগাযোগের নম্বর থাকলে ভাল হয়
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy