Advertisement
১৭ মে ২০২৪

কবে থেকে বিদ্যাসাগর

মাত্র ১৫ বছর বয়সে, ঈশ্বরচন্দ্র সাহিত্যশ্রেণির কৃতী ছাত্র হিসেবে সংস্কৃত কলেজ থেকে সর্বজনমান্য ‘বিদ্যাসাগর’ উপাধিটি পেয়েছিলেন। সেই থেকে তাঁর নাম বিদ্যাসাগরই হয়ে গিয়েছে।

ঈশ্বর চন্দ্র বিদ্যাসাগর। ছবি: সংগৃহীত

ঈশ্বর চন্দ্র বিদ্যাসাগর। ছবি: সংগৃহীত

শেষ আপডেট: ০৩ অক্টোবর ২০১৯ ০০:০৫
Share: Save:

বিদ্যাসাগর নিয়ে শঙ্খ ঘোষের সাক্ষাৎকারটির (‘বড় কাজ একাই করতে হয়’, ২৬-৯) অনুষঙ্গে ‘‘জীবনের দশটি বছর’’-এর মধ্যে ১৮৩৫ সালটির উল্লেখ থাকলে খুব ভাল হত। ওই বছরেই, মাত্র ১৫ বছর বয়সে, ঈশ্বরচন্দ্র সাহিত্যশ্রেণির কৃতী ছাত্র হিসেবে সংস্কৃত কলেজ থেকে সর্বজনমান্য ‘বিদ্যাসাগর’ উপাধিটি পেয়েছিলেন। সেই থেকে তাঁর নাম বিদ্যাসাগরই হয়ে গিয়েছে। অথচ উপাধিটি কবে কী জন্য পেলেন তার কোনও সপ্রমাণ স্পষ্ট উত্তর তাঁর কোনও প্রামাণ্য জীবনীগ্রন্থে নেই। বঙ্গীয় সাহিত্য পরিষৎ প্রকাশিত পরিষৎ পত্রিকায় (৯৫ বর্ষ, প্রথম-দ্বিতীয় সংখ্যা ১৩৯৫) একটি লেখায় এর সমাধান করা ছিল। প্রবন্ধটি তার আগে একটি বিশ্ববিদ্যালয়ে গবেষণাপত্র হিসেবে উপস্থাপিত হয়েছিল। অতঃপর অন্তত দু’টি গ্রন্থে নিবন্ধটি পুনর্মুদ্রিত হয়েছে (প্রসঙ্গ: বিদ্যাসাগর, রেনেসাঁসের আলোয় বঙ্গ দর্শন)।

শক্তিসাধন মুখোপাধ্যায়

কলকাতা-৬১

বিপ্লবী ইন্দুমতী

‘স্বাধীনতা সংগ্রামে মহিলাদের ভূমিকা’ (ক্রোড়পত্র, ১৫-৮) শীর্ষক নিবন্ধের প্রেক্ষিতে বলি, এ রকমই আর এক জন বিপ্লবী ইন্দুমতী গুহঠাকুরতা (বিবাহ পূর্ববর্তী নাম লাবণ্যপ্রভা ঘোষ দস্তিদার), সম্পর্কে যিনি আমার মায়ের ঠাকুমা।

১৯০৫ সালে বরিশালের বগুড়াপাড়ায় তাঁর জন্ম। বরিশালের বানরিপাড়া গ্রামের এক সাধারণ কুলবধূ থেকে হয়ে উঠেছিলেন এক স্বাধীনতা সংগ্রামী। বরিশালের নেতা শরৎ ঘোষ তাঁর হৃদয়ে দেশসেবায় আগ্রহ জাগিয়ে তোলেন। সুরেশচন্দ্র গুপ্ত ও মুকুন্দ দাসও তাঁকে অনুপ্রাণিত করেন। ১৯৩০-এ স্বদেশি আন্দোলনে বানরিপাড়ায় নারীবাহিনী নিয়ে পিকেটিং করায় তাঁকে কয়েক মাসের জন্য স্বগৃহে অন্তরিন রাখা হয়েছিল। ১৯৩০ সালে তিনি প্রকাশ্য ভাবে আইন অমান্য আন্দোলনে যোগ দেন, ১৯৩২ সালে কারাদণ্ড হয় ও পরে অন্তরিন হন। ১৯৩১ সালে আইন অমান্য আন্দোলনের একটি পর্যায়ে ইন্দুমতী ঘোষণা করলেন— বানরিপাড়া বাজারে বিলিতি বস্ত্রের দোকানের সামনে আমরণ অনশন করবেন। তাঁর সঙ্গী হয়েছিলেন বর্ষীয়সী সরযূবালা সেন। সেই সময়ের পরিপ্রেক্ষিতে এটি ছিল এক অকল্পনীয় ঘটনা। তাঁরা একটানা সাত দিন বানরিপাড়া বাজারে অনশন সত্যাগ্রহ করেছিলেন, সপ্তম দিনে তাঁদের এই অবস্থান জয়যুক্ত হল। তখন মনে হচ্ছিল যেন ওই অঞ্চলে ব্রিটিশ রাজত্বের অবসান ঘটেছে।

১৯৩০ সালে চট্টগ্রাম অভ্যুত্থানের পর, বিদ্রোহীদের কেউ কেউ নৌকায় এসে পৌঁছলেন বানরিপাড়ায়। কেশবচন্দ্র বন্দ্যোপাধ্যায় তাঁদের আশ্রয় দিলেন, ব্যবস্থা করলেন নিরাপদ স্থানে পৌঁছে দেওয়ার। তাঁর সহযোগী ছিলেন ইন্দুমতী।

স্বয়ং নেতাজি তাঁকে শ্রদ্ধা করতেন। আভা সিংহের ‘বিস্মৃত বীরাঙ্গনা ইন্দুমতী’ বইতে এই প্রসঙ্গে কয়েকটি ঘটনার উল্লেখ পাওয়া যায়। তারকেশ্বর স্মৃতি-সৌধ স্থাপন উপলক্ষে ইন্দুমতীর সঙ্গে সুভাষচন্দ্রের প্রথম পরিচয়। ১৯৩৯ সালে সুভাষচন্দ্রের নেতৃত্বে ঢাকার প্রখ্যাত স্বাধীনতা সংগ্রামী আশালতা সেন এবং ইন্দুমতী স্বাধীনতা আন্দোলন এবং মহিলা সংগঠনের কাজে উত্তরবঙ্গের বহু স্থানে সফর করেন। ১৯৩৯ সালে সুভাষচন্দ্র নেমে পড়লেন ফরোয়ার্ড ব্লক সংগঠিত করার কাজে, যার কলকাতা সম্মেলনে ডেলিগেট ছিলেন ইন্দুমতী।

নারীজাগরণেও তাঁর গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা ছিল। দুঃস্থ ও অসহায় মহিলাদের জন্য ১৯৪১ সালে মনোরঞ্জন শিল্প-সদন প্রতিষ্ঠা তাঁর এক উল্লেখযোগ্য কাজ। এটি ছিল বিপন্ন মহিলাদের সমাজে নানা ভাবে স্বাবলম্বী করে তোলার জন্য একটি মহিলা আবাসিক কেন্দ্র।

সে-কালের নিয়মের বেড়াজালে যিনি নিজে কোনও দিন স্কুলে যেতে পারেননি, সেই মানুষটিই হুগলির বাঁশবেড়িয়ার প্যালেস বোর্ডিংয়ে স্থানীয় অধিবাসীদের সাহায্যে বাঁশবেড়িয়া অবৈতনিক প্রাথমিক জাতীয় বিদ্যালয় স্থাপন করেন। ১৯৪৩ সালে তিনি ও যোগমায়া দত্ত অন্তরিন অবস্থায় ম্যাজিস্ট্রেটের অনুমতি নিয়ে বানরিপাড়ায় স্টেট রিলিফের কাজ করেন।

ভারত সরকার কর্তৃক তাম্রপত্র দ্বারা সম্মানিত এই বীরাঙ্গনার উল্লেখ এখন কোথাও পাওয়া যায় না। ১৯৯১ সালের ১৮ ফেব্রুয়ারি নাটাগড়ে তিনি প্রয়াত হন।

সুকন্যা দাস

নাটাগড়, উত্তর ২৪ পরগনা

শিশুচুরি

জলপাইগুড়ি, শিলিগুড়ি এবং উত্তরবঙ্গের বেশ কয়েকটি জেলায় শুরু হয়েছে নতুন পদ্ধতিতে শিশুচুরি।

১) ‘আইভিএফ পদ্ধতিতে বাচ্চা হবে’— এই কথা নিঃসন্তান দম্পতিকে বলতে বলছে সবাইকে।

২) এর পর নির্দিষ্ট সময়ে নির্দিষ্ট নার্সিং হোম থেকে ‘প্যাড’ পরতে দেওয়া হচ্ছে। যত দিন বাচ্চা সাধারণত গর্ভে থাকে (৪০ সপ্তাহ), তত দিন বাচ্চা বাড়লে যেমন প্যাড লাগে তেমন প্যাড দেওয়া হচ্ছে। যাতে সবাই ভাবে ‘বাচ্চা বড় হচ্ছে’।

৩) তৈরি হচ্ছে নকল চেক-আপ রিপোর্ট।

৪) সোশ্যাল মিডিয়ায় সুখবরটা পোস্ট করতে বলা হচ্ছে।

৫) চাকুরিরতা মহিলারা ছুটিও নিচ্ছেন গর্ভধারণের জন্য।

৬) প্রমাণ হিসেবে নাভির নীচে একটা কাটা দাগও করে দেওয়া হচ্ছে।

৭) কখনও ‘যমজ সন্তান’ও সাপ্লাই করা হচ্ছে, চুরি করে।

মোটা টাকার বিনিময়ে কিছু ডাক্তার, নার্স, ওষুধের দোকান, প্যাথলজি ল্যাব এবং অবশ্যই নার্সিং হোম এই কুকর্ম চালাচ্ছে।

অমিত সরকার

বাবুপাড়া, জলপাইগুড়ি

ধর্ম ও সংস্কৃতি

‘‘ধর্মনিরপেক্ষতা ‘বনাম’ সংস্কৃতির প্রশ্ন’’ (২৩-৯) পড়ে অবাক হলাম। অস্বাভাবিক এই প্রশ্নটা এসেছে এ বছরের আইএএস বাছাইয়ের মূল পরীক্ষায়। যাঁরা ভবিষ্যতের আমলা, ভারতের শাসনব্যবস্থা পরিচালনা করবেন, তাঁদের এই প্রশ্ন করা দেশের ভবিষ্যতের পক্ষে অশুভ ইঙ্গিত। ধর্মনিরপেক্ষতা নিয়ে প্রশ্ন ওঠায় ভারতের সংবিধানই বিপদের সম্মুখীন। কোন গভীর ষড়যন্ত্র চলছে ভারতকে একটি নির্দিষ্ট ধর্মীয় রাষ্ট্র হিসেবে ঘোষণা করার এবং সারা বিশ্বের কাছে প্রতিপন্ন করার? জনগণের ‘পাল্‌স’ বোঝার জন্য পর পর ভাষা, ধর্ম, সংস্কৃতি নিয়ে প্রশ্ন উঠছে। ধর্মের সঙ্গে সংস্কৃতির কোনও বিরোধ নেই। প্রতিটি ধর্মেরই নিজস্ব কিছু সংস্কৃতি রয়েছে, যা অন্য ধর্মের সংস্কৃতির থেকে আলাদা। ধর্ম এক হলেও স্থানভেদে সংস্কৃতির বদল পরিলক্ষিত হয়। একই ধর্মের বিভিন্ন শাখার সংস্কৃতিও আলাদা। তা ছাড়া আমাদের দেশে রয়েছে নানা রকম লোকসংস্কৃতি। ভারতে হিন্দুদের সংখ্যা বেশি, তা বলে ভারতের সংস্কৃতি কখনওই হিন্দু সংস্কৃতি হিসেবে গণ্য হয়নি। ঠিক যে ভাবে বিভিন্ন প্রাদেশিক ভাষার জন্য হিন্দিকে রাষ্ট্রভাষা হিসেবে গণ্য করা হয়নি, শুধুমাত্র অফিশিয়াল ভাষার মর্যাদা দেওয়া হয়েছে।

গৌতম পতি

তমলুক, পূর্ব মেদিনীপুর

ভাষা বিতর্ক

গত ৪ সেপ্টেম্বর দুর্গাপুরে মাইকেল মধুসূদন কলেজের নবনির্মিত ভবনের দারোদ্ঘাটন অনুষ্ঠানে ভাষা-বিতর্ক দেখা দেয়। অনুষ্ঠানটির হিন্দি ভাষায় সঞ্চালনা চলছিল। ওই দায়িত্বে ছিলেন কলেজের হিন্দি বিভাগের প্রধান। অনুষ্ঠানে উপস্থিত মেয়র তথা কলেজের গভর্নিং বডির সভাপতি প্রতিবাদ জানিয়ে বলেন, এটা বাংলা। ধানবাদ, ভাগলপুর, পটনা নয়। বাংলায় সঞ্চালনার দাবি জানালেও সঞ্চালিকা হিন্দি ভাষাতেই ওই কাজ করে চলেন। প্রতিবাদে মেয়র মঞ্চ ছেড়ে চলে যান। ধন্যবাদ তাঁকে। প্রশ্ন জাগে, উপস্থিত অন্য বিশিষ্ট মানুষেরা বা ছাত্রছাত্রীরা কেন তীব্র প্রতিবাদ জানালেন না?

তাপস কুমার দাস

আসানসোল

চিঠিপত্র পাঠানোর ঠিকানা
সম্পাদক সমীপেষু,
৬ প্রফুল্ল সরকার স্ট্রিট,
কলকাতা-৭০০০০১।
ইমেল: letters@abp.in
যোগাযোগের নম্বর থাকলে ভাল হয়। চিঠির শেষে পুরো ডাক-ঠিকানা উল্লেখ করুন, ইমেল-এ পাঠানো হলেও।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE