Advertisement
০১ জুন ২০২৪
Editorial

লকডাউনে আটকে রয়েছি, আমাদের কথা একটু ভাবুন

এই লকডাউন পরিস্থিতিতে পাঠকদের থেকে তাঁদের অবস্থার কথা, তাঁদের চারপাশের অবস্থার কথা জানতে চাইছি আমরা। সেই সূত্রেই নানান ধরনের সমস্যা পাঠকরা লিখে জানাচ্ছেন। পাঠাচ্ছেন অন্যান্য খবরাখবরও। সমস্যায় পড়া মানুষদের কথা সরকার, প্রশাসন, এবং অবশ্যই আমাদের সব পাঠকের সামনে তুলে ধরতে আমরা ম‌নোনীত লেখাগুলি প্রকাশ করছি।এই লকডাউন পরিস্থিতিতে পাঠকদের থেকে তাঁদের অবস্থার কথা, তাঁদের চারপাশের অবস্থার কথা জানতে চাইছি আমরা। সেই সূত্রেই নানান ধরনের সমস্যা পাঠকরা লিখে জানাচ্ছেন। পাঠাচ্ছেন অন্যান্য খবরাখবরও। সমস্যায় পড়া মানুষদের কথা সরকার, প্রশাসন, এবং অবশ্যই আমাদের সব পাঠকের সামনে তুলে ধরতে আমরা ম‌নোনীত লেখাগুলি প্রকাশ করছি।

ওঁরা কোথাও না কোথাও আটকে পড়েছেন, চাইছেন সাহায্য। ছবি- এপি।

ওঁরা কোথাও না কোথাও আটকে পড়েছেন, চাইছেন সাহায্য। ছবি- এপি।

শেষ আপডেট: ১৫ এপ্রিল ২০২০ ১৪:৪৭
Share: Save:

চিঠি-১: মা-বাবা-বোন ভেলোরে আটকে রয়েছেন, ওঁদের ফেরার ব্যবস্থা করুন

ভেলোরে অনেক দিন ধরে আটকে রয়েছেন আমার মা, বাবা, বোন আর ভাইপো। দয়া করে, ভেলোর থেকে ওঁদের দুর্গাপুরে ফেরানোর ব্যবস্থা করুন। ওঁরা চিকিৎসার জন্য ভেলোরে গিয়ে লকডাউনের জন্য আটকে পড়েছেন। ওঁদের দুর্গাপুরে ফেরার ট্রেনের টিকিট আগেই বাতিল করা হয়েছিল। ওঁদের কাছে আর তেমন টাকাপয়সাও নেই।

সুদীপ রাউত, ইমেল- sudiprout1985@gmail.com, বাবা অমিয়রঞ্জন রাউত, মোবাইল- ৯০০২৭২৫৩০৬, বোনের মোবাইল- ৮৬১৭০৪৯৭৭৩

চিঠি-২: নয়ডার হটস্পটেও সব্জির দোকানের সামনে লম্বা লাইন!

চাকরির জন্য কলকাতা ছেড়ে দিল্লিতে প্রায় ৩ বছর ধরে। কিন্তু এমন পরিস্থিতিতে পড়িনি কখনও। ভাবিওনি কখনও এমন পরিস্থিতিতে পড়তে হবে। নয়ডার ২ নম্বর সেক্টরে রয়েছি। দু’দিন ধরে কোনও দোকানপাটও খোলা নেই। কারণ, এটা ‘হটস্পট জোন’। একেবারেই ঘরবন্দি হয়ে কাটাচ্ছি। সরকার একটা জায়গায় গিয়ে সকালে সব্জি কেনাকাটার ব্যবস্থা করেছে। গিয়ে দেখি সেখানে লম্বা লাইন। তবে এই লম্বা লাইন কতটা নিরাপদ জানি না, যখন করোনা সংক্রমণ এই পর্যায়ে পৌঁছেছে।

আশা করব, কলকাতাতে সকলে ভাল থাকবেন।

সুদীপ্ত বন্দোপাধ্যায়, নয়ডা, সেক্টর ২২, মোবাইল- ৭৯৮০১৩৮১২২

চিঠি-৩: আমরা পশ্চিমবঙ্গ ও ঝাড়খণ্ডের শিক্ষকরা আটকে রয়েছি রাজামুন্দ্রিতে, ফেরান

আমার বাড়ি বোলপুরে। অন্ধ্রপ্রদেশের রাজামুন্দ্রিতে একটি ইন্টারন্যাশনাল স্কুলে শিক্ষকতা করি। গত ২২ মার্চ থেকে স্কুল বন্ধ। আমাদের সঙ্গে রয়েছেন পশ্চিমবঙ্গ ও ঝাড়খণ্ডের মোট ৫ জন শিক্ষক। সব মিলিয়ে আমরা ১১ জন রয়েছি এখানে। স্কুলই আমাদের থাকার জায়গা দিয়েছে।

কিন্তু মার্চের মাইনে এখনও পাইনি। এ দিকে টাকা প্রায় শেষ। খুব টেনশনে আছি। তবে আমরা সকলে সুস্থ আছি। আমাদের ফিরে যাওয়ার ব্যবস্থা করা হোক। কথা দিচ্ছি, ফেরার পর আমরা সকলে ১৪ দিন বাড়িতে থাকব। স্বাস্থ্য দফতরের সব নির্দেশ মেনে চলব। মুখ্যমন্ত্রীকে অনুরোধ, দয়া করে আমাদের ফেরানোর ব্যবস্থা করুন।

কুণাল ঘোষাল, রাজামুন্দ্রি, অন্ধ্রপ্রদেশ, মোবাইল- ৯০৬৪২২৩৩৭২

চিঠি-৪: ভেলোরে দেদার খরচ হচ্ছে হোটেলে, ট্রেন, বিমান চালু হোক

আমরা তিন জন গত ১৮ মার্চ কলকাতা থেকে ভেলোরের উদ্দেশে রওনা হই, সেখানকার খ্রিষ্টান মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে আমার দাদার চিকিৎসার জন্য। গত ২০ মার্চ সেখানে পৌঁছে দাদার বায়োপসি করাই। তার পর পূর্ব নির্ধারিত সূচি অনুযায়ী গত ২৬ মার্চ ডাক্তার দেখানোর জন্য অপেক্ষা করছিলাম। কিন্তু গত ২২ মার্চ জনতা কার্ফু পালিত হয় আর তার পরের দিন রাত ৮টায় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী লকডাউন ঘোষণা করে দেন। ২৪ মার্চ রাত ১২টা থেকে ১৪ এপ্রিল পর্যন্ত।

আমরা এখানে ৭/৮ দিনের জন্য এসেছিলাম, কিন্তু প্রায় এক মাস ধরে হোটেলবন্দি হয়ে পড়ে রয়েছি। প্রতি দিন প্রায় দেড় হাজার টাকা খরচ হচ্ছে। ও দিকে, বাড়িতে মহিলা ও শিশুরা একা রয়েছেন। দু’দিকেই টাকাপয়সা প্রায় শেষের দিকে। শুধু আমরাই নই, বহু বাঙালি পরিবার একই কারণে, একই অবস্থায় এখানে দিন কাটাচ্ছে।

আপনাদের মাধ্যমে রাজ্য এবং কেন্দ্রীয় সরকারের কাছে আমাদের আবেদন, কিছু বিশেষ ট্রেন বা বিমানের ব্যবস্থা করে আমাদের পরিবারের কাছে ফেরানোর ব্যবস্থা করুন।

আব্দুল রাজ্জাক, কৃষ্ণেন্দু সরখেল, নীলাভ সরখেল, মোবাইল- ৯৮৩১৩৪৭৩৭২/৭৯৮০৮৬৩৮৬২

চিঠি-৫: আর পারছি না, হায়দরাবাদ থেকে ফেরান আমাদের

হায়দরাবাদে আছি। আরও অনেকে আছেন। আমরা বাড়ি যেতে চাই, কিন্তু যেতে পারছি না। অনুরোধ করছি বাড়ি পৌঁছে দেওয়ার ব্যবস্থা করুন। আর পারছি না।

সুমন্ত বাগদি, সাঁইথিয়া, বীরভূম, মোবাইল-৬৩০৪৩৩৬১৯৩, ইমেল- sumantabagdi35@gmail.com

চিঠি-৬: বিনাতে খুব কষ্টে রয়েছি, ফিরতে চাই

মধ্যপ্রদেশের বিনাতে আটকে পড়েছি আমরা ৯ জন শ্রমিক। দয়া করে, আমাদের ঝাড়গ্রাম ফেরানোর ব্যবস্থা করুন। পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রীর কাছে আমাদের ৯ জন শ্রমিকের আবেদন, আমরা মধ্যপ্রদেশের বিনাতে জে পি পাওয়ার প্ল্যান্টে আটকে পড়েছি এই লকডাউনের মধ্যে। আমাদের কোনও কাজ নেই। খুব কষ্টে দিন কাটাচ্ছি। আমাদের তাড়াতাড়ি বাড়ি ফেরার ব্যবস্থা করে দিন, না হলে হয়ত আমরা এখানেই মারা যাব!

দীনেশ মাহাতো, ইমেল- dineshmahata848@gmail.com

চিঠি-৭: বাড়ি ফিরতে না পারলে অনাহারেই মরে যাব!

আমার বাড়ি উত্তর দিনাজপুর জেলার ডালখোলা থানায়। আমার সঙ্গে মোট ১০ জন আটকে রয়েছেন মহারাষ্ট্রের দম্বিভি, কল্যান, ঠানেতে। গত ১৯ মার্চ থেকে। টাকাপয়সা যা ছিল, শেষের দিকে। ভেবেছিলাম ১৪ এপ্রিলের পরে বাড়ি ফিরতে পারব। কিন্তু লকডাউনের মেয়াদ ৩০ এপ্রিল পর্যন্ত বেড়ে যাওয়ায় এ বার হয়ত আমরা অনাহারেই মারা যাব।

পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রীর কাছে অনুরোধ, দয়া করে আমাদের যে কোনেও ভাবে বাড়ি ফেরানোর ব্যবস্থা করুন।

গোকুল বিশ্বাস, মোবাইল- ৭৭১৫০৩৫২৫২

(অভূতপূর্ব পরিস্থিতি। স্বভাবতই আপনি নানান ঘটনার সাক্ষী। শেয়ার করুন আমাদের। ঘটনার বিবরণ, ছবি, ভিডিয়ো আমাদের ইমেলে পাঠিয়ে দিন, feedback@abpdigital.in ঠিকানায়। কোন এলাকা, কোন দিন, কোন সময়ের ঘটনা তা জানাতে ভুলবেন না। আপনার নাম এবং ফোন নম্বর অবশ্যই দেবেন। আপনার পাঠানো খবরটি বিবেচিত হলে তা প্রকাশ করা হবে আমাদের ওয়েবসাইটে।)

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE