Advertisement
১৭ মে ২০২৪

সম্পাদক সমীপেষু: বাসের পাঁচালি

যাত্রী-বোঝাই বাস অফিস টাইমে পেট্রল পাম্পে ঢুকে তেল ভরছে, এ তো অতি পরিচিত দৃশ্য।

শেষ আপডেট: ১২ মার্চ ২০১৯ ০০:০০
Share: Save:

2 নিত্য যে বাসগুলিতে আমরা চড়ি, তার কয়েকটি সমস্যা:

১) অধিকাংশ সরকারি/বেসরকারি বাসের নিয়মিত রুটিন চেক-আপ হয় না। হলেও তা এতটাই দায়সারা যে যাত্রিস্বাচ্ছন্দ্য ও নিরাপত্তার দিকটা প্রায় অবহেলিত থাকে। কোনওটার সিট ভাঙা বা জানালা নেই অথবা কোনওটার কব্জা ভাঙা দরজার পাল্লা দড়ি দিয়ে বাঁধা।

২) প্রায় আটানব্বই শতাংশ বাসে ভাড়ার তালিকা নেই।

৩) যাত্রী-বোঝাই বাস অফিস টাইমে পেট্রল পাম্পে ঢুকে তেল ভরছে, এ তো অতি পরিচিত দৃশ্য।

৪) মোটামুটি একই রুটের বাস যদি একই সময়ে পাশাপাশি এসে যায়, তারা কেউই অপেক্ষাকৃত ছোট স্টপেজে দাঁড়ায় না বড় স্টপেজে দাঁড়ালেও যে বাসটি সেখান থেকে কম যাত্রী পায় সে নড়তে চায় না।

৫) বাসের ভেতরে যত ক্ষণ ভিড়ে যাত্রীদের নিঃশ্বাস বন্ধ হওয়ার উপক্রম না হবে তত ক্ষণ চলতি কথায় যাকে বলে ‘সিগন্যাল খাওয়া’ এবং পুলিশের ‘কেস খাওয়া’ অধিকাংশ বাসের অভ্যাসে পরিণত হয়েছে।

৬) নতুন চেহারার বাসগুলির দু’টি করে দরজা থাকলেও, এক জন মাত্র কন্ডাক্টর থাকেন এবং সামনের দিকে ড্রাইভারের বাঁ দিকের দরজাটি দড়ি দিয়ে বেঁধে বন্ধ করা থাকে। এসি বাসগুলিরও একই অবস্থা।

৭) দিল্লিতে নির্ভয়া কাণ্ডের পরেও, দামি এসি বাসের বাইরে এমন ভাবে বিজ্ঞাপন লাগানো, বাইরে থেকে ভেতরের দৃশ্যমানতা নেই।

৮) জেলা শহর এবং গ্রামেগঞ্জে যে বাসগুলি চলছে, তা মালবাহী যান বললে ঠিক বলা হয়। রাজ্যে একটিও এমন বেসরকারি সাধারণ বাস নেই যেখানে বসার সিটগুলি নির্ধারিত মাপ মতো তৈরি হয়েছে।

৯) কলকাতার বাইরে রাজ্যের সর্বত্র বাসগুলিতে ইলেকট্রিক হর্ন লাগানো, যা প্রচণ্ড শব্দ করে।

১০) অনেক অসঙ্গতি-সহ, চাকার টায়ার ফাটা, অযোগ্য পুরনো ইঞ্জিন নিয়ে অসংখ্য বাস নিয়মিত পরিবহণ দফতরের ফিট সার্টিফিকেট পেয়ে যাচ্ছে। এ জন্য অবশ্য বাসগুলিকে যখন বড় সাহেবদের সামনে হাজির করতে হয় তখন একটু ‘কনে সাজাতে’ হয়।

১১) বাসের ভাড়া যাতে মালিক না পান অথচ যাত্রীরা টিকিট পান, সে জন্য জাল টিকিটের ব্যবহার বেড়েছে। এই টিকিটগুলিতে টাকার পরিমাণ স্পষ্ট ছাপানো কিন্তু বাসের নম্বর ইত্যাদি নেই বা চোখে ধুলো দেওয়ার জন্য আবছা কিছু একটা থাকে যা পড়ার অযোগ্য।

আনন্দ বক্সী

কলকাতা-৮৪

ভাষা শহিদ দিবস

‘১৯, ২০ এবং ২১’ শীর্ষক (২৪-২) চিঠি পড়লাম। আন্তর্জাতিক ভাষা দিবস ২১ ফেব্রুয়ারি উপলক্ষ‍ে লেখক দেশ-বিদেশের অনেক মূল্যবান তথ্য পেশ করেছেন। কিন্তু দুঃখের বিষয়, বাংলা ভাষার জন্য অসমের বরাক উপত্যকার বাঙালিদের আত্মত্যাগের কোনও উল্লেখ চিঠিতে নেই। অসমের দক্ষিণ সীমান্তে কাছার, করিমগঞ্জ এবং হাইলাকান্দি এই তিন জেলা নিয়ে বরাক উপত্যকা। এখানে ‍বাংলাভাষীদের সংখাধিক্য। ১৯৬০ সালের শেষ দিকে অসমের তৎকালীন মুখ্যমন্ত্রী বিমলা প্রসাদ চালিহার তৎপরতায় বিধানসভায় একটি বিল পাশ হয়। অসমিয়া এবং বাংলা উভয়েই সরকারি ভাষা হিসাবে স্বীকৃত ছিল, কিন্তু এই বিলে বাংলা সরকারি ভাষার মর্যাদা হারাল। বরাক উপত্যকার বাঙালিরা নিজেদের ভাষার এই অপমান মুখ বুজে মেনে নেননি। প্রতিবাদে তাঁরা শান্তিপূর্ণ আন্দোলনে শামিল হন। ১৯৬১ সালের ১৯ মে সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত হরতাল পালিত হয়। ওই দিনই অসম রাইফেলসের গুলিচালনায় এক জন মহিলা সমেত মোট ১১ জনের মৃত্যু হয়। সেই বাংলা বিরোধী বিল প্রত্যাহার করতে সরকার বাধ্য হয়। বরাক উপত্যকায় ১৯ মে ভাষা শহিদ দিবস হিসাবে পালিত হয়। শিলচর রেল স্টেশনে একটি ভাষা শহিদ স্মৃতিস্তম্ভ আছে। পশ্চিমবঙ্গে ২১ ফেব্রুয়ারি ভাষা দিবস হিসাবে নানা ভাবে উদ্‌যাপিত হয়। কিন্তু ১৯ মে সম্পর্কে এখানকার বাঙালিদের অজ্ঞতা ও নীরবতা গভীর বেদনাদায়ক।

পূর্ণেন্দু সমাজদার

কলকাতা-১০৮

অসম্মান

সম্প্রতি মাধ্যমিক পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হল। ওয়েস্ট বেঙ্গল বোর্ড অব সেকেন্ডারি এডুকেশন, প্রধান শিক্ষকদের না জানিয়ে কোনও কোনও স্কুল (একেই স্কুলগুলিতে শিক্ষকের প্রবল ঘাটতি) থেকে ২-৩ জন অ্যাডিশনাল ভেনু সুপারভাইজ়র হিসাবে সহ-শিক্ষকদের তুলে নিলেন। কিন্তু সংশ্লিষ্ট শিক্ষকরা তাঁদের চিঠি পেলেও, প্রধান শিক্ষকরা কোনও চিঠি বা মেমো পেলেন না। তাঁদের সম্পূর্ণ অন্ধকারে রাখা হল। অথচ তাঁরা লিভ স্যাংশন অথরিটি বা ছুটি অনুমোদনকারী ব্যক্তি। কোনও স্কুল থেকে ডেপুটেশনে অন্য স্কুলে কাজ করতে গেলে যে প্রধান শিক্ষককে জানাতে হয়, তা বোর্ডের অজানা নয়। তা সত্ত্বেও এই কাজ করা হল। সহ-শিক্ষকরা তাঁদের চিঠি দেখিয়ে প্রধান শিক্ষকদের ‘অন ডিউটি’ দিতে বাধ্য করালেন। আমরা এর তীব্র প্রতিবাদ করছি।

সুখেন্দু দাস, পার্থসারথি মুখোপাধ্যায়

শ্রীরামপুর, হুগলি

শব্দ ও অর্থ

পথিক গুহ পরিবেশিত সংবাদ ‘মানুষ তো... উদ্বাস্তু’ (২৪-২) পড়ে এই পত্র। সংবাদটিতে শ্রীগুহ ইংরেজি ‘মাইগ্রেশন’ শব্দটিকে ‘উদ্বাসন’ অর্থে লিখেছেন। ‘মাইগ্রেশন’-এর সঠিক বাংলা অর্থ ‘পরিযাণ’। পরিযাণ বলতে বোঝায়, মানুষ বা অন্য কোনও প্রাণীর স্বেচ্ছায় অসুবিধাজনক কোনও স্থান থেকে সুবিধাজনক স্থানে গমন। তাদের এই অসুবিধা খাদ্য পানীয় বাসস্থান ইত্যাদি নানাবিধ কারণে হতে পারে। ‘উদ্বাসন’ কথাটির অর্থ, বহু বছর ধরে কোনও স্থানে সুখে শান্তিতে বসবাস করা মানুষ বা অন্য কোনও প্রাণীকে বলপ্রয়োগ করে বা ভয় দেখিয়ে উচ্ছেদ সাধন। লেখক ‘উদ্বাস্তু’ শব্দটির উল্লেখ করেছেন। এর অর্থ বাস্তু থেকে উৎপাটিত প্রাণী বা মানুষ। সংবাদটিতে ‘শরণার্থী’ শব্দটিও আছে। এর অর্থ শরণ অর্থী বা প্রার্থী, অর্থাৎ কোনও উদ্বাস্তু শরণ প্রার্থনা করছে, আশ্রয় চাইছে। পথিক গুহের লেখায় নেই এ রকম আর একটি শব্দ ‘অনুপ্রবেশকারী’। অর্থ, যে ব্যক্তি বা প্রাণী অন্যায় সুবিধা লাভের জন্য অবৈধ ভাবে অন্যের জন্য নির্ধারিত স্থানে প্রবেশ করেছে।

সনাতন পাঠক

ইমেল মারফত

চিঠির ঝক্কি

সম্প্রতি ভারত সরকার ও পশ্চিমবঙ্গ সরকার সিদ্ধান্ত নিয়েছে, লোকসভা ভোটের আগে বিভিন্ন সরকারি প্রকল্পের সুবিধা পাওয়া উপভোক্তাদের কাছে পৌঁছে যাবে যথাক্রমে প্রধানমন্ত্রী ও এ রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীর সই করা শুভেচ্ছাপত্র বা চিঠি। এর জন্যে একটা বিপুল খরচ বহন করতে হবে উভয় সরকারকেই। লক্ষণীয়, আয়ুষ্মান ভারতের সাড়ে সাত কোটি উপভোক্তার কাছে পৌঁছতে শুরু করেছে খাম-সহ রঙিন চিঠি (স্পিড পোস্টের মাধ্যমে), যেখানে চিঠি প্রতি খরচ হচ্ছে ৪০ টাকা। তেমনই এ রাজ্যেও স্কুল-পড়ুয়াদের নতুন বছরের শুভেচ্ছাপত্র-সহ কন্যাশ্রী থেকে শিক্ষাশ্রী কিংবা সমব্যথী থেকে স্বাস্থ্যসাথী প্রকল্পের উপভোক্তাদের চিঠি পাঠাতে খরচ হবে বেশ কয়েক কোটি টাকা। কিন্তু এই বিপুল খরচের পরিমাণ এক ধাক্কায় কমে যেতে পারত, যদি চিঠির বদলে সকলকে ব্যক্তিগত ভাবে মেসেজ পাঠানো হত। কারণ বর্তমানে যে কোনও প্রকল্পের অন্তর্ভুক্ত হওয়ার জন্য নির্দিষ্ট ফর্ম পূরণে মোবাইল নম্বর বাধ্যতামূলক থাকে। তাই শুভেচ্ছাপত্রটিও যদি মোবাইলে মেসেজের মাধ্যমে পৌঁছে যেত, নামমাত্র খরচে ব্যাপারটা আরও দ্রুত ঘটত ও বিরোধীদের অভিযোগও (সরকারি টাকায় প্রচার) বন্ধ করা যেত। অন্য দিকে এত চিঠি বিলি করার ঝক্কি পোহাতে হত না ডাককর্মী ও স্কুল শিক্ষকদের।

প্রণয় ঘোষ

কালনা, পূর্ব বর্ধমান

চিঠিপত্র পাঠানোর ঠিকানা

সম্পাদক সমীপেষু,

৬ প্রফুল্ল সরকার স্ট্রিট, কলকাতা-৭০০০০১।

ইমেল: letters@abp.in

যোগাযোগের নম্বর থাকলে ভাল হয়। চিঠির শেষে পুরো ডাক-ঠিকানা উল্লেখ করুন, ইমেল-এ পাঠানো হলেও।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Local Bus RTO Transport Department
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE