Advertisement
০৪ মে ২০২৪
Letters to the editor

সম্পাদক সমীপেষু: দুর্ঘটনার কারণ

ক্ষতিগ্রস্তদের কিছু আর্থিক সাহায্য এবং প্রশাসনের কিছু তাৎক্ষণিক পদক্ষেপ ছাড়া কাজের কাজ কিছু হয় না।

শেষ আপডেট: ০১ ফেব্রুয়ারি ২০২১ ০৪:২৯
Share: Save:

‘সেফ ড্রাইভ সেভ লাইফ’ স্লোগানটির উপর ভিত্তি করে বেশ কয়েক বছর ধরে পথ দুর্ঘটনা কমানোর জন্য ক্যাম্পেন শুরু হয়েছে। নানা পরিসংখ্যান-সহ প্রতিনিয়ত এর উপকারিতার কথা প্রচারিত হচ্ছে। কিন্তু বাস্তব অন্য কথা বলে। কোনও বড় দুর্ঘটনা ঘটলে সমাজমাধ্যমে নানা বিবৃতি, সংবাদমাধ্যমকে সাক্ষী রেখে ক্ষতিগ্রস্তদের কিছু আর্থিক সাহায্য এবং প্রশাসনের কিছু তাৎক্ষণিক পদক্ষেপ ছাড়া কাজের কাজ কিছু হয় না। কোনও দুর্ঘটনা ঘটলে প্রশাসন সবার আগে আঙুল তোলে গাড়িচালকের দিকে। দুর্ঘটনার প্রকৃত কারণ খোঁজার চেষ্টা হয় না। উত্তরবঙ্গে গাড়ির উপর মালবাহী ট্রাক উল্টে ১৩/১৪ জন প্রাণ হারালেন। বলা হল, ক্ষমতার অতিরিক্ত মাল বহনের জন্য এই দুর্ঘটনা। কিন্তু বছরের পর বছর ওভারলোডিং চালু থাকলেও কেন প্রশাসন দর্শকমাত্র?

খাস কলকাতার কী অবস্থা? রাস্তার উপর গাড়ির গতি নিয়ন্ত্রণে যেখানে-সেখানে ছড়ানো গার্ড রেল, বিপদজ্ঞাপক চিহ্ন ছাড়া স্পিড ব্রেকার, খানাখন্দ ভরা রাস্তা তো আছেই, তার সঙ্গে উপযুক্ত আলো ছাড়াই পথে বিভিন্ন মালবাহী গাড়ি চলাচল করে। দিনের বেলায় রাস্তার উপরেই বসে বাজার। যেখানে সামান্য ফুটপাত আছে, তার উপর দোকান তৈরি হয়, অথবা ছড়ানো থাকে বাড়ি তৈরির মালমশলা। পথচারী বাধ্য হন রাস্তার উপর দিয়ে হাঁটতে।

গাড়ির জন্য যে সামান্য রাস্তা, সেখানে চলে অনিয়ন্ত্রিত অটো, বাসের রেষারেষি, ইচ্ছামতো লোক ওঠানো-নামানো। সব কিছুই ঘটে পুলিশের সামনে। নাকা চেকিং নিয়ে কত ঘোষণা, অথচ উল্টোডাঙা, পার্ক সার্কাস, খিদিরপুর, তালতলা, গার্ডেনরিচে হেলমেট ব্যবহার না করাই আইন। পুলিশের সামনেই নেতারা হেলমেট ছাড়া বিনা বাধায় দলবল নিয়ে বাইক নিয়ে শোভাযাত্রা করেন। ‘দুয়ারে সরকার’, ‘পথশ্রী’ ইত্যাদি নিত্যনতুন চমক লাগানো প্রচার নয়, দরকার রাজনৈতিক ও প্রশাসনিক স্তরে সদিচ্ছা ও দায়িত্ববোধ। সেটুকু থাকলে দুর্ঘটনা কমতে বাধ্য।

শংকর গঙ্গোপাধ্যায় , কলকাতা-৩৪

পশু হাসপাতাল

শ্রীরামপুরের পশু হাসপাতালের ভাঙাচোরা গেট দিয়ে ভিতরে ঢুকলে দেখা যাবে, কম্পাউন্ডের সামনের অংশ ঝোপজঙ্গলে পূর্ণ। চূড়ান্ত অপরিষ্কার ও অস্বাস্থ্যকর পরিবেশ। ডাক্তার আছেন, শোনা যায়। কিন্তু তাঁকে দেখা যায় না। কাউন্টারে যিনি বসেন, তিনি অত্যন্ত সহানুভূতিশীল। স্বাস্থ্যকর্মীদের সহযোগিতায় অসুস্থ পশুদের সাধ্যমতো চিকিৎসা প্রদান করেন। বস্তুত, তাঁর জন্যই পশুরা চিকিৎসা, টিকা ইত্যাদি পায়। কর্তৃপক্ষকে অনুরোধ, হাসপাতালটির পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা বজায় রাখা হোক এবং স্থায়ী চিকিৎসক পোস্টিংয়ের বন্দোবস্ত করা হোক। এর সঙ্গে অস্ত্রোপচার, নির্বীজকরণের সুবিধা-সহ অন্তর্বিভাগ চিকিৎসা চালু হলে মহকুমায় যাঁরা পশু পালন করেন, তাঁরা উপকৃত হবেন।

পার্থ নন্দী, শেওড়াফুলি, হুগলি

দর বদলাক

‘স্বাস্থ্যসাথীতে দর বদলাতে রাজ্যের নতুন কমিটি’ (২২-১) শীর্ষক লেখায় বলা হয়েছে, রাজ্যের মন্ত্রিসভার সিদ্ধান্ত অনুসারে এই প্রকল্পের সুবিধা ও পরিষেবা যাতে জনসাধারণ আরও ভাল ভাবে পান, সেই লক্ষ্যে বেসরকারি হাসপাতাল ও নার্সিংহোম কর্তৃপক্ষের দাবি মেনে শীঘ্রই উচ্চপর্যায়ের কমিটি চিকিৎসকদের সঙ্গে কথা বলে নতুন দর স্থির করে দেবে। সাধু উদ্যোগ। আমরা যাঁরা সরকারি কর্মচারী, ও পশ্চিমবঙ্গ সরকারের স্বাস্থ্য পরিকল্পনার অন্তর্ভুক্ত রয়েছি, তাঁদের সুষ্ঠু পরিষেবা দেওয়ার জন্যও এই দর বাড়ানোর খুব প্রয়োজন। এই দর দীর্ঘ দিন সংশোধন না হওয়ার কারণে পরিকল্পনার অন্তর্ভুক্ত বেসরকারি হাসপাতালগুলি আমাদের পরিষেবা দিতে অস্বীকার করে।

কিছু দিন আগে আমার স্ত্রী সেপ্টিসেমিয়া রোগে আক্রান্ত হওয়ায় বাইপাসের ধারে একটি হাসপাতালে নিয়ে যাই চিকিৎসার জন্য। ভর্তির কাগজপত্র তৈরির সময় যখন তাঁরা জানতে পারেন আমার কাছে পশ্চিমবঙ্গ সরকারের স্বাস্থ্য পরিকল্পনার অন্তর্ভুক্তির কার্ড আছে, সঙ্গে সঙ্গে অক্সিজেন সাপোর্ট বেড নেই বলে আমার কাছ থেকে কাগজপত্র নিয়ে নেওয়া হয়।
অথচ, এই পরিষেবা দেওয়ার জন্য ২০১৯ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত আমাদের বেতন থেকে যে পরিমাণ টাকা প্রতি মাসে কাটা হত, ২০২০ সালের জানুয়ারি থেকে তা প্রায় দ্বিগুণ হয়ে।

পার্থ সারথি মণ্ডল, কৃষ্ণনগর, নদিয়া

ক্ষীরাই

কিছু দিন আগে বেড়াতে গিয়েছিলাম পাঁশকুড়ার ক্ষীরাই-তে। সমাজমাধ্যমে দেখেছিলাম, ক্ষীরাইতে পর্যটকরা গিয়ে ফুলের উপর অত্যাচার করছেন। সে দিন তা নিজের চোখে দেখলাম। কেউ ফুল ছিঁড়ছেন, তো কেউ প্লাস্টিকের প্যাকেট ফুলের খেতের উপর ফেলে দিচ্ছেন। এতে ফুলের ভীষণ ক্ষতি হচ্ছে, এবং কৃষকরা উদ্বিগ্ন। পর্যটকদের কাছে অনুরোধ, এই ফুলগুলোর যাতে কোনও ক্ষতি না হয়, তার দিকে একটু নজর রাখবেন।

সোমা চট্টোপাধ্যায়, শ্রীরামপুর, হুগলি

এত ঘোষণা

হাওড়া-বর্ধমান মেন লাইনের লোকাল ট্রেনের দৈনিক যাত্রা এখন শব্দাতঙ্কে পরিণত হয়েছে। প্রতি ৩০ সেকেন্ড অন্তর স্টেশন সম্পর্কিত উচ্চকিত ঘোষণায় কানের দফারফা। দেড় ঘণ্টার ট্রেনযাত্রায় ৩০ সেকেন্ড অন্তর এই ঘোষণা শুনতে হয় প্রায় ১০০ বার। শুধু তা-ই নয়, এর সঙ্গে যুক্ত হয়েছে করোনা প্রতিরোধ সম্পর্কিত ঘোষণা। যেমন— পূর্ব রেলের পক্ষ থেকে সমস্ত যাত্রীকে অনুরোধ করা হচ্ছে করোনাভাইরাস থেকে সুরক্ষিত থাকতে, সামাজিক দূরত্ব (শারীরিক নয়) বজায় রাখুন; মাস্ক বা ফেসকভার ব্যবহার করুন; হ্যান্ড স্যানিটাইজ়ার সঙ্গে রাখুন; কোভিড আচরণবিধি মেনে চলুন; নিতান্ত প্রয়োজন হলে তবেই ট্রেনে চড়ুন। এই ঘোষণাও পর্যায়ক্রমে বাংলা, হিন্দি ও ইংরেজিতে প্রায় ৮০ বার। আপাত দৃষ্টিতে মনে হতে পারে খুব ভাল পদক্ষেপ। কিন্তু কানের অবস্থা খুবই খারাপ হয়।

শিপ্রা ভৌমিক, চন্দননগর, হুগলি

মশা আতঙ্ক

করোনার আতঙ্কের সঙ্গেই আর একটি আতঙ্ক মাথা চাড়া দিচ্ছে— ডেঙ্গি ও ম্যালেরিয়া রোগ। প্রশাসনের কাজ মূলত অনিয়মিত ভাবে নর্দমা ও আবর্জনা সাফাই। আর মশা-বাহিত রোগের খবর পেলে মশা মারার ওষুধ স্প্রে করা। অথচ, মশার আঁতুড়ঘর যে বাড়ির সেপটিক ট্যাঙ্ক, সে দিকে কারও নজর নেই। অনেক বাড়িতেই দেখা যাবে, সেপটিক ট্যাঙ্কের উপচে পড়া জল নির্গমন পথ দিয়ে সরাসরি নর্দমায় পড়ছে। এই জল কিন্তু সেপটিক ট্যাঙ্কের নির্গমন পথে লাগানো উল্টো ‘ইউ’ আকৃতির নলের মাধ্যমে নর্দমায় পড়া উচিত, যাতে মশা-মাছি সহজেই ট্যাঙ্কের মধ্যে প্রবেশ করতে না পারে। প্রশাসন যদি নাগরিকদের এই বিষয়ে সচেতন করতে পারে, তা হলে মশার উপদ্রব থেকে নিশ্চিন্ত হওয়া যায়।

প্রসন্নকুমার কোলে, শ্রীরামপুর, হুগলি

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE